ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ভারত

মোদী-দিদির সেটিং দেখছেন বিক্ষুব্ধ চিকিৎসকরা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০১২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১১, ২০২৪
মোদী-দিদির সেটিং দেখছেন বিক্ষুব্ধ চিকিৎসকরা

কলকাতা: কলকাতায় নারী চিকিৎসককে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় মঙ্গলবার (১০ সেপ্টম্বর) আরো উত্তাল হয়ে উঠেছে পশ্চিমবঙ্গ। ভেঙে পড়ছে সরকারি হাসপাতালের পরিকাঠামো।

রাজ্য সরকারের দেওয়া তথ্য মতে, চিকিৎসকদের আন্দোলনের কারণে, গত এক মাসে পশ্চিমবঙ্গের মৃত্যু হয়েছে ২১ জনের। যা নিয়ে চরম অস্বস্তি বাড়ছে মমতার সরকারের। যদিও চিকিৎসকদের দাবি, এর চেয়ে বেশি মৃত্যু পশ্চিমবঙ্গে মুমুর্ষ রোগীদের হয়ে থাকে। এই সব মৃত্যূ তারই একটা অংশ। আন্দোলনের জন্য রোগীদের চিকিৎসায় কোনো গাফিলতি হচ্ছে না। আন্দোলন করছে কিছু জুনিয়র চিকিৎসক ও ইন্টার্ন, সিনিয়র চিকিৎসকরা নয়।  আন্দোলন থামানোর জন্য সরকারের এসব রটাচ্ছে।

সূত্র মরাফত জানা যাচ্ছে, সাতদিন সময় দেওয়া হবে সরকারকে, তারপরও চিকিৎসকদের দাবি মেনে না নেওয়া হয়, তাহলে গণহারে সরকারি হাসপাতাল থেকে চিকিৎসকরা রিজাইন করবে। যদিও তারা এখন ঘোষণা দেয়নি। তবে পরিস্থিতি যেদিকে যাচ্ছে তাতে সরকার যদি ডাক্তারদের দাবি না মানে, তাহলে স্বাস্থ্য পরিষেবা পুরোপুরি ভেঙে পড়তে আর বেশি সময় লাগবে না।  

সোমবার এই হত্যার তৃতীয় শুনানি ছিল। সুপ্রিম কোর্টেও এই রোগী মৃত্যুর কথা বলেছেন রাজ্যের আইনজীবী। তা শোনার পরই বিচারক পশ্চিমবঙ্গের জুনিয়র চিকিৎসকদের নির্দেশ দিয়েছেন মঙ্গলবার বিকেল পাঁচটার মধ্যে তাদের কাজে যোগ দিতে হবে। না হলে রাজ্য সরকার যথাযথ ব্যবস্থা নিতে পারে।

এরপরই সিনিয়র এবং জুনিয়র চিকিৎসকরা ক্ষোভে ফেটে পড়ে। তাদের দাবি, হত্যার বিচার পেতে সময় লাগতেই পারে। কিন্তু তারা নিরাপত্তার জন্য যে দাবি তুলেছিল সেগুলো নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত জানায়নি আদালত। তারা বলছেন, এখানে মোদি-দিদির সেটিং এর কারণে নানা পন্থায় চিকিৎসকদের উপর মিথ্যা অভিযোগ দেওয়া হচ্ছে।

জুনিয়র চিকিৎসকদের দাবি, পশ্চিমবঙ্গের প্রতিটি সরকারি হাসপাতালে সিসিটিভির ব্যবস্থা করা, হাসপাতালে অন্ধকার স্থান আলোকিত করা, নারী-পুরুষ চিকিৎসকদের বিশ্রামের আলাদা ব্যবস্থা, পৃথক শৌচাগার এবং রাত্রিকালীন ডিউটিতে নিরাপত্তা নিশ্চিত করাসহ একাধিক দাবি তুলেছেন ডাক্তাররা। যতদিন পশ্চিমবঙ্গের স্বাস্থ্যমন্ত্রী তথা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এসব মেনে না নিচ্ছেন ততদিন আন্দোলন চলবে।

কিন্তু গতকাল দেখা গেল আদালতে শুনানিতে এসব নিয়ে কোনো মন্তব্য করেননি বিচারক। বরং নির্দেশ দিয়েছিলেন, মঙ্গলবার বিকেল পাঁচটায় সকলকে কাজে ফিরতে হবে। না হলে রাজ্য প্রশাসন যথাযথ ব্যবস্থা নিতে পারে। গতকালের সেই সিদ্ধান্ত আসার পরে ক্ষোভে ফেটে পড়েন চিকিৎসকরা। তারা দাবি তোলে মোদির দিদির সেটিংস এর কারণে বিচারের নামে প্রহসন চলছে। পাশাপাশি, তারা জানিয়েছে শাসকদলের লোকেরা তাদের প্রতিনিয়ত হুমকি দিচ্ছে।

এরপরই মঙ্গলবার দুপুরে স্বাস্থ্য ভবন অভিযান করে কয়েক হাজার চিকিৎসক। তাদের অভিমত, যতক্ষণ না তাদের দাবি মেনে নেওয়া হচ্ছে ততক্ষণ আন্দোলন চলবে। এরপরই স্বাস্থ্য ভবনের তরফে জানানো হয়, তাদের কথা শুনতে পাঁচজন ভেতরে আসতে পারে।

চিকিৎসকদের দাবি, এক মাস হয়ে গেল একই কথা বলে আসছি, সরকারের পক্ষ থেকে হচ্ছে হবে করে সময় ক্ষেপণ চলেছে। কিন্তু চিকিৎসকদের বিশ্রাম রুম গুলোর বাইরে সিসিটিভি পর্যন্ত বসানো হয়নি। ফলে আর বিশ্বাস করা যাচ্ছে না। আর একটা চিকিৎসকের সঙ্গে এরকম  ঘটনা যেন না ঘটে; তাই যতদিন তাদের দাবি মানা না হবে, তারা ডিউটিতে জয়েন করবে না। এই সিদ্ধান্তে তারা স্বাস্থ্য ভবন বাইরে অবস্থান করছে।

বাংলাদেশ সময়: ১০১২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১১, ২০২৪
ভিএস/এমএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।