লোহিত সাগরে আবারও যুদ্ধংদেহী রূপে হাজির হতে চায় ইয়েমেনের হুথি গোষ্ঠী। ৮ মার্চ তাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে পোস্ট করা একটি ভিডিওতে তারা ইসরায়েল ও দেশটির সাথে সংশ্লিষ্টদের নৌযানের বিরুদ্ধে নৌ অভিযান আবারও শুরু করার হুঁশিয়ারি দিয়েছে।
৯ মার্চ হুথিরা দ্বিতীয় আরেকটি ভিডিও পোস্ট করেছে। গত দুই বছরে লোহিত সাগর ব্যবহারকারী ইসরায়েল সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের ওপর হুথিদের হামলার চিত্র ওই ভিডিওতে তুলে ধরা হয়েছে। সেসব ভিডিওচিত্রের মধ্যে রয়েছে ‘গ্যালাক্সি লিডার’ জাহাজ ছিনতাই এবং ওই অঞ্চল দিয়ে চলাচলকারী জাহাজগুলোতে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা।
হঠাৎ কেন হুথিরা আবারও লোহিত সাগরে অবরোধ আরোপ করতে চাইছে? এর আগে গোষ্ঠীটি গাজার প্রতিরোধ গোষ্ঠী হামাসের সমর্থনে ওই অবরোধ শুরু করেছিল। গাজায় ইসরায়েলের চালানো গণহত্যা আর অবরোধের প্রতিবাদে লোহিত সাগর দিয়ে চলাচল করা ইসরায়েলের ও দেশটির মিত্রদের বাণিজ্যিক জাহাজ চলাচলকে লক্ষ্য করে হুথিরা আক্রমণ করেছিল।
সাম্প্রতিক পরিস্থিতি হলো, এক সপ্তাহ আগে গাজায় সমস্ত ত্রাণ সরবরাহ ইসরায়েল বন্ধ করে দিয়েছে। ৯ মার্চ জায়নবাদীরা স্থানটিতে বিদ্যুৎ সরবরাহও বন্ধ করে দেয়। এমন সব অত্যাচারের বিরুদ্ধেই হুথিদের এই তীব্র প্রতিক্রিয়া।
জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ-এর কমিশনার-জেনারেল ফিলিপ লাজারিনি সতর্ক করে বলেছেন, গাজার পরিস্থিতি খুব দ্রুত অবনতি হচ্ছে।
১০ মার্চ জেনেভায় জাতিসংঘের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, উদ্দেশ্য যাই হোক না কেন, ইসরায়েলের এমন আচরণ স্পষ্টতই গাজায় মানবিক সাহায্যকে অস্ত্র হিসেবে প্রয়োগ।
লাজ্জারিনি সতর্ক করে আরও বলেছেন, ইউএনআরডব্লিউএ’র কার্যক্রমকে সঙ্কুচিত হতে দেওয়া যাবে না। সংস্থাটি ভেঙে পড়লে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে বিপজ্জনক শূন্যতা তৈরি হবে। তার ধাক্কা জর্ডান, লেবানন এবং সিরিয়াজুড়ে লাগবে বলে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন।
যে পরিবেশে শিশুরা শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হয় এবং মানুষ মৌলিক অধিকার পায় না, সেই পরিবেশ শোষণ এবং চরমপন্থার উর্বর ভূমি। এতে ওই অঞ্চল এবং আশপাশের অঞ্চলের শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি ডেকে আনবে বলে আশঙ্কা লাজারিনির।
গত ১৯ জানুয়ারি ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি হওয়ার পর হুথিরা দক্ষিণ লোহিত সাগর এবং এডেন উপসাগরে তাদের আক্রমণ বন্ধ করে দেয়। এর ফলে ওই জলপথ দিয়ে বাণিজ্যিক জাহাজ চলাচলের ওপর ১৪ মাসের অচলাবস্থার অবসান ঘটে। ওই সময়জুড়ে জাহাজগুলোকে ভারত মহাসাগর থেকে ইউরোপের দিকে যাওয়ার জন্য প্রায় পুরো আফ্রিকা উপকূল ঘুরে যাওয়ার দীর্ঘ পথ ব্যবহার করতে হয়েছে। কিন্তু যুদ্ধবিরতির দুর্বল প্রকৃতির কারণে অনেক জাহাজ এখনো লোহিত সাগর এবং সুয়েজ খাল এড়িয়ে চলছে।
বাংলাদেশ সময়: ২১২১ ঘণ্টা, মার্চ ১১, ২০২৫
এমএইচ/এমজেএফ