ঢাকা, রবিবার, ৯ ফাল্গুন ১৪৩১, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৩ শাবান ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

কাজে আসছে না দেড় কোটি টাকার স্লুইসগেট

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৩৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২২, ২০২৫
কাজে আসছে না দেড় কোটি টাকার স্লুইসগেট ...

চট্টগ্রাম: আনোয়ারার বারখাইন ইউনিয়নের কোদলা খালের ওপর দেড় কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা স্লুইসগেট কৃষকদের কোনো কাজে আসছে না। খাল খনন না করার কারণে বোরো মৌসুমে শত শত একর জমি অনাবাদি পড়ে আছে।

 

দুই বছর আগে স্লুইসগেট ও বেড়িবাঁধ নির্মাণ শেষ হলেও খাল খনন না হওয়ায় স্লুইসগেটটি অকেজো হয়ে পড়ে আছে। এলাকার কৃষকরা এ অবস্থার জন্য উপজেলা প্রশাসন, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি) ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের উদাসীনতাকে দায়ী করছেন।

 

জানা গেছে, ২০২০-২১ অর্থবছরে কোদলা খালের পূর্ব বারখাইন ইউনিয়নের শঙ্খ নদী অংশে প্রায় দেড় কোটি টাকা ব্যয়ে স্লুইসগেট নির্মাণ করা হয়। কিন্তু নদীর তীরের কয়েকশ মিটার খাল খনন না করায় স্লুইসগেট দিয়ে পানি চলাচল হচ্ছে না। ফলে শত শত একর জমিতে আগাছা জমে চাষাবাদের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। খাল খনন না হওয়ায় বর্ষা মৌসুমে পুরো এলাকায় জলাবদ্ধতা হয়। এতে কৃষিজমি ডোবায় পরিণত হয়, আমন চাষ ব্যাহত হয়।

স্থানীয় বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা রাজা মিয়া বলেন, ‘গত ১৫ বছর ভাঙন প্রতিরোধ কার্যক্রম ও বেড়িবাঁধ না থাকায় শত শত একর কৃষিজমি নদীতে বিলীন হয়ে যায়। বেড়িবাঁধ না থাকায় কৃষিজমিতে জোয়ার-ভাটার পানি ওঠানামা করতো। এতে কৃষিজমি চরে পরিণত হয়েছে। চাষাবাদের অনুপযোগী হওয়ায় জমি আগাছা জন্মে জঙ্গলে পরিণত হয়েছে’।  

আবুল কালাম নামের একজন কৃষক অভিযোগ করেন, ‘প্রায় দেড় কোটি টাকায় এই স্লুইসগেট নির্মাণ করা হয়েছে। এটি কোদলা খালের গভীরতা থেকে উঁচুতে নির্মাণ করার ফলে পানি চলাচল করছে না। নির্মাণের এক বছর না যেতেই স্লুইসগেটের পুরো অংশের মাটি খালে চলে গেছে। তৈলারদ্বীপ থেকে পূর্ব বারখাইন অংশে শঙ্খ নদীর তীরের বেড়িবাঁধ নির্মাণে অনিয়ম হয়েছে। বাঁধের বিভিন্ন অংশে ঠিকাদার মাটি না কেটে ফেলে রেখেছে’।  

বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) উপসহকারী প্রকৌশলী আজমানুর রহমান বলেন, ‘কোদলা খালটির ৮ কিলোমিটারের মধ্যে ২ কিলোমিটার গত অর্থবছরে খনন করা হয়। চলতি বছর বাকি ৬ কিলোমিটার খননের জন্য প্রকল্প প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন হলে খাল খনন করা হবে। এতে স্লুইসগেটটিও কার্যকর হবে’।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মিজানুল হক বলেন, ‘২০২২ সালে কোদলা খালে স্লুইসগেট নির্মাণ করা হয়। পরে খালটি খননের জন্য উদ্যোগ নেওয়া হলে দুই পাশের জমির মালিকরা নানা দাবি নিয়ে বাধা সৃষ্টি করেন। তাই কাজ করা হয়নি। এ বিষয়ে আমরা স্থানীয়দের সহযোগিতা কামনা করছি’।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী বর্ণ হক বলেন, ‘ত্রুটির অভিযোগ সত্য নয়। পাউবো এই প্রকল্প গ্রহণের আগে শঙ্খ নদীর গভীরতা, স্থানীয় জমি, খাল সবকিছু বিবেচনা করেছে। বিশেষজ্ঞ কমিটির মতামত ও সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে প্রকল্প অনুমোদন হয়’।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৩০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২২, ২০২৫
বিই/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।