গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বিমান বাহিনীর টানা অভিযানে একদিনে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৪৩ জন ফিলিস্তিনি। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় এই প্রাণহানির ঘটনা ঘটে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো।
২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে গাজায় পূর্ণমাত্রার অভিযান শুরু করে ইসরায়েল ডিফেন্স ফোর্স (আইডিএফ)। শুক্রবারের সর্বশেষ হামলার পর থেকে এখন পর্যন্ত দেড় বছরে মোট ৫২ হাজার ৪১৮ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং আহতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ১ লাখ ১৮ হাজার ৯১ জনে। হতাহতদের মধ্যে নারী ও শিশুর সংখ্যা প্রায় ৫৬ শতাংশ।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের যোদ্ধারা ইসরায়েলের ভেতরে ঢুকে আকস্মিক হামলা চালায়। এলোপাতাড়ি গুলিতে নিহত হন প্রায় ১ হাজার ২০০ জন, আর ২৫১ জনকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে যায় তারা।
এই ঘটনার পরপরই গাজায় সামরিক অভিযান শুরু করে আইডিএফ। টানা ১৫ মাসের অভিযান শেষে আন্তর্জাতিক চাপে ২০২৪ সালের ১৯ জানুয়ারি একতরফাভাবে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করে ইসরায়েল। তবে বন্দি বিনিময় ও জিম্মিদের মুক্তির বিষয়ে মতপার্থক্যের কারণে যুদ্ধবিরতি টিকতে পারেনি। গত ১৮ মার্চ থেকে ফের সামরিক অভিযান শুরু করে ইসরায়েল।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, দ্বিতীয় দফার অভিযানে দেড় মাসের মধ্যে নিহত হয়েছেন আরও ২ হাজার ৩০০ জনের বেশি এবং আহত হয়েছেন প্রায় ৬ হাজার ফিলিস্তিনি।
হামাসের হাতে নেওয়া ২৫১ জন জিম্মির মধ্যে এখনও প্রায় ৩৫ জন জীবিত আছেন বলে ধারণা করছে আইডিএফ। তাদের উদ্ধারে সামরিক অভিযান অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছে তারা।
এদিকে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক মহল বারবার গাজায় হামলা বন্ধের আহ্বান জানালেও তাতে কান দিচ্ছে না ইসরায়েল। ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
তবে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু স্পষ্ট জানিয়েছেন, হামাসকে সম্পূর্ণরূপে নিষ্ক্রিয় না করা এবং সকল জিম্মিকে মুক্ত না করা পর্যন্ত এই অভিযান চলবে।
সূত্র: আলজাজিরা
এমজে