ঢাকা, সোমবার, ২২ বৈশাখ ১৪৩২, ০৫ মে ২০২৫, ০৭ জিলকদ ১৪৪৬

ভারত

শিলং পিক থেকে দেখা প্রাচ্যের স্কটল্যান্ড

মাজেদুল নয়ন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৪:২৬, জানুয়ারি ১২, ২০১৭
শিলং পিক থেকে দেখা প্রাচ্যের স্কটল্যান্ড শিলং, মেঘালয় শহর, ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

শিলং, মেঘালয় থেকে ফিরে: খাসি পাহাড়ের সৌন্দর্য আর পুরো শিলং শহরকে পাখির দৃষ্টিতে দেখতে হলে উঠতে হবে মেঘালয়ের সর্বোচ্চ চূড়ায়। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে সাড়ে ৬ হাজার ফুট উঁচুতে এই চূড়াকেই বলে শিলং পিক।

মেঘালয়ে ঘুরতে যাওয়া মানুষের সবচেয়ে পরিচিত স্থানের নাম শিলং শহরের পুলিশ বাজার। আর এখান থেকে প্রায় ১৬ কিলোমিটার দূরত্বেই শিলং পিক।

তবে পাহাড়ের আঁকাবাকা রাস্তায় গাড়ির গতি কিন্তু ঘণ্টায় ১০ থেকে ২০ কিলোমিটারের বেশি ওঠানো কঠিন। ফলে প্রায় এক ঘণ্টা সময় লেগে যায় চূড়ায় উঠতে।

গাড়িতে চড়ে শিলং পিকে ওঠা আর নামার পাহাড়ি পথের ধারেই নিজেদের জমির ফল বা সবজি নিয়ে বসেছেন স্থানীয়রা।

শিলং পিক ভারতীয় বিমানবাহিনীর একটি বেইজ। যেখানে একটি রাডার স্টেশন রয়েছে। ফলে চূড়া থেকে শহরের ছবি তোলার অনুমতি থাকলেও রাডারের দিকে ক্যামেরা ঘোরানো যাবে না। মূল চূড়ার এক কিলোমিটার আগেই সেনাবাহিনীর চেকপোস্ট। সেখানে যেতে হলে ভারতীয় নাগরিক বা ভিনদেশি যেই হোক না কেন, তার পরিচয়পত্র বা পাসপোর্ট জমা দিয়ে প্রবেশ করতে হবে।
শিলং, মেঘালয় শহর, ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

শিলং, মেঘালয় শহর, ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

এরপর একেবারে চূড়ায়। দুটো ওয়াচটাওয়ার থেকে আরও সুন্দর আর ইউনিক দেখা যায় রুপসী শহর শিলংকে। একটি টাওয়ার থেকে ২৭০ ডিগ্রি কোণে দেখা যায় শহর। টাওয়ারে দাঁড়িয়ে ছবি তোলার প্রতিযোগিতায় নামেন পর্যটকরা। আরেকটি টাওয়ারে রয়েছে টেলিস্কোপ। ৫০ রুপি দিয়েই টেলিস্কোপে পুরো শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলো দেখে নেওয়া যায়।

খাসিয়া পাহাড় বেয়েই গড়ে উঠেছে শিলং শহর। পাহাড় ঘেরা উপত্যকায় ইট-পাথরের দালান বেশি। সেখানে বাড়িঘরগুলোকে ছোট খেলনার মতোই দেখায়। আর সন্ধ্যার পর চূড়া থেকে দেখা যায় শিলং শহরের বাসিন্দাদের ঘরে জ্বলা বাতিগুলো যেন পাহাড়ের কোলে জ্বলছে। যেন রাতের আকাশ পাহাড়ের গায়ে লেপ্টে পড়েছে।

মেঘালয় ও পূর্ব খাসি পার্বত্য জেলার রাজধানী এই শিলং, যাকে বলা হয় হিল স্টেশন। মেঘের বাসা বলেও ডাকা হয় শিলংকে। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৫০০০ ফুট উচ্চতায় এই শহর।

এই উপমহাদেশে ইংরেজ উপনিবেশকালীন সময় শিলংয়ের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ইউরোপের লোকেরা এসে বাস করতে শুরু করে, বিশেষত স্কটল্যান্ডের নাগরিকরা। তখন থেকেই এই শহরকে ‘প্রাচ্যের স্কটল্যান্ড’ হিসেবেও অবহিত করা হয়।
শিলং, মেঘালয় শহর, ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

শিলং, মেঘালয় শহর, ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

শিলং পিকে গাড়ি রাখার যে স্থানটুকু রয়েছে, সেখানে হেঁটে বেড়ানো যায়। রয়েছে কয়েকটি দোকান, যেখানে পাহাড়ে চাষ হওয়া কলা, পেঁপে, আনারস ছাড়াও চা, বিস্কুট, চিপসসহ বিভিন্ন ধরনের শুকনো খাবার কেনা যাবে।  

দুই তলার একটি ভবনে তিনটি দোকান রয়েছে। যেখানে খাসিয়া রাজ্যের স্যুভিনিয়র পাওয়া যাবে। এছাড়াও খাসিয়াদের ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরে ছবিও তোলা যায়।

বাংলাদেশ সময়: ১০২০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১১, ২০১৭
এমএন/আইএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।