ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

গাজায় নারী-শিশু হত্যা বন্ধের আহ্বান ম্যাক্রোঁর

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৩৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ১১, ২০২৩
গাজায় নারী-শিশু হত্যা বন্ধের আহ্বান ম্যাক্রোঁর এলিসি প্রাসাদে বিবিসিকে সাক্ষাৎকার দেন ম্যাক্রোঁ। ছবি: বিবিসি

ফিলিস্তিনের গাজায় নারী ও শিশুদের হত্যা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেন।

এলিসি প্রাসাদে বসে দেওয়া ওই সাক্ষাৎকারে ম্যাক্রোঁ বলেছেন, ইসরায়েলকে গাজায় শিশু ও নারী হত্যা বন্ধ করতে হবে। বোমা হামলার কোনো যুক্তি নেই, যুদ্ধবিরতি হলে বরং ইসরায়েলের উপকার হবে।

শনিবার (১১ নভেম্বর) বিবিসি এক প্রতিবেদনে ফরাসী প্রেসিডেন্টের সাক্ষাৎকারটি তুলে ধরে। ম্যাক্রোঁ সাক্ষাৎকারে আরও বলেছেন, যদিও এখন ইসরায়েলের আত্মরক্ষার অধিকারকে স্বীকৃতি দেওয়ার সময়। তবে আমরা গাজায় তাদের অনবরত বোমা হামলা বন্ধের আহ্বান জানাই।

ইসরায়েল, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এবং অন্যান্য পশ্চিমা দেশগুলোর মতো ফ্রান্সও হামাসকে একটি সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে বিবেচনা করে। তাই ম্যাক্রোঁ ইসরায়েলে চালানো হামাসের হামলাকে ‘সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড’ ও তার দেশ এ ঘটনায় ‘স্পষ্ট নিন্দা’ জানায় বলে উল্লেখ করেন।

গাজায় যুদ্ধ বন্ধে তার এ আহ্বানে যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্যসহ অন্যান্য নেতারা যুক্ত হবেন কিনা, ম্যাক্রোঁকে প্রশ্ন করে বিবিসি। উত্তরে তিনি বলেন, আশা করি তারা করবে।

এর আগে শুক্রবার ‘গাজায় যুদ্ধ সম্পর্কে’ প্যারিসে একটি মানবিক সহায়তা সম্মেলনে যোগ দেন ফরাসী প্রেসিডেন্ট। সেখানে তিনি বক্তৃতা দেওয়া সময় বলেছিলেন, আমি মনে করি প্রত্যেকটি সরকার ও সংস্থার একটাই ‘স্পষ্ট উপসংহার’; আর তা হলো যুদ্ধবিরতি। মানবিক বিরাম ছাড়া অন্য কোনো সমাধান নেই। এটি মানুষ রক্ষার একটি প্রয়াস। বেসামরিক নাগরিকদের সঙ্গে সন্ত্রাসীদের কোনো সম্পর্ক নেই।

তিনি বলেন, ডি ফ্যাক্টোর মাধ্যমে বেসামরিক লোকদের ওপর বোমা হামলা করা হচ্ছে। এই শিশুরা, নারীরা, বৃদ্ধদের বোমা মেরে হত্যা করা হয়েছে।   এর কোনো কারণ নেই এবং কোনো বৈধতা নেই। তাই আমরা ইসরায়েলকে থামতে অনুরোধ করছি।

এদিকে অভিযানের ব্যাপারে ইসরায়েলের দাবি, তারা আন্তর্জাতিক আইনের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে হামলা করে। বেসামরিক হতাহতের সংখ্যা কমাতে পদক্ষেপ নেয়। এ ক্ষেত্রে তারা হামলার আগে সতর্কতা জারি ও লোকজনকে সরে যাওয়ার আহ্বান জানায়।

আন্তর্জাতিক এ আইন নিয়ে ইসরায়েলের দাবি সম্পর্কে প্রশ্ন করা হয় ম্যাক্রোঁকে। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক আইন ভঙ্গ হয়েছে কিনা সেটি বিচার করার দায়িত্ব আমার নয়।

ফরাসী প্রেসিডেন্টের এমন মন্তব্যের দ্রুত প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। তিনি বলেন, দেশগুলোর উচিত হামাসকে নিন্দা করা, ইসরাইলকে নয়।

তার কার্যালয় থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, আজ গাজায় হামাস যে অপরাধ করছে তা আগামীকাল প্যারিস, নিউইয়র্ক এবং বিশ্বের যেকোনো স্থানে সংঘটিত হবে।

গত ৭ অক্টোবর হামাস ইসরায়েলে হামলা করার পর এক পাক্ষিক যুদ্ধ চলেছেই। ইসরায়েল কোনো বিরতী ছাড়াই হামাসকে গুড়িয়ে দেওয়ার কথা বলে গাজায় আগ্রাসন চালাচ্ছে। প্রতিদিন বিমান ও বোমা হামলা চালানো হচ্ছে গাজায়। আকাশ ও স্থল আগ্রাসনে ফিলিস্তিনের উপত্যকাটি প্রায় ধ্বংস হয়ে গেছে। গাজার হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় শুক্রবার বলেছে, ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত তাদের নিহতের সংখ্যা ১১ হাজার ৭৮ জন। বাড়ি ঘর ছেড়ে গেছে অন্তত দেড় লাখ মানুষ।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ১১, ২০২৩
এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।