ঢাকা, শনিবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

চিকিৎসকদের কর্মবিরতিতে খুলনার স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় অচলাবস্থা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৫২ ঘণ্টা, মার্চ ২, ২০২৩
চিকিৎসকদের কর্মবিরতিতে খুলনার স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় অচলাবস্থা চিকিৎসাসেবা না পেয়ে হাসপাতালের গেটেই ক্লান্ত হয়ে চেয়ারে ঘুমিয়ে পড়েন রোগী, হতাশ স্বজনেরা।

খুলনা: আসামি গ্রেফতার না হওয়া পর্যন্ত অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতিতে খুলনার স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

শহীদ শেখ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতালের প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা. শেখ নিশাত আব্দুল্লাহের ওপর হামলায় জড়িত ব্যক্তিরা গ্রেফতার না হওয়া পর্যন্ত কর্মবিরতি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) খুলনা জেলা শাখা।

বুধবার (১ মার্চ) রাতে বিএমএর জরুরি সভা শেষে এই ঘোষণা দেন সংগঠনের জেলা সভাপতি ডা. শেখ বাহারুল আলম। মহানগরীর সাতরাস্তা মোড়ের বিএমএ ভবনে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভা শেষে ডা. শেখ বাহারুল আলম জানান, আসামি গ্রেফতার হওয়া না পর্যন্ত চিকিৎসকদের কর্মবিরতি চলবে।  

বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় শেখ আবু নাসের হাসপাতালের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ হবে।

এদিকে বৃহস্পতিবার (২ মার্চ) চিকিৎসকদের কর্মবিরতির কারণে দূর-দূরান্ত থেকে আসা রোগীরা খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, শহীদ শেখ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতাল, খুলনা জেনারেল হাসপাতালসহ সরকারি-বেসরকারি কোনো হাসপাতাল-ক্লিনিকে চিকিৎসাসেবা না পেয়ে বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন। এ সময় অনেক রোগী ও তাদের স্বজনদের ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করতেও দেখা যাচ্ছে।

লিভারে সমস্যা নিয়ে গোপালগঞ্জ থেকে খুলনায় বেসরকারি হাসপাতালে বোনকে নিয়ে এসেছেন ইমন। তিনি চিকিৎসক না পেয়ে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করছেন।

খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বৃদ্ধ রোগী আব্দুল্লাহ বলেন, আমরা অনেক দূর থেকে এসেছি। আমরা কিছু জানি না। হাসপাতালের বারান্দায় বসে আছি এখন শুনি ডাক্তার নাই। জানি না কীভাবে বাড়ি ফিরে যাব! শরীরটা ভীষণ দুর্বল।

এদিকে রোগীর স্বজনদের হামলায় আহত চিকিৎসক  ডা. শেখ নিশাত আব্দুল্লাহ বাদী হয়ে বুধবার সাতক্ষীরায় কর্মরত পুলিশের সহকারী পরিদর্শক (এএসআই) নাঈমুজ্জামান শেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও কয়েকজনের বিরুদ্ধে নগরীর সোনাডাঙ্গা থানায় মামলা করেছেন।

যদিও যাদের বিরুদ্ধে চিকিৎসক নিশাতের উপর হামলার অভিযোগ উঠেছে তারা জানান ভিন্ন কথা।  

ওই চিকিৎসক তার কাছে চিকিৎসা নিতে আসা শিশুর মাকে কু-প্রস্তাব দেন বলে অভিযোগ। মা রাজি না হওয়ায় তার শিশুর অপচিকিৎসা করেন চিকিৎসক। এতে শিশু তার বাম হাতের একটি আঙ্গুল হারান।

ওই শিশুর মা সাতক্ষীরা পুলিশের এএসআই মো: নাঈমুজ্জামানের স্ত্রী নুসরত আরা ময়না বুধবার (১ মার্চ) খুলনা প্রেসক্লাবে গিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন। সেখানেও তিনি চিকিৎসকের বিরুদ্ধে কু-প্রস্তাব দেওয়ার পাশাপাশি সন্তানের চিকিৎসায় অবহেলা এবং তার হাতের আঙুলে পচন ধরার অভিযোগ আনেন।

সংবাদ সম্মেলন শেষে তিনি নগরীর সোনাডাঙ্গা থানায় গিয়ে দুই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ এনে মামলা করেন।

এর আগে বুধবার (১ মার্চ) সকাল ৬টা থেকে শুরু হওয়া কর্মবিরতি পালন বৃহস্পতিবার (২ মার্চ) সকাল ৬টা পর্যন্ত গড়িয়েছে।

মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) খুলনা শাখা সংবাদ সম্মেলনের এই কর্মবিরতি ঘোষণা করে।

বাংলাদেশ সময়: ০৯৪৫ ঘণ্টা, মার্চ ০২ , ২০২৩
এমআরএম/এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।