ঢাকা, রবিবার, ১৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

জাবিতে ছাত্রদলকর্মীকে বাসা থেকে তুলে নিয়ে বেধড়ক পেটাল ছাত্রলীগ

জাবি করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫২০ ঘণ্টা, নভেম্বর ২, ২০২৩
জাবিতে ছাত্রদলকর্মীকে বাসা থেকে তুলে নিয়ে বেধড়ক পেটাল ছাত্রলীগ

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) শাখা ছাত্রদলের এক কর্মীকে তার বাসা থেকে তুলে নিয়ে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ উঠেছে শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে।

বুধবার (১ নভেম্বর) বিকেলে ওই ছাত্রদলকর্মীকে জোরপূর্বক তুলে ক্যাম্পাসের ভেতরে নিয়ে মারধর করা হয়।

 

মারধরের শিকার ছাত্রদল কর্মীর নাম মিজানুর রহমান। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের ৪৪ ব্যাচের শিক্ষার্থী। বর্তমানে তিনি ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

ছাত্রলীগের মারধরে আহত ছাত্রদলকর্মী মিজানুর রহমান

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের নেতারা জানান, বুধবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন আমবাগান এলাকা থেকে ছাত্রদল কর্মী মিজানকে ক্যাম্পাসের ভেতরে তুলে নিয়ে আসে শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন কর্মী। এসময়, মাহিদ হাসান, মাশুকুর রহমান ফাহিম (প্রত্নতত্ত্ব ৪৭ ব্যাচ),সরোয়ার শাকিল  (ইতিহাস ৪৭),তৌহিদুল ইসলাম শুভ (অর্থনীতি ৪৭ ব্যাচ), জিসান আহমেদ রনি (অর্থনীতি ৪৭ ব্যাচ), আশেক মাহমুদ সোহান (সিএলসি ৪৭ ব্যাচ), মামুন (জিওলজিকাল সায়েন্স ৪৭ ব্যাচ), রাজু শেখ (প্রত্নতত্ত্ব ৪৬ ব্যাচ), শান্ত মাহবুব (নৃবিজ্ঞান ৪৬ ব্যাচ ), রাশেদ (আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ৪৬ ব্যাচ), হাসিব (ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং ৪৬ব্যাচ), অরবিন্দ (বাংলা ৪৬ব্যাচ), আরাফাত বিজয় (সরকার ও রাজনীতি ৪৪ ব্যাচ)সহ প্রায় ৩০ জনের মতো ছাত্রলীগের নেতাকর্মী তাকে বেধড়ক পেটায়।

অভিযুক্তদের সবাই শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান লিটনের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।  

মারধরের শিকার মিজানুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, বুধবার বিকালে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের ২০-৩০ জন নেতাকর্মী আমার বাসায় আসে। তারা এসে বিশ্ববিদ্যালয় গেটে তালা লাগিয়েছি বলে আমাকে মারতে মারতে বাইরে নিয়ে যায়। কিন্তু আমি তালা লাগাইনি বলে জানাই তাদের। এরপরও তারা আমাকে লাঠিসোঁটা দিয়ে মারধর করে। সেখানে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটে তালা লাগাতে বলে জোর করে আমার ছবি তোলে। এরপর তারা আমাকে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে ট্রান্সপোর্ট এলাকায় নিয়ে যায়। সেখানে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান লিটনের উপস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা রক্ষীদের সামনে আমাকে মারধর করা হয়। বারবার সাহায্য চাওয়ার পরও কেউ এগিয়ে আসেনি।

এ বিষয়ে শাখা ছাত্রদল নেতা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সালাম বরকত হলের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. আফফান আলী বলেন, বাংলাদেশের সাধারণ মানুষকে মুক্ত করতে, দেশের গণতন্ত্রকে পুনরুদ্ধার করতে এই অবৈধ অগণতান্ত্রিক স্বৈরাচার সরকারের পতন নিশ্চিতে বিএনপি যে আন্দোলন শুরু করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল তার ভ্যানগার্ড হিসেবে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে। এভাবে ছাত্রদলের ওপর সন্ত্রাসী সংগঠন ছাত্রলীগের হামলা করে আমাদের যেমন গণতান্ত্রিক আন্দোলন থেকে থামানো যাবে না তেমনি মিজানসহ আমাদের সহযোদ্ধাদের ওপর হামলায় জড়িত প্রত্যেক সন্ত্রাসীদের যেখানেই পাওয়া যাবে সেখানেই দাঁতভাঙা জবাব দেওয়া হবে।

তবে মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আক্তারুজ্জামান সোহেল বলেন, সকালে ছাত্রদলের একটা গ্রুপ বিশ্ববিদ্যালয়কে অস্থিতিশীল করতে ক্যাম্পাসের সকল গেটে তালা লাগিয়ে দেয়। পরে সন্ধ্যায় ছাত্রদলের মিজানকে ক্যাম্পাসে নাশকতা করতে দেখলে প্রতিহত করে। তাকে কোনো মারধর করা হয়নি।  

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আ স ম ফিরোজ উল হাসান বলেন, আমি ঘটনা জেনে দ্রুত নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের ঘটনাস্থলে পাঠিয়েছি। তারা ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করে নিরাপদে ক্যাম্পাস ছাড়তে সাহায্য করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক পরিবেশ স্থিতিশীল রাখতে জন্য আমি সব পক্ষকে শান্ত থাকার আহ্বান করছি।

বাংলাদেশ সময়: ১৫১২ ঘণ্টা,  নভেম্বর ০২, ২০২৩
এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।