ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

মধ্যস্বত্বভোগীদের অতি মুনাফার কারণে ডিম-মুরগির মূল্যবৃদ্ধি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫২৯ ঘণ্টা, আগস্ট ১৭, ২০২৩
মধ্যস্বত্বভোগীদের অতি মুনাফার কারণে ডিম-মুরগির মূল্যবৃদ্ধি

ঢাকা: মধ্যস্বত্বভোগীদের অন্যায্য মুনাফার কারণে ভোক্তাদের বেশি দামে ডিম ও মুরগি কিনতে হচ্ছে। কিন্তু ডিম-মুরগি খামারি ও উদ্যোক্তারা দাম পাচ্ছেন না।

বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) ও বাংলাদেশ পোল্ট্রি ইন্ডাট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিল (বিপিআইসিসি) আয়োজিত কর্মশালায় এ অভিযোগ তোলেন পোল্ট্রি খাতের খাদ্য নেতৃবৃন্দ।  

অনুষ্ঠানে বিপিআইসিসির সভাপতি শামসুল আরেফিন খালেদ বলেন, ২০২২ ও ২০২৩ সালের বেশিরভাগ সময় ডিম ও মুরগি উৎপাদনকারী খামারিদের লোকসান হয়েছে। উৎপাদন খরচের চেয়েও কম মূল্যে উৎপাদিত পণ্য বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছেন তারা। ঋণের বোঝা কাঁধে নিয়েও খামারিরা চেষ্টা করেছেন উৎপাদন সচল রাখতে। দেশের মানুষের জন্য পুষ্টি সরবরাহ অব্যাহত রাখতে। এজন্য তাদের প্রশংসা পাওয়ার কথা ছিল। অথচ খামারি ও উদ্যোক্তাদের ভাগ্যে জুটেছে অপবাদ।

বিপিআইসিসির নেতাদের অভিযোগ, উৎপাদন খরচের বিপরীতে ন্যায্য দাম না পাওয়া, অপপ্রচার এবং বাজার তদারকি সংস্থার চাপের কারণে পোল্ট্রি খাতের প্রান্তিক খামারি বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এরই মধ্যে অনেক খামার বন্ধ হয়ে গেছে, কমেছে উৎপাদন। এ অবস্থা চলতে থাকলে ডিম-মাংসের উৎপাদন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হবে, দেখা দেবে পুষ্টি ঘাটতি।  

ব্রিডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (বিএবি) সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবুর রহমান বলেন, একদিন বয়সী ব্রয়লার মুরগির বাচ্চার সাপ্তাহিক চাহিদা ছিল প্রায় ১ কোটি ৭০-৮০ লাখ, বর্তমানে তা ১ কোটি ৩০ লাখে নেমে এসেছে।

তিনি বলেন, লেয়ার মুরগির চাহিদা ১১ লাখ থেকে কমে হয়েছে সাড়ে ৯ লাখ। ডিম-মুরগির বাজারে সিন্ডিকেট! এমন অপপ্রচার ছড়ানোর কারণে বিভ্রান্তি দিন দিন আরও ঘনীভূত হয়েছে। তাছাড়া ‘প্রান্তিক খামারি’ বনাম ‘করপোরেট খামারি’র বিতর্ক সৃষ্টির মাধ্যমেও দেশীয় খামারি ও উদ্যোক্তাদের অপরাধীর কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর অপচেষ্টা হচ্ছে। ডিম-মুরগি আমদানি করা হলে তা দেশেরই ক্ষতি করবে।

নজরুল ইসলাম বলেন, টেকনিক্যাল যুক্তি দেখিয়ে সয়াবিন মিল নামক এসআরও সুবিধাপ্রাপ্ত একটি অত্যাবশ্যকীয় কাঁচামাল আমদানিতে কয়েক কোটি ঘনীভূত শুল্ক আদায় করা হয়েছে কেবলমাত্র একটি আমদানিকারকের কাছ থেকে। সাগরে কয়েকটি জাহাজ ভাসছে। প্রতিদিন প্রতিটি জাহাজকে কয়েক হাজার ডলার করে জরিমানা গুনতে হচ্ছে। এসব কিছুর কারণেও উৎপাদন খরচে কোনোভাবেই লাগাম টানা যাচ্ছে না।

বাংলাদেশ পোল্ট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধি বলেন, ডিমের দৈনিক উৎপাদন ৫ কোটি থেকে বর্তমানে ৪ কোটির নিচে নেমে এসেছে। প্রান্তিক ও ছোট খামারিরা মোট চাহিদার ৮৫ শতাংশ ডিম উৎপাদন করছে।

কর্মশালায় ফিড উৎপাদনকারীদের সংগঠন ফিড ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ (এফআইএবি), মুরগির বাচ্চা উৎপাদনকারীদের সংগঠন- ব্রিডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (বিএবি), প্রান্তিক খামারি ও উদ্যোক্তাদের সংগঠন- বাংলাদেশ পোল্ট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশন (বিপিআইএ), ওষুধ ও ভ্যাকসিন সরবরাহকারীদের সংগঠন- এনিমেল হেলথ কোম্পানিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (আহকাব), ভুট্টা, সয়াবিনসহ ইনপুট সাপ্লায়ারদের সংগঠন- বাংলাদেশ অ্যাগ্রো ফিড ইনগ্রিডিয়েন্টস ইম্পোর্টার্স অ্যান্ড ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাফিটা) এবং বিজ্ঞানী, স্পেশালিস্ট, রিসার্চার ও একাডেমিশিয়ানদের সংগঠন- ওয়ার্ল্ডস পোল্ট্রি সায়েন্স অ্যাসোসিয়েশন- বাংলাদেশ শাখা (ওয়াপসা-বিবি) নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ  সময়: ১৫১০ ঘণ্টা, আগস্ট ১৭, ২০২৩
জেডএ/এসএএইচ 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।