ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

নির্বাচন ও ইসি

দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন

খুলনার ১ ডজন হেভিওয়েট প্রার্থী স্বস্তিতে

মাহবুবুর রহমান মুন্না, ব্যুরো এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫১৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৪, ২০২৩
খুলনার ১ ডজন হেভিওয়েট প্রার্থী স্বস্তিতে

খুলনা: দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের ১০ জেলা নিয়ে গঠিত খুলনা বিভাগে সংসদীয় আসন ৩৬টি। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আসনগুলো থেকে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন মোট ৩২২ প্রার্থী।

চলছে প্রার্থীদের তথ্য যাচাই-বাছাই। আসনগুলো থেকে অন্তত ১ ডজন হেভিওয়েট প্রার্থী ভোটের মাঠে লড়বেন। তারা সহজেই জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বৈতরণী পার হয়ে যাবেন বলে মনে করছেন নির্বাচন বিশ্লেষকরা।

আনুষ্ঠানিকভাবে প্রচার প্রচারণা শুরু না হলেও দেশের অন্য অঞ্চলের মতো খুলনায়ও বইছে নির্বাচনী আমেজ। নির্বাচনকে সামনে রেখে কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা অবস্থান করছেন নিজ নিজ এলাকায়।

বিভাগের ৩৬টি আসনে এবার মনোনয়ন জমা দিয়েছেন দশ রাজনৈতিক দলের ৩২২ জন প্রার্থী। সবগুলো আসনে রয়েছে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির প্রার্থী। স্বতন্ত্র প্রার্থী আছেন শতাধিক। যাদের অনেকেই আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বঞ্চিত অথবা আওয়ামী রাজনীতিতে সম্পৃক্ত। বেশ কিছু আসনে আওয়ামী লীগ নির্ভার থাকলেও কয়েকটিতে দলের মধ্য থেকেই নৌকার মূল প্রতিদ্বন্দ্বী হতে যাচ্ছেন আসন্ন নির্বাচনে।

খুলনা-৪ ও খুলনা-৫ আসনে আওয়ামী লীগকে স্বতন্ত্র প্রার্থীর চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েতে হতে পারে। একই ভাবে ৪ আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য ও সাবেক একজন সংসদ সদস্য স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। এ আসনে নৌকা প্রতীক পেয়েছেন নতুন মুখ। তাই লড়াই হতে পারে ত্রিমুখী।

বাগেরহাট ৪ আসনেও স্বতন্ত্র প্রার্থীর বিপক্ষে লড়াইয়ের সম্ভাবনা রয়েছে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর। একই সমীকরণ ঝিনাইদহ-৩ আসনেও। চ্যালেঞ্জ হলেও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের স্বাগত জানাচ্ছেন আওয়ামী লীগ নেতারা। আর স্বতন্ত্র প্রার্থীরা বলছেন জনপ্রিয়তায় এগিয়ে থাকার কথা।

খুলনা বিভাগে হেভিওয়েট প্রার্থীদের মধ্যে সবার নজর থাকবে সদ্য রাজনীতিতে নাম লেখানো মাগুরা-১ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও তারকা ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানের দিকে। জাতীয় পার্টিসহ তার সঙ্গে ভোটের মাঠে থাকবেন আরও ৬ প্রার্থী। তারা কেউ সাকিবের বিপক্ষে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন না বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

আরেক তারকা ক্রিকেটার মাশরাফি বিন মোর্ত্তজা লড়ছেন নড়াইল-২ আসন থেকে। এ আসনে তার বিপক্ষে লড়বেন মো. লতিফুর রহমান (গণফ্রন্ট), শেখ হাফিজুর রহমান (ওয়ার্কার্স পার্টি), মো. মাহাবুবুর রহমান (ইসলামী ঐক্যজোট), মো.মনিরুল ইসলাম (এনপিপি), খন্দকার ফায়েকুজ্জামান (জাতীয় পার্টি) ও মো. মিজানুর রহমান মিজান (জাকের পার্টি)। মাশরাফির তুমুল জনপ্রিয়তার কাছে সবাই হেরে যাবেন এমনটা ধারণা স্থানীয়দের।

কুষ্টিয়া থেকে লড়বেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ ও আর জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু। দুজনই জাতীয় পর্যায়ের বড় নেতা। তাদের সাথে সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী যারা রয়েছেন তাদের অনেককে ভোটাররা চেনেন না।

যশোর-৬ আসনে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদার। যশোরের রাজনীতিতে ইতিমধ্যে বেশ প্রতিষ্ঠিত তিনি। এরই মধ্যে রাজনীতিতে বড় একটি বলয় সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়েছেন।

বাগেরহাট-১ ও খুলনা-২ আসন থেকে লড়ছেন বঙ্গবন্ধুর দুই ভ্রাতুষ্পুত্র শেখ হেলাল উদ্দিন ও সেখ সালাহউদ্দিন জুয়েল। হেভিওয়েট এ দুই ভাই অন্যান্য সব প্রার্থীর চেয়ে ভোটারদের কাছে বেশি গ্রহণযোগ্যতা রাখেন।

খুলনা-৩ আসনে প্রার্থী হয়েছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেন। এলাকায় জাতীয় পর্যায়ের এ নেতার রয়েছে বিপুল জনপ্রিয়তা। অনলবর্ষী বক্তা হিসেবেও দেশব্যাপী খ্যাতি রয়েছে তার।  

খুলনা-৪ আসনে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদী দাঁড়িয়েছেন। এ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন ১৪ জন। তার মধ্যে ৮ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে। বাকি যারা রয়েছেন তাদের অধিকাংশেরই রাজনীতিতে তেমন পরিচিতি নেই।

বাগেরহাট-২ আসনে নির্বাচন করবেন বঙ্গবন্ধুর আরেক ভ্রাতুষ্পুত্র শেখ হেলাল উদ্দিনের ছেলে শেখ সারহান নাসের তন্ময়। তরুণ তুর্কী হিসেবে খ্যাত এ প্রার্থীর সাথে যারা রয়েছেন তাদের চেয়ে তুমুল জনপ্রিয়তায় তুঙ্গে রয়েছেন তিনি।

বাগেরহাট-৩ আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার। খুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়র তালুকদার আবদুল খালেকের স্ত্রী তিনি। ৩০ বছরের অধিক সময় স্বামী-স্ত্রী এ আসনে নির্বাচিত হয়ে রামপাল-মোংলায় ব্যাপক উন্নয়ন করায় জনপ্রিয়তার তুঙ্গে রয়েছেন।

বাগেরহাট-৪ আসনে নতুন মুখ এসেছেন। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এইচ এম বদিউজ্জামান সোহাগ মনোনয়ন পেয়েছেন। পরিচ্ছন্ন ছাত্র নেতা হিসেবে ব্যাপক জনপ্রিয়তা রয়েছে তার। সেই জনপ্রিয়তা দিয়ে তিনি নির্বাচনী বৈতরণী সহজে পার হতে পারবেন বলে মনে করছেন স্থানীয় ভোটাররা।

সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) খুলনা জেলা সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট কুদরত-ই খোদা বাংলানিউজকে বলেন, সাধারণত বিএনপি ও আওয়ামী লীগকে বড় দল হিসেবে বিবেচনা করা হয়। বিএনপি নির্বাচনে না আসায় হেভিওয়েট প্রার্থীরা স্বস্তিতে আছেন। তারা খুব সহজে নির্বাচনে পাস করে আসবেন- এটাই খালি চোখে দেখা যাচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫১৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৪,  ২০২৩
এমআরএম/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।