গাজায় গণহত্যা বন্ধের দাবিতে আগামীকাল (সোমবার) গ্লোবাল স্ট্রাইক তথা বিশ্বব্যাপী ধর্মঘট পালনের আহ্বান জানিয়েছেন নিপীড়িত গাজাবাসী। গণহত্যার প্রতিবাদে বিশ্বের সব দেশে একযোগে সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সরকারি-বেসরকারি অফিস-আদালত বন্ধ রাখার আহ্বান জানিয়েছেন তারা।
গাজাবাসীর এই আহ্বানে সাড়া দিয়েছে ‘টেন মিনিট স্কুল’। আগামীকাল ৭ এপ্রিল (সোমবার) সব ধরনের ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে ইন্টারনেটভিত্তিক শিক্ষাবিষয়ক প্রতিষ্ঠানটি।
রোববার (৬ এপ্রিল) অনলাইন পাঠদানে দেশের অন্যতম প্রতিষ্ঠানটি তাদের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে ঘোষণা দিয়েছে, ‘গ্লোবাল স্ট্রাইকের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশে ৭ এপ্রিল এসএসসি ফাইনাল রিভিশন লাইভসহ টেন মিনিট স্কুলের সকল ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধ থাকবে। ’
পোস্টে কমেন্টে তারা ক্লাস-পরীক্ষার নতুন সময়সূচি জানিয়ে দেয়। সেখানে লেখা হয়, ‘সিরিজের বাংলা ১ম পত্র ক্লাসটি ৭ এপ্রিলের পরিবর্তে ৮ এপ্রিল বিকাল ৪টায় নেওয়া হবে। ’
এর আগে গাজাবাসীর আহ্বানে সাড়া দিয়ে ‘মার্চ ফর গাজা’র ডাক দিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম।
রোববার এক ফেসবুক পোস্টে তিনি লেখেন, দলমত নির্বিশেষে সারাদেশের ছাত্র-জনতা একসঙ্গে রাজপথে নেমে ইসরায়েলি খুনিদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানো উচিত। আমরা হয়তো এই মুহূর্তে আমাদের গাজার ভাই-বোনদের পাশে দাঁড়িয়ে লড়াই করতে পারবো না। কিন্তু তাদের লড়াইয়ের সঙ্গে একত্বতা ঘোষণা করতে নিজ ভূমির রাজপথে অন্তত নামতে পারবে।
তিনি বলেন, এনসিপি, বিএনপি জামায়াত বা কোনো (রাজনৈতিক) দলের ব্যানারে নয় বরং দল-মত নির্বিশেষে ‘বাংলাদেশ’ ব্যানারে আগামীকাল আমরা রাজপথে নেমে গাজার গণহত্যার বিরুদ্ধে দাঁড়াতে পারি। খুনি, রক্তপিপাসু নেতানিয়াহুর বিপক্ষে স্লোগান দিতে পারি। প্রত্যেক জেলায় ছাত্রজনতার প্রতিনিধি হিসেবে কয়েকজন মিলে দায়িত্ব নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে এই কর্মসূচি পালিত হোক। ৭ এপ্রিল কোনো দল, মত, পক্ষের হয়ে নয় বরং বাংলাদেশের পক্ষ হতে গাজার মজলুম মানুষের পক্ষে হোক।
একই আহ্বান জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশিবির শাখার সাবেক সভাপতি আবু সাদিক কায়েম। নিজের ফেসবুকে পেজে একটি ছবি পোস্ট করেছেন তিনি। তাতে লেখা রয়েছে, হে গাজাবাসী! ‘তোমাদের শাহদাত ও লড়াইয়ে আমাদের সংহতি। বি-ইজনিল্লাহ, অচিরেই আমরা তোমাদের লড়াইয়ে শামিল হবো। ’
ছবির ক্যাপশনে ৭ এপ্রিল ‘নো ওয়ার্ক, নো স্কুল’— কর্মসূচি সফল করার আহ্বান জানিয়েছেন।
অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আনু মোহাম্মদও গাজাবাসীর লড়াইয়ে সংহতি প্রকাশ করেছেন। এক ফেসবুক পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘হ্যাঁ, সংহতি জানাই। আগামীকাল ৭ এপ্রিল ইসরায়েলি দখলদারিত্ব এবং গণহত্যার বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী ধর্মঘটে যোগ দিন। ’ তার পোস্টকৃত ছবিতে লেখা রয়েছে, ‘নো ওয়ার্ক নো স্কুল আনটিল জেনোসাইড স্টপস’।
এছাড়া মজলুম ফিলিস্তিনিদের পক্ষে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রনেতারা। আগামীকাল (সোমবার) ফিলিস্তিনি যুবকের ডাকা ‘নো ওয়ার্ক, নো স্কুল’ কর্মসূচি সফলের আহ্বান জানান তারা।
রোববার (৬ এপ্রিল) দুপুরে গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধকরণ আন্দোলনের দুই সংগঠক মুসাদ্দিক আলী ইবনে মোহাম্মদ এবং এ বি জোবায়ের এই কর্মসূচি সফল করতে প্রতিটি বিভাগের প্রতি আহ্বান জানান। কর্মসূচি অনুযায়ী আগামীকাল সোমবার বিকেল ৪টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে ‘মার্চ ফর প্যালেস্টাইন’ এর আহ্বানে সংহতি এবং বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯০৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৬, ২০২৫
এসএএইচ