ঢাকা: জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে পুলিশের গুরুতর আহত খোকন চন্দ্র বর্মণকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাশিয়ায় পাঠাচ্ছে সরকার।
বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ কথা জানানো হয়।
স্বৈরাচার শেখ হাসিনার সরকারের বিরুদ্ধে অভ্যুত্থান চলাকালে গত বছরের ৫ আগস্ট দুপুরে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানার সামনে গুলিবিদ্ধ হন খোকন চন্দ্র বর্মণ। পুলিশের গুলির আঘাতে তার মুখের একটি বড় অংশ হাড়সহ নষ্ট হয়ে যায়। খোকন চন্দ্র বর্মণের ওপরের ঠোঁট, মাড়ি, নাক, তালুর এখন আর কোনো অস্তিত্ব নেই।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, আঘাতের ধরন গুরুতর এবং আহত খোকনের মুখ পুনর্গঠনের প্রক্রিয়াটি বেশ জটিল। খোকন চন্দ্র বর্মণের চিকিৎসার ব্যাপারে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে যোগাযোগ করা হয়। দীর্ঘ চেষ্টার এক পর্যায়ে রাশিয়ার রাজধানী মস্কোর ইউনিভার্সিটি ক্লিনিক অব লোমোনোসোভ হাসপাতাল তার মুখ পুনর্গঠনের চ্যালেঞ্জটি নিতে সম্মত হয়েছে।
তারই পরিপ্রেক্ষিতে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদেরর সমন্বয়ে গঠিত মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, রাশিয়ায় প্রশিক্ষিত সার্জন ডাক্তার মো. মাহমুদুল হাসানসহ শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) ভোর ৪টা ২৫ মিনিটে কাতার এয়ারওয়েজের ফ্লাইটে খোকন চন্দ্র বর্মণকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাশিয়া পাঠানো হচ্ছে।
প্রাথমিকভাবে ওই হাসপাতালে তার আঘাতের প্রাক-মূল্যায়ন করা হবে এবং থ্রি-ডি অ্যানিমেশনের মাধ্যমে তার চেহারাকে পূর্বের অবস্থায় ফেরত আনার জন্য অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে একটি মডেল দাঁড় করানো হবে। মডেল অনুযায়ী চেহারা পুনর্গঠনের জন্য মূল সার্জারি মার্চ মাসের ২০ তারিখ বা তার কাছাকাছি সময়ে শুরু হবে।
জুলাই অভ্যুত্থানে আহতদের চিকিৎসার ধারাবাহিকতায় ইতোমধ্যে ৩৮ জন আহতকে সিঙ্গাপুর ও থাইল্যান্ডে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে। আহতদের মধ্যে তিনজন চিকিৎসা শেষে ফিরে এসেছেন।
এছাড়া বিশেষজ্ঞ কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী আহতদের মধ্যে যাদের উন্নত চিকিৎসা প্রয়োজন তাদের বিদেশে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলমান আছে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে জুলাই আন্দোলনে আহত ১৪ হাজারের অধিক ছাত্র-জনতাকে বাংলাদেশের বিভিন্ন হাসপাতালে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ছয়টি দেশ (থাইল্যান্ড, চীন, যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্স, যুক্তরাষ্ট্র, সিঙ্গাপুর) থেকে আগত বিদেশি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা হাজারের অধিক আহতকে চিকিৎসা সেবা দিয়েছেন এবং চিকিৎসা ব্যবস্থার মূল্যায়ন করেছেন। ক্ষেত্রবিশেষে তারা আন্দোলনে আহতদের সার্জারি করেছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৬১৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২০, ২০২৫
আরকেআর/এইচএ