ঢাকা, সোমবার, ২ চৈত্র ১৪৩১, ১৭ মার্চ ২০২৫, ১৬ রমজান ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

‘আগামী বছর থেকে অনলাইনে রিটার্ন জমা বাধ্যতামূলক হবে’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১০৩ ঘণ্টা, মার্চ ১৬, ২০২৫
‘আগামী বছর থেকে অনলাইনে রিটার্ন জমা বাধ্যতামূলক হবে’ রোববার আগারগাঁওয়ে ‘রিটার্ন সিস্টেমের সমস্যা চিহ্নিতকরণ এবং সমাধানের উপায়’ শিরোনামে কর্মশালা করে এনবিআর

ঢাকা: আগামী বছর অনলাইনে রিটার্ন দেওয়া বাধ্যতামূলক করা হবে বলে জানিয়েছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান। তিনি বলেন, ‘অনলাইনে রিটার্ন জমা সফল হয়েছে।

অনলাইনে রিটার্ন না দেওয়ার কোনো উপায় নেই। পুরোপুরি অনলাইনে রিটার্ন দিতে হবে। অনলাইনে রিটার্ন জমায় সময় ও অর্থ বাঁচে। আর টেনশন একদমই থাকে না। কারণ ক্যালকুলেশন তো, কোনটা ট্যাক্সেবল, কোনটার কত করহার কিছুই জানা দরকার নেই। আপনি তথ্যগুলো দেবেন, সিস্টেম ক্যালকুলেশন করে দেবে। ’

এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, আগামী বছরের পহেলা জুলাই থেকে অনলাইনে রিটার্ন সহজলভ্য হবে। এ বছর যারা রিটার্ন দিয়েছেন, তা স্বয়ংক্রিয়ভাবে সংরক্ষিত থাকবে। এটা অনেক লম্বা সময় ধরে আমাদের আর্কাইভে থাকবে। আমরা ক্লাউড সার্ভারও নেব। আমরা অ্যাপস তৈরি করব। আগামী বছর থেকে করপোরেট রিটার্ন অনলাইনে দিতে হবে। অনলাইন রিটার্ন গত বছরের তুলনায় ৫ গুণ বেড়েছে।

রোববার (১৬ মার্চ) আগারগাঁওয়ে এনবিআর ভবনে আয়কর বিভাগের কর তথ্য ব্যবস্থাপনা ও মূল্যায়ন শাখা আয়োজিত ‘রিটার্ন সিস্টেমের সমস্যা চিহ্নিতকরণ এবং সমাধানের উপায়’ শিরোনামে কর্মশালায় তিনি এসব কথা বলেন।

অনলাইনে রিটার্ন দাখিলের সুবিধা উল্লেখ করে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, আপনি কেবল তথ্য দেবেন। ক্যালকুলেশনের সিস্টেম আছে। যদি কোনো ভুলত্রুটি হয় তার দায়িত্ব ডিপার্টমেন্টের। আপনার কোনো দায় নেই। কিন্তু আপনি যখন ম্যানুয়ালি করেন, এতে যখন ভুলত্রুটি হয় তখন পুরো দায় আপনার ওপর চলে আসে। অনেকেই অডিটের নামে ডাকাডাকি করে। অডিটের সিলেকশন আপনাদের বিবেচনায় সঠিক হয় না। একজন করদাতা প্রতিবছর ডাক পান, আরেকজন করদাতাকে কখনোই ডাকা হয় না। এরকম হওয়ার কথা না। যদি করদাতা অনলাইনে রিটার্ন দেন তাহলে প্রয়োজনীয় তথ্য আমাদের কাছে থাকবে। আমাদের পক্ষে আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্স ব্যবহার করে অটোমেটেড পদ্ধতিতে ফাইল সিলেকশন করা যাবে। তখন আপনাকে পছন্দ করে না বলে বারবার ডাকবে, এ ধরনের ঘটনা ঘটবে না।

আলোচনায় অংশ নিয়ে নেসলে বাংলাদেশের কর বিভাগের প্রধান মীর রেজাউল করিম জানান, তারা তাদের প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের শতভাগ ই-রিটার্ন দাখিল করেছেন। বায়োমেট্রিক সিম ছাড়াও এনআইডি ও পাসপোর্ট দিয়ে ই-রিটার্ন নিবন্ধনের সুযোগ দেওয়ার কথা বলেন। করদাতার জন্য কর অঞ্চল পরিবর্তন আরও সহজ করার দাবি জানান তিনি।

লায়ন্স আই ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক শাহিনুর রহমান বলেন, ভীতি থেকে অনেকে রিটার্ন দাখিল করেন না। কর অফিস থেকে আরও করদাতাবান্ধব সেবা প্রত্যাশা করেন নাগরিকরা। ই-রিটার্ন দাখিল করে আমি তো অবাক, সঙ্গে সঙ্গে সার্টিফিকেটও পেয়ে গেলাম। অথচ আগে মাসের পর মাস ঘুরতে হতো।

তিনি আরও বলেন, কেরানি পর্যায়ের কর্মচারীদের চোখ রাঙানি থেকে বাঁচিয়েছে এ ই-রিটার্ন।

ব্রিটিশ-আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশের সহকারী কর ব্যবস্থাপক অনিক দাস বলেন, দেশে অনেক সিস্টেম, কিন্তু ইন্টিগ্রেশন নেই। ই-রিটার্ন সিস্টেমে ব্যাচ ডেটা আপলোড যুক্ত করা, অটোফিল রাখা, এপিআই ওপেন করা এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের তৈরি করা সফটওয়্যার ব্যবহার করেও রিটার্ন দাখিলের ব্যবস্থা করার পরামর্শ দেন তিনি। এ ছাড়া তিনি ফিডব্যাক নেওয়ার ফরম যুক্ত করার কথাও বলেন।

বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন সদস্য (কর প্রশাসন ও মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা) জি এম আবুল কালাম কায়কোবাদ। সভাপতিত্ব করেন সদস্য (কর তথ্য ব্যবস্থাপনা ও মূল্যায়ন) আবু হান্নান দেলওয়ার হোসেন। ই-রিটার্ন বিষয়ক তথ্য-উপাত্ত তুলে ধরেন দ্বিতীয় সচিব রইসুন নেসা।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন, রবি আজিয়াটা লিমিটেডের হিউম্যান রিসোর্স ডিভিশনের জেনারেল ম্যানেজার দেওয়ান সাজ্জাদুল হাসান, ডাচ-বাংলা ব্যাংক লিমিটেডের কর বিভাগের প্রধান মো. শহীদুল্লাহ, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের ভারপ্রাপ্ত সিএফও মো. মনোয়ার হোসেন, সোনালী ব্যাংকের সুমন আনোয়ার মাহমুদ, ইউনিলিভার বাংলাদেশের কর বিভাগের প্রধান সাঈদ আহমেদ খান ও বাংলাদেশ ট্যাক্স লইয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি রমিজ উদ্দিন আহমেদ প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ২০৫২ ঘণ্টা, মার্চ ১৬, ২০২৫
জেডএ/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।