ঢাকা, রবিবার, ১৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ভারত

কলকাতায় দাউদের রহস্যজনক মৃত্যু, উঠে আসছে নানা তথ্য

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৪১ ঘণ্টা, জুলাই ১১, ২০২৪
কলকাতায় দাউদের রহস্যজনক মৃত্যু, উঠে আসছে নানা তথ্য

কলকাতা: কলকাতার সায়েন্স সিটি সংলগ্ন একটি জলাশয়ে মো. দাউদ হোসেন উপল (২৩) নামে এক বাংলাদেশি যুবকের মরদেহ পাওয়া গেছে। লাশের ময়নাতদন্তের রিপোর্ট বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) বিকেলেই সামনে আসতে পারে।

এরপর জানা যাবে এটি হত্যা নাকি আত্মহত্যা বা কিভাবে তার মৃত্যু হয়েছে।

তবে এদিন সকাল থেকে বাংলানিউজের অনুসন্ধানে উঠে আসছে নানা তথ্য। যার কারণে দাউদের মৃত্যু আরও রহস্যজনক হয়ে উঠেছে।

জানা যায়, মারক্যুইস্ট্রিট সংলগ্ন কাওয়াই লেনের আফ্রিদি ইন্টারন্যাশনাল হোটেল উঠেছিলেন দাউদসহ চারজন। তারা একে অপরের বন্ধু বলেও হোটেল ম্যানেজার আতিককে পরিচয় দিয়েছিলেন। তাদের জন্য বরাদ্দ করা হয় হোটেলে ৪০২ এবং ৪০৪ নাম্বার রুম। দাউদ ছিল ৪০৪ নাম্বার রুমে। তার সঙ্গে একজন রুম শেয়ার করেছিল।

চারজন একসাথে রুম নিলেও কেউ একইদিনে হোটেল ছাড়েনি। ধাপে ধাপে হোটেল ছেড়েছিলেন তারা।

চারজনের মধ্যে রাশিদ মুবারত হোটেল ছাড়ে ৫ জুলাই। মো. সোহেল আল আফনান এবং ফিরদৌস হোসেন হোটেল ছাড়ে ৮ জুলাই। এবং সবশেষে ৯ জুলাই দুপুর ১২টা নাগাদ হোটেল ছাড়ে দাউদ হোসেন।  হোটেলের রেজিস্টার এমনই তথ্য উল্লেখ করা আছে।

ম্যানেজার আতিক বলেন, কোন ব্যাক্তি দাউদের সঙ্গে রুম শেয়ার করেছিল তা বলতে পারবো না। তবে চারজনের ব্যবহারে অস্বাভাবিক লাগেনি।

হোটেলের তথ্য মতে, ৯ জুলাই হঠাৎ দাউদ হোসেন হোটেল কর্তৃপক্ষকে জানায়, দেশে ফেরার জন্য সেদিনই দুপুরে তার বিমানের টিকিট করা আছে। রুম ছেড়ে দেবে। বেলা ১২টা নাগাদ লাগেজসহ ট্যাক্সি করে হোটেল থেকে রওনা দেয় দাউদ।

কিন্তু কেনো চারজন একসঙ্গে হোটেলে এলেও ধাপে ধাপে রুম ছাড়লো? এমন প্রশ্নে আতিক জানায়, সে প্রশ্ন তার মাথায় আসেনি। তাই বলতে পারবে না।

বুধবার (১০ জুলাই) দুপুরে কলকাতার সায়েন্স সিটি সংলগ্ন একটি জলাশয় থেকে দাউদ হোসেনের লাশ উদ্ধার করে প্রগতি ময়দান থানা। পাসপোর্টের তথ্য অনুযায়ী, তার ঠিকানা ঢাকার মোহাম্মদপুরের মসজিদ গলি রোডের ১৫/৮/এ বাড়ি।

নিউমার্কেট থেকে কী কারণে সায়েন্স সিটির দিকে গিয়েছিলেন ওই যুবক, তা এখনও পুলিশের কাছে স্পষ্ট নয়। কেন ঢাকা থেকে কলকাতায় এসেছিলেন, তাও এখনও জানতে পারেনি পুলিশ।

প্রাথমিকভাবে পুলিশের ধারণা, যুবকটি জলাশয়ে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। কারণ তাকে নাকি জলাশয়ে ঝাঁপ দিতে দেখেছেন স্থানীয়রা। পুলিশ জানায়, বুধবার সকাল ৯টার দিকে আচমকা জলাশয়ে ঝাঁপ দেন ওই যুবক। স্থানীয়রা সেই দৃশ্য দেখতে পান এবং পুলিশকে জানান। অথচ হোটেল জানাচ্ছে, সে ১২ টা নাগাদ হোটেল থেকে ট্যাক্সি করে বিমান বন্দরের দিকে রওনা দেয়।

তবে যেখান থেকে যুবকটির মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে, তা থানার ঠিক পেছনে এবং সেটা একটি ছোট্ট জলাশয়। খুব বেশি হলে কোমর পানির বেশি হতে পারে। সেখানে ঝাপ দিয়ে আত্মহত্যা করা সম্ভব নয় বলেও জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

স্থানীয়দের সাহায্যে গতকাল পুলিশ জলাশয় থেকে যুবককে উদ্ধার করে এবং তাকে শিয়ালদহ স্টেশন সংলগ্ন নীল রতন সরকার (এনআরএস) হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকেরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পানিতে ডুবেই ওই যুবকের মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ওই যুবকের কাছ থেকে কোনো সুইসাইড নোট পাওয়া যায়নি। ফলে হত্যা নাকি আত্মহত্যা খতিয়ে দেখছে কলকাতা পুলিশ।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৪১ ঘণ্টা,জুলাই ১১, ২০২৪
ভিএস/এমএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।