ঢাকা, বুধবার, ৩০ বৈশাখ ১৪৩২, ১৪ মে ২০২৫, ১৬ জিলকদ ১৪৪৬

তথ্যপ্রযুক্তি

মস্তিষ্ক দিয়ে তাদের আইফোন নিয়ন্ত্রণের প্রযুক্তি পরীক্ষা করছে অ্যাপল 

আন্তজার্তিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩:০৭, মে ১৩, ২০২৫
মস্তিষ্ক দিয়ে তাদের আইফোন নিয়ন্ত্রণের প্রযুক্তি পরীক্ষা করছে অ্যাপল 

বিশ্বখ্যাত প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান অ্যাপল এবার এমন একটি প্রযুক্তি পরীক্ষা করছে যা ব্যবহারকারীদের মস্তিষ্কের সিগন্যালের মাধ্যমে আইফোন নিয়ন্ত্রণের সুযোগ করে দেবে। এটি অনেকটা এলন মাস্কের নিউরলিংক-এর মতো প্রযুক্তি।

ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই উদ্ভাবনী প্রযুক্তি অ্যাপল ডিভাইসগুলোকে এমনভাবে প্রস্তুত করবে যাতে ব্যবহারকারীর কোনো শারীরিক নড়াচড়া ছাড়াই, মস্তিষ্ক থেকে পাঠানো সিগন্যাল পড়ে কমান্ড বুঝে নিতে পারে।

কারা উপকৃত হবেন এই প্রযুক্তি থেকে?
এই প্রযুক্তির মূল লক্ষ্য হলো এমনসব মানুষদের সহায়তা করা যারা মেরুদণ্ডের গুরুতর ক্ষতি বা এএলএস (অ্যামিওট্রফিক ল্যাটেরাল স্কেলারোসিস)-এর মতো রোগে আক্রান্ত হয়ে হাত ব্যবহার করতে পারেন না। নিউরালিংক ও অন্যান্য সংস্থার মস্তিষ্কে স্থাপনযোগ্য ডিভাইস এফডিএ (মার্কিন ওষুধ প্রশাসন) অনুমোদন পাওয়ার পর অ্যাপলও এই প্রযুক্তি উন্নয়নের দিকে এগিয়ে আসে।

অ্যাপল কিভাবে এটি বাস্তবায়ন করছে?
অ্যাপল এই প্রযুক্তির বিকাশে সিনক্রোন নামের একটি স্টার্টআপের সঙ্গে কাজ করছে। সিনক্রোন তৈরি করেছে ‘স্টেনট্রড’ নামের একটি স্টেন্টের মতো ডিভাইস, যেটি মস্তিষ্কের মোটর কর্টেক্সের উপরের একটি শিরায় স্থাপন করা হয়।

এই ডিভাইসটি মস্তিষ্কের সিগন্যাল সংগ্রহ করে স্ক্রিনে আইকন নির্বাচন বা বিভিন্ন ইন্টারফেস নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে।

২০১৪ সালে অ্যাপল যেভাবে হিয়ারিং এইডের জন্য আইফোন-এর সঙ্গে কাজ করার একটি প্রযুক্তি স্ট্যান্ডার্ড চালু করেছিল, ঠিক তেমনি এবারও তারা একটি নতুন ব্রেন-কম্পিউটার ইন্টারফেস স্ট্যান্ডার্ড নিয়ে কাজ করছে, যা ২০২৫ সালের মধ্যেই উন্মোচনের পরিকল্পনা রয়েছে।

মার্ক জ্যাকসন একজন এএলএস রোগী যিনি সিনক্রোন-এর স্টেনট্রড ইমপ্লান্ট ব্যবহার করে অ্যাপল ভিশন প্রো হেডসেট দিয়ে ভার্চুয়াল রিয়েলিটিতে সুইস আল্পসের পাহাড়ি পথ ধরে হাঁটার অভিজ্ঞতা নিয়েছেন।

যদিও তিনি শারীরিকভাবে হাঁটতে বা চলাফেরা করতে পারেন না, তবুও স্টেনট্রড-এর ১৬টি ইলেকট্রোড এবং অ্যাপলের ‘সুইস কন্ট্রোল’ ফিচার ব্যবহার করে তিনি এখন ধীরে ধীরে আইফোন, আইপেড এবং ভিশন প্রো নিয়ন্ত্রণ শিখছেন।

তবে তিনি সতর্ক করে বলেন, এই প্রযুক্তি এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে, এবং এটি ব্যবহার করে স্ক্রিনে নেভিগেশন এখনো টাচস্ক্রিন বা মাউসের চেয়ে অনেক ধীরগতির।

নিউরালিংকের এনওয়ান ইমপ্লান্টে ১,০০০টির বেশি ইলেকট্রোড থাকে, যা মস্তিষ্কের ভেতরে স্থাপন করা হয় এবং আরও দ্রুত চিন্তা-নির্ভর কার্সর নিয়ন্ত্রণ সম্ভব করে। অপরদিকে, সিনক্রন এখন পর্যন্ত ১০ জন রোগীর শরীরে স্টেনট্রড ইমপ্লান্ট করেছে।

মরগান স্টানলে-এর একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রে আনুমানিক ১.৫ লাখ মানুষ যারা গুরুতর হাতে নাড়াচাড়া করতে না পারা সমস্যায় ভুগছেন, তারা এই প্রযুক্তি থেকে সরাসরি উপকৃত হতে পারেন।

যদিও বিশ্লেষকরা বলছেন বাণিজ্যিক অনুমোদন ২০৩০ সালের দিকে আসতে পারে, সিনক্রোন-এর সিইও টম অক্সলে আশাবাদী যে তারা এর আগেই নিয়ন্ত্রক বাধা অতিক্রম করতে সক্ষম হবেন।

এমএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

তথ্যপ্রযুক্তি এর সর্বশেষ