সিলেট: প্রথমবারের মতো কার্ডিওলজি বিভাগের ক্যাথল্যাবে ৮ শিশুর সফল অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হয় সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ (সিওমেক) হাসপাতালে। দুই বছর থেকে ১২ বছর বয়সী এ শিশুর শরীরে সফলভাবে ডিভাইস বসানো হয়।
রোববার (২ ডিসেম্বর) হাসপাতালের দোতলায় কার্ডিওলজি বিভাগের ক্যাথল্যাবে পাঁচ শিশুর এবং শনিবার (১ ডিসেম্বর) তিন শিশুর দেহে সফল অস্ত্রোপচার করেন চিকিৎসকরা।
সংশ্লিষ্টরা জানান, শিশুদের হার্টের জন্মগত অস্বাভাবিক ছিদ্র বন্ধ করা, রক্তনালির স্বাভাবিকীকরণ তথা অ্যাট্রিয়াল সেপ্টাল ডিফেক্ট (এএসডি), ভেন্ট্রিকুলার সেপ্টাল ডিফেক্ট (ভিএসডি) এবং প্যাটেন্ট ডাক্টাস আর্টারিওসাসের (পিডিএ) চিকিৎসার জন্য এ ডিভাইস লাগানো হয়।
সরকারি সহযোগিতা ও লন্ডনের মন্তাদা এইডের অর্থায়নে দুই দিনব্যাপী এই অস্ত্রোপচারে ঢাকাস্থ বাংলাদেশ শিশু হাসপাতালের শিশু কার্ডিওলজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা. রেজওয়ানা রিমাসহ চিকিৎসকদের ১০ জনের একটি দল সার্বিক সহযোগিতা করেন। প্রতিটি ডিভাইসের দাম দেড় থেকে দুই লাখ টাকার বেশি বলে জানান চিকিৎসকরা।
সিওমেকের অধ্যক্ষ ডা. মো. জিয়াউর রহমান চৌধুরী বলেন, হার্টের জন্মগত ছিদ্র, যাকে এ এস ডি (অ্যাট্রিয়াল সেপ্টাল ডিফেক্ট) বা ভি এস ডি (ভেন্ট্রিক্যুলার সেপ্টাল ডিফেক্ট) বলা হয়। সেটিও বাচ্চাদের এক ধরনের জন্মগত ত্রুটি। যে কারণে শিশুরা যেকোনো মুহূর্তে মারা যেতে পারে।
তিনি বলেন, সব শিশুই নিষ্পাপ হিসেবে জন্মগ্রহণ করে। যখন দেখা যায় শিশুটির কোনো জন্মগত ত্রুটি রয়েছে, সেটা পরিবারের কাছে বেদনার কারণ হয়ে ওঠে। আশার কথা, এখন আমাদের দেশেই এই জটিল রোগের চিকিৎসা রয়েছে।
হাসপাতালের কার্ডিওলজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর ডা. মো. মোখলেছুর রহমান বলেন, ক্যাথল্যাবে বড় হৃদরোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তবে শিশু হৃদরোগীদের জন্য এ ধরনের কার্যক্রম যুক্ত হওয়ায় সিওমেক দেশের সরকারি হাসপাতালগুলোর মধ্যে মাইলফলক হয়ে থাকবে।
ঢাকাস্থ বাংলাদেশ শিশু হাসপাতালের শিশু কার্ডিওলজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা. রিজওয়ানা রিমা গণমাধ্যমকে বলেন, ঢাকার বাইরে পূণ্যভূমি সিলেটে এই প্রথম ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু হৃদরোগীদের (২ বছর থেকে ১৮ বছর) চিকিৎসা সহায়তার আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে।
হাসপাতালটির পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল উমর রাশেদ মুনিরের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় ঢাকার বাইরে প্রথম এ ধরনের অস্ত্রোপচার করা হয়েছে বললেন তিনি।
সিওমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল উমর রাশেদ মুনির সাংবাদিকদের বলেন, চিকিৎসাসেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে সরকার বদ্ধপরিকর। আমাদের সীমিত সামর্থ্য দিয়েই প্রয়োজনীয় সব ধরনের সেবা দিতে প্রস্তুত।
বাংলাদেশ সময়: ১৬২৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০২, ২০২৪
এনইউ/এএটি