ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

মিরপুরে ফুটপাতে ঈদের কেনাকাটা জমজমাট

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৫৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ৫, ২০২৪
মিরপুরে ফুটপাতে ঈদের কেনাকাটা জমজমাট

ঢাকা: ঈদের আগে শেষ শুক্রবার আজ। অধিকাংশ অফিস ছুটি।

যেসব অফিস সাপ্তাহিক ছুটি নেই তারাও বিকেল তিনটা থেকে ছুটি পাওয়া শুরু করেছে। এই ছুটির অবসরে ঈদের কেনাকাটার কাজটি সেরে নিচ্ছে। আর এতে রাজধানীর মিরপুরের ফুটপাতে উপচেপড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে।

শুক্রবার (৫ এপ্রিল) রাজধানীর অন্যতম জনবহুল এলাকা মিরপুরের-১০ নম্বর গোলচত্বর ও আশপাশের ফুটপাত বাজার, মিরপুর-১ নম্বর গোলচত্বর ও মিরপুর-২ এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

মিরপুরের ফুটপাতে দোকানগুলোতে পরিধেয় পণ্যের সাজিয়ে বসেছেন ব্যবসায়ীরা। মূলত কম আয়ের মানুষের ঈদ কেনাকাটাকে সামনে করে এসব দোকানকে সাজিয়েছে। মানুষ কিনবে এমন সব পণ্যই এসব দোকানে মিলছে। লোকে লোকারণ্য ফুটপাত।  

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেল, যারা ফুটপাতে বাজার করতে এসেছেন সকলেই কিছু না কিছু কিনছেন। কেউ একাধিক পণ্য কিনছে। একাধিক দোকান ঘুরে যাচাই-বাছাই করে দরদাম করে কিনছেন।  এসব ক্রেতাদের দুই-তৃতীয়াংশ তুলনামূলক কম আয়ের শ্রমজীবী নারী-পুরুষ। ক্রেতাদের মধ্যে রয়েছেন ছাত্র-ছাত্রী, গৃহবধূ, বাড়ির কর্তা ব্যক্তিও।

আর দোকানগুলোতে তুলনা বেশি দামের পণ্যের দোকানও রয়েছে। এ ধরনের বড় বাজারটি রয়েছে মিরপুর-১ এর সিনেমা হল মার্কেটের আশপাশের মার্কেটগুলোতে। এখানকার আড়ংয়ের দোকানে সবচেয়ে বেশি ভিড় দেখা গেছে। এসব দোকানে কেনাকাটা করে বাসায় ফেরার সময় অনেকে ফুটপাত থেকেও কিনছেন।

কথা হয় মিরপুর-১০ এর পানির ট্যাঙ্কি ফুটপাতে বাজার করতে আসা আসমা খাতুনের সঙ্গে। তিনি একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। বাবা-মাসহ অন্যান্য পরিবারের সবার জন্য কাপড়, চুড়ি ও প্রসাধনী সামগ্রী কিনেছেন। পাশের ফুটপাতের থান কাপড়ের দোকান থেকে কাপড় কেনার জন্য ঘুরে ঘুরে পছন্দ করছেন।

আসমা বলেন, এখানে যেমন হরেক রকমের কাপড় পাওয়া যায়, আবার দামও একটু সাশ্রয়ী। আজকে ছুটির দিনে বাজার করতে আসব বলে ঠিক করে রেখেছিলাম, আজ এলাম। ভালোই লাগছে।

আমিরুল ইসলাম স্ত্রী ও সাত-আট বছরের এক ছেলেকে নিয়ে কেনাকাটা করছেন। বললেন, ঈদে আমার ১০-১২ জনের জন্য কিনতে হয়। এই বাজারেই সুবিধা হয়। আজ তিনটায় ছুটি হয়েছে, আজকেই ঈদ মার্কেটিং শেষ করব। ছুটি হলেই বাড়ি রওনা দেব।

এদিকে ঈদের বিক্রিতে দোকানদারদের অধিকাংশ খুশি। মিরপুর-১০ এর  বিক্রেতা আমজাদ হোসেন বলেন, বিক্রি ভালো হচ্ছে ইনশাআল্লাহ। এবার ঈদের আগে চাকরিজীবীরা বেতন, বোনাস দুইটাই পেয়েছেন। মানুষের হাতে টাকা আছে, কেনাকাটায়  এর প্রভাব পড়ছে। তবে এখনো বিক্রি হওয়ার সময় আছে, বাকি কদিনে দেখা যাক কি হয়।

ফুটপাতে হাতে বেতন ও ভাতা পাওয়া শ্রমজীবী মানুষের মধ্যে মূল্যস্ফীতির আঘাতে পৃষ্ট  হওয়ার চিহ্নও রয়েছে। যা কয়েকজন ক্রেতা ও বিক্রেতার কথাতে পাওয়া গেল। অনেক ক্রেতারই তাদের আয় দিয়ে কেনাকাটার হিসাব মেলাতে পারছেন না, যা প্রয়োজন অবশিষ্ট টাকা দিয়ে কিনতে পারছেন না। ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ের মাঝেই হতাশা রয়েছে।

মিরপুরের একটি মার্কেট ঘুরে অবশেষ ফুটপাতই শেষ ভরসা বলে জানালেন এক ব্যক্তি।  

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এই ব্যক্তি বললেন, যা বাজেট তা দিয়ে মার্কেটের দোকান থেকে পোশাক কেনা সম্ভব হয়নি। ফুটপাত থেকে কিনব বলে ঘুরে ঘুরে দেখছি এখন। কিন্তু এখানে মেলাতে পারছি না। যেভাবে কেনাকাটার প্রয়োজন বেড়েছে, সেভাবে আয় বাড়েনি। তাই হিসাবে মিলছে না।

ফুটপাতের বিক্রেতা মনিরুল ইসলাম বলেন, বিক্রি মোটামুটি হচ্ছে কিন্তু যেভাবে আশা করেছিলাম সেভাবে হচ্ছে না। মানুষের সব আয়ে চলে গেছে চাল, ডাল, গরুর মাংস আর বাড়ি ভাড়া দিতে। তাই অনেকে কাপড় দেখে পছন্দ হওয়ার পরও হাতে টাকা না থাকার কারণে কিনছেন না। আগের বছরগুলোতে এ রকম মানুষের সংখ্যা এত ছিল না।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৩৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ৫, ২০২৪
জেডএ/এসএএইচ  
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।