ঢাকা, বুধবার, ১৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য

ভালোবাসাময় ‘পাতি-শরালি’ যুগল

বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য বাপন, ডিভিশনাল সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫৩৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০১৮
ভালোবাসাময় ‘পাতি-শরালি’ যুগল হাওরের পানিতে বসে আছে পাতি-শরালি দম্পতি। ছবি: আবু বক্কর সিদ্দিক

মৌলভীবাজার: পাতি-শরালিদের (Lesser Whistling Duck) অদ্ভুত প্রাকৃতিক ভালোবাসাকে দূর থেকে দেখার সুযোগ হয় বাইক্কা বিলের জলাশয়ে। সবার থেকে গোপনে একে-অপরকে খুঁজে নেয় এ পাখি, পরশে আর ভালোবাসার বাঁধনে বাঁধে নিজেদের।

কাছে গেলেই উড়ে যাওয়ার ভয়।  তাই দূর থেকে যতখানি দেখা গেছে, তাতেই এক পাতি-শরালি যুগলের ভালোবাসার চিত্র বারবার ফুটে উঠেছে।

প্রকৃতির নির্জন অবসরে কখনো কখনো ‘হুই-হুয়ি’ স্বরে শিস্‌ দিয়ে ভালোবাসার অনুভূতি প্রকাশ করে তারা।

এ জলচর পাখিদের একসঙ্গে বসে থাকা কিংবা উড়ে যাওয়ার দৃশ্য প্রকৃতির এক অবিচ্ছেদ্য সৌন্দর্য। এ দৃশ্য স্বচোখে উপলব্ধি করা মাত্রই হৃদয় ভরে উঠতে বাধ্য।    

কবি জীবনানন্দ দাশ সম্ভবত আগেই এ ব্যাপারটি উপলব্ধি করে লিখেছিলেন, ‘আমি যদি হতাম বনহংস / বনহংসী হতে যদি তুমি / কোনো এক দিগন্তের জলসিঁড়ি নদীর ধারে / ধানক্ষেতের কাছে। ’ 
আকাশে ডানা মেলেছে পাতি-শরালি দম্পতি।  ছবি- আবু বক্কর সিদ্দিক

বাংলাদেশ বার্ড ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা এবং প্রখ্যাত পাখি বিশেষজ্ঞ ইনাম আল হক বলেন, আমাদের মতোই ওরাও যৌবনে জোড়াবাঁধে। একে অপরকে কাছে পেতে চায়। যেখানেই যায়, জোড়ায় জোড়ায়। প্রকৃতির ছোট ছোট এ দৃশ্যগুলো তখন তাদের প্রেনের বন্দনায় পূর্ণ হয়ে ওঠে।

তিনি আরও বলেন, এরা আমাদের দেশের আবাসিক এবং প্রাকৃতিক হাঁস। শীত মৌসুমে আমাদের হাওর-বিল ও জলাশয়গুলোতে তাদের বেশি দেখা যায়। এর কারণ হলো, ওরা তখন মিলিত হয়। বাকি সময়টুকু জোড়ায় জোড়ায় বা ছোট ছোট দলে বিছিন্ন হয়ে পড়ে। গ্রীষ্মকালে এরা ছোট জলাশয়ে বাস করে।

পাতি-শরালির শারীরিক আকৃতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এ হাঁসগুলো দৈর্ঘ্য ৪২ সেন্টিমিটার এবং দেহের রং বাদামি। মাথার চাঁদি (মাথার উপরের আবরণ) কালচে।

এ হাঁসগুলো বিশেষ ব্যাপার হলো, ওড়ার সময় এদের পাখা থেকে ‘ঝন-ঝন’ শব্দ হয়। শুনতে দারুণ লাগে। বিলের মধ্যে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা অবস্থা থেকে হঠাৎ যখন সম্মিলিতভাবে উড়াল দেয়, তখন ডানার অপূর্ব ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে ওঠে চারপাশ, বলেব এই পাখি বিষয়ক লেখক ও গবেষক ইনাম আল হক।

বাংলাদেশ সময়: ১১৩০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০১৮
বিবিবি/ এনএইচটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।