ঢাকা, রবিবার, ১৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

শরীয়তপুরের স্কুলে ক্লাস নিচ্ছেন দপ্তরি

মো. রোমান আকন্দ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮২৫ ঘণ্টা, জুন ৪, ২০২৪
শরীয়তপুরের স্কুলে ক্লাস নিচ্ছেন দপ্তরি

শরীয়তপুর: শরীয়তপুর সদর উপজেলার শৌলপাড়া ইউনিয়নের ১২ নম্বর গয়ঘর খলিফা কান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি চলে মাত্র দুজন শিক্ষক দিয়ে।  

এর মধ্যে একজন মিটিংয়ে, আর অন্যজন ট্রেনিংয়ে থাকলে বা না আসতে পারলে ক্লাস (শ্রেণি) নিতে হয় দপ্তরি রাসেল মিয়াকে।

 

শিক্ষার্থীদের মধ্যে রাসেল মিয়া শিক্ষক হিসেবেই পরিচিত। কারণ দুই শিক্ষকের অনুপস্থিতিতে তাকেই পাঠদান করতে হয়। অনেক সময় একসঙ্গে দুটি ক্লাসও চালিয়ে নিতে হয় তাকে।  

সোমবার (৩ জুন) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত স্কুলে থেকে এমন চিত্রই দেখা গেছে।

জানা যায়, প্রত্যন্ত গ্রামের স্কুল হওয়ায় শিক্ষক সংকট থাকা সত্ত্বেও স্কুলটিতে বর্তমানে শিক্ষার্থীর সংখ্যা শতাধিক। প্রতিদিন এসব শিক্ষার্থী স্কুলে এলেও শিক্ষক সংকটে ব্যাহত হচ্ছে পাঠদান। গত ১ মে থেকে ৩ মে তিনদিন ধরে স্কুলটির সহকারী শিক্ষক পলাশ অধিকারী কারিকুলাম ট্রেনিংয়ে ও সোমবার প্রধান শিক্ষক অমল অধিকারী ক্রীড়া সংক্রান্ত একটি মিটিংয়ে যোগ দিতে যান। এজন্য শিক্ষকশূন্য হয়ে পড়ে স্কুলটি। ফলে সকাল সাড়ে ৯টায় একই সঙ্গে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির পাঠদান শুরু করেন স্কুলটির দপ্তরি রাসেল মিয়া।

এ ব্যাপারে রাসেল মিয়া বলেন, অমল স্যার মিটিংয়ে গেছেন, আর পলাশ স্যার ট্রেনিংয়ে থাকায় স্কুলে কোনো শিক্ষক নেই। তাই শিশুদের পাঠদান আমি নিজেই করছি। এছাড়া স্কুলে শিক্ষক সংকট থাকায় আমাকে প্রায়ই পাঠদান করতে হয়।  তবে মঙ্গলবার (৪ জুন) স্কুলে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ছিলেন।

এর সত্যতা পাওয়া গেল কয়েকজন শিক্ষার্থীর বক্তব্যেও।

স্কুলটির ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক অমল অধিকারী বলেন, ক্রীড়া বিষয়ক একটি মিটিংয়ে আমি ডোমসারে আছি। মিটিংয়ের সভাপতিত্ব করেছেন প্রাথমিক সহকারী শিক্ষা অফিসার শরীফ মো. এমারত। স্কুলের অপর শিক্ষক পলাশ ১৫ দিনের ট্রেনিংয়ে রয়েছেন। স্কুলে আজ কোনো শিক্ষক নেই।

স্কুলটির ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো. ইলিয়াস মিয়া বলেন, স্কুলে শিক্ষক সংকট থাকায় আমাদের আবেদনের ভিত্তিতে মামুন নামে একজন শিক্ষককে অতিরিক্ত দায়িত্বে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তিনিও বর্তমানে না থাকায় স্কুলে মাত্র দুজন শিক্ষক রয়েছেন। একটি স্কুল মাত্র দুজন শিক্ষক দিয়ে চালানো সম্ভব নয়। আমরা বার বার শিক্ষা অফিসে আবেদন করার পরও শিক্ষক দেওয়া হয়নি। তারা জানিয়েছেন, নতুন নিয়োগের পরে শিক্ষক দেওয়া হবে। তবে আজকের (৩ জুন) বিষয়টি আমার জানা নেই। প্রয়োজনীয় বিষয় ছাড়া স্কুলটির শিক্ষকদের সঙ্গে আমার তেমন কথা হয় না।

এ ব্যাপারে শরীয়তপুর সদর উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. তাজুল ইসলাম বলেন, ট্রেনিং ও মিটিং থাকার কারণে বর্তমানে শিক্ষক সংকট চলছে। তবে একটি বিদ্যালয়ে কোনো শিক্ষক না রেখে কেন সব শিক্ষককে ট্রেনিং ও মিটিংয়ে নেওয়া হলো, বিষয়টি আমি খোঁজ খবর নিয়ে দেখব। দপ্তরি দিয়ে ক্লাস নেওয়ার বিষয়টি আমার জানা নেই।

বাংলাদেশ সময়: ১৮১৯ ঘণ্টা, জুন ৪, ২০২৪
এসআই
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।