ঢাকা, রবিবার, ১৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য

লাঙলের মতো খাবার চষে ‘পাকরা-উল্টোঠুঁটি’

বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য বাপন, ডিভিশনাল সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫৩৮ ঘণ্টা, আগস্ট ১১, ২০১৮
লাঙলের মতো খাবার চষে ‘পাকরা-উল্টোঠুঁটি’ বাঁকা ঠোঁটের পরিযায়ী পাখি ‘পাকরা-উল্টোঠুঁটি’, ছবি: আদনান আজাদ আসিফ

মৌলভীবাজার: চারদিকজুড়ে বিলের পানি। সেই অবস্থার কোনো এক ফাঁকে জমেছে চর। পানি সাঁতরে ক্লান্ত হয়ে যাওয়া পাখিরা সেই চরে এসে নিচ্ছে কিছুক্ষণের বিশ্রাম। কেউ কেউ আবার সেই চরের নরম মাটিতেই ঠোঁটগুঁজে খাবারের সন্ধান করছে।

‘পাকরা-উল্টোঠুঁটি’ তেমনি এক ধরনের পরিযায়ী পাখি। যারা মাটি চষে খাবার খায়।

এর আরেকটি নাম ‘খোয়াজ’। এর ইংরেজি নাম Pied avocet এবং বৈজ্ঞানিক নাম Recurvirostra avosetta

বন্যপ্রাণী গবেষক ও আলোকচিত্রী আদনান আজাদ আসিফ বাংলানিউজকে বলেন,  ‘পাকরা-উল্টোঠুঁটি’ পরিযায়ী পাখি। এটি রাজশাহীর পদ্মার চর থেকে তোলা। ওরা দলবদ্ধভাবে থাকে। দলছুট হলে একাও দেখা যায়। অক্টোবরের শেষের দিকেই আমাদের দেশে চলে আসে। রাজশাহী, হাতিয়া, ফেনীসহ অনেক এলাকার চরে বেড়াতে দেখা যায়।

তিনি আরো বলেন,  কম পানিতে থাকে। যাতে খাবার খেতে পারে। বিশেষ ঠোঁটের কারণে তারা অন্যভাবে খাবার খায়। কেউ বিরক্ত করলে সবাই মিলে উড়ে ৬০-১০০ ফিট দূরে গিয়ে আবার খাবার খোঁজে। সাদা কালো রঙের কারণে আকাশে চক্কর দিলে দেখতে অসাধারণ লাগে।

প্রখ্যাত পাখি বিশেষজ্ঞ ও লেখক শরীফ খান বাংলানিউজকে বলেন, ‘পাকরা-উল্টোঠুঁটি’ পাখিরা মাঘ-ফাল্গুনেই আমাদের দেশে চলে আসে। ওরা জলাচর পাখি নয়। চর বা নরম মাটির উপর ওরা চেলাফেরা করে। সারাদেশেই আছে তবে সংখ্যায় কম।

ঠোঁটের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তাদের খাবার অনুসন্ধানের প্রক্রিয়াটা দারুণ। ঠোঁট দিয়ে লাঙলের মতো চষে যায়। সামনের দিকে ঢেলে আবার ডানে-বামে ঢেলে। তাদের ঠোঁট খুবই স্পর্শকাতর। মাটির নিচে লুকিয়ে থাকা পোকা-কীট প্রভৃতি ঠোঁটে লাগলেই তারা এক মুহূর্তে বুঝতে পারে যে, এখানে খাবার আছে।
 
খাবার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মাটির নিচে কেঁচোর মতো এক ধরনের পোকা আছে, ওই পোকাটা ওরা বেশি খায়। এছাড়াও জলের বিভিন্ন পোকা খেয়ে থাকে।

একশ্রেণীর অসাধু মানুষ চর এলাকায় জাল পেতে ধরাসহ এয়ারগান, পয়েন্ট টুটু-ফোর প্রভৃতি বন্দুক নিয়ে এই পাখিগুলোকে শিকার করে থাকে। এ ব্যাপারে ব্যাপক সচেতনতা এবং বন্যপ্রাণী আইনের যথাযথ প্রয়োগ হলে পাখিরা তাদের অনাকাঙিক্ষত মৃত্যুর হাত থেকে প্রাণে বাঁচবে বলে জানান শরীফ খান।

বাংলাদেশ সময়: ১১৩৪ ঘণ্টা, আগস্ট ১১, ২০১৮
বিবিবি/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।