ঢাকা, রবিবার, ১৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

প্রভাবশালীদের নিয়ন্ত্রণে কাদিগড় বিদ্যালয়, শিক্ষাকর্তাদের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৫১ ঘণ্টা, অক্টোবর ১২, ২০২৩
প্রভাবশালীদের নিয়ন্ত্রণে কাদিগড় বিদ্যালয়, শিক্ষাকর্তাদের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ

ময়মনসিংহ: একটি প্রভাবশালী মহলের ষড়যন্ত্রের শিকার ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার ৭১ নং কাদিগড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এতে নষ্ট হচ্ছে শিক্ষার স্বাভাবিক পরিবেশ।

এমন অভিযোগ বিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবক মহলের।    

অভিযোগ উঠেছে, প্রভাবশালী মহলটিকে খুশি করতেই সংশ্লিষ্ট শিক্ষা কর্মকর্তারা একের পর এক সিদ্ধান্ত বদল করে পরিস্থিতি উত্তপ্ত করে তুলেছেন। এতে শিক্ষকদের মধ্যে দলাদলি সৃষ্টি হওয়ায় অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে বিদ্যালয়টির ভেতরে-বাইরে।  

সূত্র জানায়, কয়েকদিন আগে বিদ্যালয়ের সরকারি জায়গা থেকে বাঁশ কেটে মাটি ভরাট করে পেঁপে বাগান তৈরি করেন স্থানীয় প্রভাবশালী সাইফুল ইসলাম। পরে ঘটনাটি উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে জানান বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নূপুর আক্তার।  

এতে ক্ষিপ্ত হয়ে প্রভাবশালী মহলের মদদে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে নূপুর আক্তারের বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে একটি অভিযোগ দায়ের করে আবুল কালাম আজাদ নামের এক ব্যক্তি।  প্রধান শিক্ষকের পদ থেকে নূপুর আক্তারকে সরিয়ে দেওয়া হয়। কমিটির এ সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ হন অভিভাবকসহ স্থানীয়রা।

নূপুরকে প্রধান শিক্ষকের পদে বহাল রাখার দাবি জানিয়ে এলাকায় প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে ঝাড়ু মিছিল পর্যন্ত হয়েছে।

পরে ঘটনাটি সরেজমিনে তদন্ত করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।    

কিন্তু তদন্তে অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণের ভয়ে অভিযোগকারী আবুল কালাম আজাদ ওই তদন্তের প্রতি অনাপত্তি দাখিল করে অনাস্থা জ্ঞাপন করেন। আর এ কারণে তদন্ত প্রতিবেদনটি আর আলোর মুখ দেখিনি বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।  

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও অভিভাবকরা জানান, এসব ঘটনার পর পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার নাম করে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের পদ থেকে নূপুর আক্তারকে অন্যায়ভাবে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে এবং সিনিয়র শিক্ষক মাহমুদা পারভীনকে তার স্থলাভিষিক্ত করা হয়েছে।  

তাদের অভিযোগ, আজ অবধি টিও সাহেব প্রতিবেদন প্রকাশ করছেন না। তদন্ত প্রতিবেদন আড়াল করা হয়েছে।  

এ কাজে শিক্ষা কর্মকর্তাদের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ বলেও দাবি তাদের।

ভুক্তভোগী শিক্ষক নূপুর আক্তার বাংলানিউজকে বলেন, মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করে আমিসহ বিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষকদের হয়রানি করা হয়েছে। এতে বিদ্যালয়ের স্বাভাবিক পরিবেশও নষ্ট হয়েছে। এ কারণেই আমি চাই আমার বিরুদ্ধে অভিযোগের তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হোক। অন্যথায় যারা এ ঘটনায় দায়ী, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।

জানতে চাইলে উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. সৈয়দ আহম্মদ বাংলানিউজকে বলেন, সামাজিক বিরোধকে কেন্দ্র করে বিদ্যালয়ে ঝামেলার সূত্রপাত। বর্তমানে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষককে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।    

তাহলে আগে কেন সিনিয়রকে দায়িত্ব দেওয়া হয়নি? জানতে চাইলে তিনি বলেন, আগে তো নূপুর আক্তার ছিলেন কিন্তু পরিস্থিতির কারণে তাকে সরাতে হয়েছে।

এবিষয়ে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শহীদুল ইসলাম বলেন, প্রধান শিক্ষক পদের জন্য সিনিয়র বা জুনিয়র কোনো বিষয় না। দায়িত্ব পালনে যোগ্যতাই মূল কথা। তবে কেন নূপুর আক্তারকে সরিয়ে অন্যজনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, তা উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ভালো বলতে পারবেন।  

জানতে চাইলে উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. সৈয়দ আহম্মদ বাংলানিউজকে বলেন, সামাজিক বিরোধকে কেন্দ্র করে বিদ্যালয়ে ঝামেলার সূত্রপাত। বর্তমানে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষককে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।    

তাহলে আগে কেন সিনিয়রকে দায়িত্ব দেওয়া হয়নি? জানতে চাইলে তিনি বলেন, আগে তো নূপুর আক্তার ছিলেন কিন্তু পরিস্থিতির কারণে তাকে সরাতে হয়েছে।

এসব অভিযোগ বিষয়ে জানতে চাইলে মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, আমার সঙ্গে বিদ্যালয় নিয়ে কোনো বিরোধ নেই। বিদ্যালয়ের ঝামেলা জমিদাতাদের সঙ্গে, তারা অভিযোগ করেছে। এতে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই, অযথা আমাকে দায়ী করা হচ্ছে।  

তবে ঘটনার বিষয়ে জানতে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও অভিযোগকারী মো. আবুল কালাম আজাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।  

বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ১২, ২০২৩
এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।