ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

ডেঙ্গুতে মৃত্যু: গত বছরের রেকর্ড ছাড়াল আগস্টের ২৬ দিনেই

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৪৫ ঘণ্টা, আগস্ট ২৬, ২০২৩
ডেঙ্গুতে মৃত্যু: গত বছরের রেকর্ড ছাড়াল আগস্টের ২৬ দিনেই

ঢাকা: প্রতিদিনই বাড়ছে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। ইতোমধ্যে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়েছে।

চলতি মাসের ২৬ দিনেই এবার দেশের ইতিহাসে ডেঙ্গুতে সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড হলো। গত ২৬ দিনেই ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয়েছে ২৮৬ জনের, যা এর আগে এক বছরে ডেঙ্গুতে মোট মৃত্যুর সংখ্যা থেকেও বেশি।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, দেশে ২০০০ সালে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ৯৩ জনের মৃত্যু হয়। ২০০১ সালে ৪৪ জন, ২০০২ সালে ৫৮ জন, ২০০৩ সালে ১০ জন, ২০০৪ সালে ১৩ জন, ২০০৫ সালে চারজন এবং ২০০৬ সালে ১১ জন মারা যায়।

২০০৭ সালে থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রন্ত হয়ে কেউ মারা যাননি। ২০১১ সালে ছয়জন, ২০১২ সালে একজন, ২০১৩ সালে দুইজনের মৃত্যু হয়। ২০১৪ সালে কেউ মারা যায়নি। ২০১৫ সালে ছয়জন, ২০১৬ সালে ১৪ জন, ২০১৭ সালে আটজন, ২০১৮ সালে ২৬ জন। ২০১৯ সালে ১৭৯ জন, ২০২০ সালে চারজন, ২০২১ সালে মারা যায় ১০৫ জন।

২০২২ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সারা দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মোট ২৮১ জনের মৃত্যু হয়, যা ছিল দেশে এক বছরে ডেঙ্গুতে সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো ডেঙ্গু বিষয়ক এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে থেকে জানা যায়, চলতি বছরের শনিবার (২৬ আগস্ট) পর্যন্ত দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মোট ৫৩৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। চলতি বছরের গত জুলাই মাসের ৩১ তারিখ পর্যন্ত দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মারা যায় ২৫১ জন। অর্থাৎ গত ২৬ দিনেই ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয়েছে ২৮৬ জনের, যা এক বছরে ডেঙ্গুতে সর্বোচ্চ মৃত্যু থেকেও বেশি।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাংলাদেশে বর্তমানে চার ধরনের ডেঙ্গুর প্রকোপ রয়েছে; ডেন-১, ডেন-২, ডেন-৩ এবং ডেন-৪। এক ধরনের ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হলে পরবর্তী সময়ে সেই নির্দিষ্ট ধরনের বিরুদ্ধে দেহ স্বাভাবিকভাবে প্রতিরক্ষা গড়ে তোলে। কিন্তু অন্য আরেকটি ধরনের ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হলে তখন ডেঙ্গুর ভয়াবহতা বাড়ে। তখনই রোগীর মধ্যে ডেঙ্গু হেমোরেজিক ফিভার বা ডেঙ্গুজনিত রক্তক্ষয়ের ঘটনা ঘটে।

১৯৬৪ সালে ‘ঢাকা জ্বর’ বা ‘ঢাকা ফিভার’ নামে অজ্ঞাত এক অসুখ মহামারি হয়ে দেখা দিয়েছিল। পরবর্তী সময়ে সিরোটাইপিং হিসেবে পরিচিত পরীক্ষা করে নিশ্চিত হওয়া যায় যে ঢাকা জ্বর আসলে ছিল ডেঙ্গু জ্বর। ২০০০ সাল থেকে দেশে ডেঙ্গু জ্বরের সংক্রমণ বাড়তে শুরু করে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, গত কয়েক বছর ধরে অব্যাহতভাবে ডেঙ্গুর সংক্রমণ ঘটে চললেও সেদিকে তেমন গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। ফলে ডেঙ্গু ভয়াবহ হয়ে উঠেছে। উতোপূর্বে ডেঙ্গু রাজধানীকেন্দ্রিক থাকলেও বর্তমানে তা সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। গত কয়েক বছরের তুলনায় এবার ডেঙ্গু রোগীদের অবস্থা খুব তাড়াতাড়ি অবনতি হচ্ছে এবং মারা যাচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৩ ঘণ্টা, আগস্ট ২৬, ২০২৩
আরকেআর/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।