ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

শিশুদের জন্য বিশেষায়িত হাসপাতালের প্রস্তাব ঢামেক চিকিৎসকদের

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৪৪ ঘণ্টা, জুন ৩, ২০২৩
শিশুদের জন্য বিশেষায়িত হাসপাতালের প্রস্তাব ঢামেক চিকিৎসকদের

ঢাকা: শিশুদের অত্যাধুনিক চিকিৎসার জন্য বিশেষায়িত শিশু হাসপাতাল করার প্রস্তাব করেছেন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের চিকিৎসকরা।  

ঢাকা মেডিক্যালে যেখানে একই বেডে ২ থেকে ৩ জন শিশুকে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হয়।

সেখানে তাদের জন্য আলাদা হাসপাতাল করা হলে চিকিৎসা সেবার মানও উন্নত হবে বলে মন্তব্য তাদের।

শনিবার (৩ জুন) দুপুরে ঢামেক সভাকক্ষে আয়োজিত Annual Audit and Launching of Yearbook শীর্ষক সেমিনারে চিকিৎসকরা এসব কথা বলেন।

সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন এমপি।  

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব সিরাজুল ইসলাম, ঢামেক অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মো. শফিকুল আলম চৌধুরী, উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. আব্দুল হানিফ টাবলু, শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ডা. দেবেশ চন্দ্র তালুকদার ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ডা. মো. আহম্মেদ হোসেন হারুন। হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাজমুল হক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিক্যাল অনুষদের ডিন ডা. শাহারিয়ার নবি শাকিলসহ আরও অনেকে।

সেমিনারটি আয়োজন করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের শিশু সার্জারি বিভাগ, নিওনেটাল সার্জারি বিভাগ, শিশু সার্জিক্যাল অনকোলজী বিভাগ এবং শিশু ইউরোলজী বিভাগ।

এতে সভাপতিত্ব করেন শিশু সার্জারি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. মো. আশরাফ উল হক কাজল। তিনি বলেন, ১৯৯৩ সালে ঢামেকে ১০টি বেড নিয়ে শিশু সার্জারি বিভাগের যাত্রা শুরু হয়। বর্তমানে বেড সংখ্যা ৮৭টি। যেখানে বহির্বিভাগ, আন্তঃবিভাগ জরুরি চিকিৎসা এবং বিশেষায়িত চিকিৎসা (নবজাতক, শিশু ক্যান্সার, শিশু ইউরোলজি, লেপারোস্কোপি সার্জারি এবং কলোনোস্কোপি) দেওয়া হচ্ছে। এখানে ৮৭টি বেডের বিপরীতে প্রতিনিয়ত ১৫৫ বা এর অধিক শিশু রোগী ভর্তি থাকে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি, কাজের চাপ এবং বিশেষায়িত সেবাও বৃদ্ধি পেয়েছে।

সেমিনারে ২০২২ সালের বাৎসরিক কার্যক্রম উপস্থাপন এবং ২০১৪-২০২২ সালের সার্বিক কার্যক্রমের মূল্যায়ন করা হয়।  

যেখানে তুলে ধরা হয়- ২০১৪ সালে বহির্বিভাগে রোগীর সংখ্যা ছিল ৫,০৩৩ জন। সেটি বেড়ে ২০২২ সালে হয়েছে ১৬,৩২১ জন। জরুরি ভর্তি ২০১৪ সালে ১,৩১৫ জন। সেটি বেড়ে ২০২২ সালে হয়েছে ২,০৮৮ জন। রুটিন অপারেশন ২০১৪ সালে ছিল ৩২৮টি। সময়ের পরিক্রমায় সেটি বেড়ে ২০২২ সালে ১,৪৯৯টি অপারেশন সম্পন্ন করা সম্ভব হয়েছে। ২০২২ সালে মোট সার্জারি সম্পন্ন হয় ৩,১৬৭টি (রুটিন অপারেশন ১,১৯৮টি ও জরুরি অপারেশন ১,৯৬৯)।  

আরও উল্লেখ করা হয়, এখন পর্যন্ত এই বিভাগ থেকে ৪১ জন চিকিৎসক এমএস ডিগ্রি সম্পন্ন করে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে SDG লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের লক্ষ্যে বিশেষায়িত শিশু সার্জিক্যাল সেবা দিয়ে আসছেন। বর্তমানে এই বিভাগে ১১টি গবেষণা কার্যক্রম চলমান।

ঢামেকের উপাধ্যক্ষ ও নবজাতক বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. আব্দুল হানিফ টাবলু বলেন, বেডের সংখ্যার চেয়ে এখানে কয়েকগুণ বেশি শিশু রোগী ভর্তি থাকে। শিশুদের আরও উন্নত চিকিৎসার কথা চিন্তা করে হলেও ঢাকায় সরকারি একটি বিশেষায়িত শিশু হাসপাতাল করা দরকার। রাজধানীর শ্যামলীতে যে শিশু হাসপাতালটি রয়েছে, তা স্বায়ত্তশাসিত। কাজেই পুরোপুরি সরকারি একটি হাসপাতাল করা খুবই প্রয়োজন।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেন, ঢামেক সবচেয়ে বৈশিষ্ট্যময় হাসপাতাল। প্রতিদিন অসংখ্য রোগী এখানে চিকিৎসা নেয়। কাউকে "না" বলা হয় না। সব জটিল চিকিৎসাই এখানে সম্ভব।  

চিকিৎসকদের আন্তরিকতার বিষয়টি উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, চিকিৎসকদের দক্ষতা, যোগ্যতা এবং কোয়ালিটির ক্ষেত্রে ঢাকা মেডিক্যালের জুড়ি নেই।

তিনি বলেন, বিভিন্ন মেডিকেল থেকে যেসব মেধাবী চিকিৎসক পাশ করে দেশের বাইরে চলে গেছেন; তাদের যদি সেই সুযোগ-সুবিধা দেওয়া যায়, তাহলে তারাও দেশে চলে আসবেন।

এসময় শিশুদের জন্য বিশেষায়িত হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার প্রস্তাবসহ চিকিৎসকদের সবগুলো প্রস্তাবনা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করবেন বলেও জানান জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী।

বাংলাদেশ সময়: ১৮২৪ ঘণ্টা, জুন ৩, ২০২৩
এজেডএস/এনএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।