ঢাকা, রবিবার, ১৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

‘বিরল ‘এসএমএ’ রোগের পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসা শিগগির দেশে মিলবে’

সিনিয়য় করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯০৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৮, ২০২৪
‘বিরল ‘এসএমএ’ রোগের পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসা শিগগির দেশে মিলবে’ রোগীর সঙ্গে কথা বলছেন ডা. কাজী দীন মোহাম্মদ।

ঢাকা: ভবিষ্যতে বিরল রোগ স্পাইনাল মাসকুলার অ্যাট্রোফি (এসএমএ) পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসা দেশেই মিলবে বলে জানিয়েছেন ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতালের পরিচালক প্রখ্যাত নিউরোলজিস্ট অধ্যাপক ডা. কাজী দীন মোহাম্মদ।

সোমবার (২৮ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতালে অনুষ্ঠিত ‘নিউরোমাস্কুলার ডিজিজ ট্রিটমেন্ট সেন্টার’ এসএমএ ক্লিনিকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

ডা. দীন মোহাম্মদ বলেন, বিরল ‘এসএমএ’ রোগটি হলে একসময় অভিভাবকরা আশাহত হতেন। সাত থেকে আটটি ডিসিপ্লিনের সেবা মিলিয়ে এই বিরল রোগের চিকিৎসা করতে হয় বলে অনেকেই দিক-নির্দেশনার অভাবে হতাশ হতেন। দেশে এ রোগের চিকিৎসার তেমন সুযোগও ছিল না। কিন্তু সময়ের ব্যবধানে বিভিন্ন পক্ষের আন্তরিকতায় বর্তমানে দেশেই মাল্টিডিসিপ্লিনারি চিকিৎসাসেবা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে। শিগগিরই এ বিরল রোগ এসএমএয়ের পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসাব্যবস্থা দেশেই গড়ে উঠবে।

তিনি আরও বলেন, বিশ্বে এখন পর্যন্ত একাধিক ওষুধ অনুমোদন পেয়েছে। বাংলাদেশেও এরই মধ্যে রোশের মুখে খাওয়ার একটি ওষুধ (রিসডিপ্লাম) অনুমোদন পেয়েছে। ওষুধের মূল্য ও আনুষঙ্গিক বিষয়ে সরকারসহ বিভিন্ন পক্ষের কাজ চলছে। আগামীতে ওষুধের দামও সবার সাধ্যের মধ্যে চলে আসবে বলে আমরা আশা করছি।

অভিভাবকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনারা হতাশ হবেন না। এসএমএ হলেও স্বাভাবিক জীবনযাপন করা সম্ভব।

তিনি বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘কিউর এসএমএ বাংলাদেশ’কে ধন্যবাদ। তারা এগিয়ে এসেছে। এর কারণে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে এই রোগ সর্ম্পকে সচেতনতা সৃষ্টি হচ্ছে।

দিনব্যাপী এই অনুষ্ঠানে ‘রোশ বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার মার্ক হিব, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতালের যুগ্ম পরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. বদরুল আলম, পেডিয়েট্রিক নিউরোলজিস্ট অধ্যাপক ডা. নারায়ণ সাহা, কিউর এসএমএ বাংলাদেশের সভাপতি শাহাদাত হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড আইএস বিভাগের অধ্যাপক মো. মাকসুদুর রহমান সরকার, এফসিএমএসহ নিউরোসায়েন্সেস হাসপাতালের বিভিন্ন বিভাগের চিকিৎসক, রোশ বাংলাদেশের বিভিন্ন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, কিউর এসএমএ বাংলাদেশের প্রতিনিধি এবং দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত এসএমএ রোগী ও অভিভাবকরা উপস্থিত ছিলেন।
 
অনুষ্ঠানে অধ্যাপক ডা. মো. বদরুল আলম বলেন, বিশ্বের ব্যয়বহুল যেসব চিকিৎসাসেবা ও ওষুধ রয়েছে, তার মধ্যে এসএমএ একটি অন্যতম রোগ। এই রোগের একটি টিকার দাম প্রায় ২২ কোটি টাকা। মুখে খাওয়ার ওষুধ দেশে অনুমোদন পেয়েছে, এর দাম তিন লাখে নেমে এসেছে। যেহেতু এটি সবসময় খেয়ে হয়, সবার পক্ষে কেনা সম্ভব নয়। তাই এ বিষয়ে সরকারের আন্তরিকতা খুব প্রয়োজন। তবে এজন্য সারা দেশে কি পরিমাণ রোগী আছে তার একটি পূর্ণাঙ্গ পরিসংখ্যান দরকার। এক্ষেত্রে সব পক্ষকে সাথে নিয়ে কাজ করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, আশার কথা হচ্ছে, চিকিৎসাসেবা এবং থেরাপির কারণে ওষুধের প্রয়োজন খুব বেশি অনুভব করছে না। এজন্য উপযুক্ত সেবা নিশ্চিতের বিকল্প নেই। তিনি বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।  

আলোচনা সভার পর ‘নিউরোমাস্কুলার ডিজিজ ট্রিটমেন্ট সেন্টার’ বা এসএমএ ক্লিনিক পরিচালনা করা হয়।  

এই নিউরোমাসকুলার ডিজিজ ট্রিটমেন্ট সেন্টারে বিরল এসএমএ রোগে আক্রান্ত দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে আগত রোগীদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সহযোগিতা ও দিক-নির্দেশনার পাশাপাশি বিনামূল্যে নিউমোনিয়া ও ইনফ্লুয়েঞ্জা ভ্যাকসিন দেওয়া হয়।

ক্লিনিক আয়োজনে সার্বিক সহযোগিতা ছিল নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতাল, বাংলাদেশে এসএমএ আক্রান্ত রোগীদের কল্যাণে কাজ করা রোগী এবং অভিভাবকদের একমাত্র সংগঠন কিউর এসএমএ বাংলাদেশ এবং সায়েন্টিফিক পার্টনার হিসেবে সহযোগিতা করেছে ১৮৯৬ সালে সুইজারল্যান্ডের বাজেল শহরে প্রতিষ্ঠিত রোশ গ্রুপের অ্যাফিলিয়েট রোশ বাংলাদেশ লিমিটেড।

বাংলাদেশ সময়: ১৯০৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৮, ২০২৪
আরকেআর/এএটি
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।