এই গুহায় আত্মগোপনের সেই সঙ্কটময় সময়েও নবী করিম (সা.) ছিলেন আল্লাহর সাহায্যের ওপর পূর্ণ আস্থাশীল ও দুশ্চিন্তাহীন। কোরআনে কারিমে এ প্রসঙ্গে উল্লেখ আছে যে, ‘যদি তোমরা তাকে (নবী মুহাম্মদকে) সাহায্য না করো, তবে মনে রেখো, তাকে কাফেররা (মক্কা থেকে) বহিষ্কার করেছিল।
সাওর পাহাড়টি মক্কার দক্ষিণে কুদাই মহল্লার অন্তগত বর্তমানে পরিকল্পিত আল হিজরা এলাকায় অবস্থিত। এই পাহাড়ের উপর থেকে সমুদ্র দেখা যায়।
স্থানটি মসজিদে হারাম থেকে প্রায় ৪ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। সাওর পর্বতের উচ্চতা ৪৫৮ মিটার। পর্বতটির মোট আয়তন ১০ বর্গমিটার।
এ গুহার মধ্যেই হযরত রাসূলুল্লাহ (সা.) ও হযরত আবু বকর সিদ্দিক (রা.) মদিনা মোনাওয়ারায় হিজরত করার সময় ৩ দিন আত্মগোপন করেছিলেন। এ গুহার সামনে এবং পেছনে একটি করে প্রবেশ দ্বার রয়েছে। গুহাটির প্রশস্ততা ২ বর্গ মিটার।

তবে এ পর্বতের ফজিলত সম্পর্কে বিশুদ্ধ কোনো হাদিস বা কোনো সাহাবির কোনো মন্তব্য নেই। তার পরও হজপালন করতে আসা মানুষ এ পর্বত দেখার দেখার জন্য উদগ্রীব থাকেন এবং তা দেখতে যান। হাজিদের দর্শনীয় স্থানের তালিকায় এ পর্বতের নাম থাকবেই। দর্শনার্থীদের অনেকেই সাওর পাহাড়ে দলবেধে ওঠেন, কেউ নিচে থেকেই দেখেন।
অনেকে সাওর পর্বতের যে গুহায় নবী করিম (সা.) লুকিয়েছিলেন, সেখানে উঠে নামাজ পড়েন, দোয়া করেন, গুহায় মনের বাসনা লিখে রাখেন, সেখানকার পাথর ও মাটিকে বরকতময় মনে করে তা নিয়ে আসেন। যদিও এসব কাজের কোনো ভিত্তি ইসলামি শরিয়তে নেই।

সাওর পাহাড়ে ওঠা খুব কষ্টসাধ্য। সওয়াবের নিয়তে ওঠাকে আলেমরা নিরুৎসাহিত করেন। অনেকে এখানে উঠাকে বেদআতও বলেছেন। তবে নবী করিম (সা.) দ্বীনের জন্য কত কষ্ট করেছিলেন তা উপলব্ধির জন্য উঠতে পারেন। কিন্তু সুঠাম দেহের অধিকারী না হলে এখানে না উঠাই ভালো। পাহাড়টি নিচ থেকে দেখাই উত্তম।
পাহাড়ের পাদদেশে সৌদি সরকারের ‘সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজে নিষেধ’ বিভাগের একটি অফিস রয়েছে। ওই অফিসে বিভিন্ন ভাষায় সাওর পাহাড়ের পরিচিতিমূলক বর্ণনা দেওয়া হয়। বিতরণ করা হয় বিভিন্ন বই, কোরআনের সিডি। এছাড়া এখানে দর্শনার্থীদের পানি পানেরও সুব্যবস্থা রয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১০০৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৯, ২০১৭
এমএইউ/এসএইচ