ঢাকা, বুধবার, ১০ বৈশাখ ১৪৩২, ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ২৪ শাওয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

আপিল বিভাগ

ড. ইউনূসের নামে দুদকের মামলা বাতিল

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৪৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৩, ২০২৫
ড. ইউনূসের নামে  দুদকের মামলা বাতিল

ঢাকা: নোবেলজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নামে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের মামলা বাতিল করে রায় দিয়েছেন আপিল বিভাগ।

ড. মুহাম্মদ ইউনূসের আপিল মঞ্জুর করে বুধবার (২৩ এপ্রিল) এ সিদ্ধান্ত দেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে আপিল বিভাগ।

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী আসিফ হাসান জানান, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের আপিল মঞ্জুর করেছেন আদালত। ফলে মামলাটি বাতিল হয়ে গেল। অর্থাৎ মামলাটি আর থাকলো না।

তিনি আরও জানান, এখানে টাকা আত্মসাৎ হয়নি। টাকা পুরোটাই দিয়ে দিয়েছেন। সেখানে কে কম পেয়েছে বা বেশি পেয়েছে। তার সামন্য অংশ নিয়ে ডিসপিউট। সেটা সিভিল কোর্টে হয়। ফৌজদারি কোর্টে নয়। তাই এ মামলা চলতে পারে না।

এর আগে অভিযোগ গঠনের বৈধতা এবং মামলার কার্যধারা বাতিল চেয়ে আবেদন খারিজ করে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের ওপর শুনানি শেষে গত ১৯ মার্চ আপিল বিভাগ রায়ের জন্য ২৩ এপ্রিল দিন ঠিক করেছিলেন।

আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ব্যারিস্টার আব্দুল্লাহ আল মামুন।  রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান।  দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আসিফ হাসান।

এর আগে ২০২৪ সালের ২১ অক্টোবর আপিলের অনুমতি দিয়েছিলেন আপিল বিভাগ।

দুদকের উপ-পরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান বাদী হয়ে ২০২৩ সালের ৩০ মে মামলাটি দায়ের করেন।  তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, আসামিরা ২৫ কোটি ২২ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন।  অবৈধভাবে অর্থ স্থানান্তর করা হয়েছে, যা মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে অপরাধ।

গত বছরের ১২ জুন ওই মামলায় অধ্যাপক ইউনূসসহ ১৪ জনের নামে অভিযোগ গঠন করেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক সৈয়দ আরাফাত হোসেন।  এ অবস্থায় অভিযোগ গঠনের বৈধতা নিয়ে মামলার কার্যক্রম বাতিল চেয়ে অধ্যাপক ইউনূসসহ সাতজন হাইকোর্টে আবেদন করেন।

আবেদনের ওপর গত বছরের ১১ জুলাই শুনানি শেষ হয়।  পরে গত ২৪ জুলাই বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী ইবাদত হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ আবেদন খারিজ করে আদেশ দেন।  এরপর আপিল বিভাগে আবেদন করেন অধ্যাপক ইউনূস।

আইনজীবী ব্যারিস্টার আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, অভিযোগ গঠনের বিরুদ্ধে আমরা হাইকোর্টে গেলাম।  হাইকোর্ট বাতিল আবেদন খারিজ করে দিলেন।  পরে আপিল বিভাগে গেলাম।  আপিল বিভাগ বললেন, এ মামলা চলে না।  কারণ মামলাটি প্রত্যাহার (১১ আগস্ট দুদক মামলা প্রত্যাহারে আবেদন দেন) করা হয়েছে।  আমরা বললাম, না, মামলা প্রত্যাহার হয়নি।  কারণ এটি অবৈধ।  তিনি (অধ্যাপক ইউনূস) ৮ আগস্ট ক্ষমতায় আসেন।  ১১ আগস্ট কোনো নোটিশ ছাড়া, বিনা কারণে মামলা বাদ দিলেন।

তিনি বলেন, এটি বাদ দেওয়ার কোনো ক্ষমতা নেই, আমরা তা আদালতকে বোঝাতে সক্ষম হলাম।  পরে আবেদনের শুনানিতে বললাম, অধ্যাপক ইউনূসের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ নেই।  শ্রমিকের টাকা শ্রমিকের অ্যাকাউন্টে বিতরণ হয়েছে।  এটি তো কোম্পানির টাকা নয়।  এখানে তাকে মিথ্যাভাবে হয়রানির জন্য, অপমান করার জন্য মামলাটা করা হয়েছে।

‘আর অধ্যাপক ইউনূসও বলেছেন- প্রধান উপদেষ্টা হওয়ার পরপরই মামলাটা প্রত্যাহার হয়ে গেল! আমার আইনজীবীও জানে না, প্রতিষ্ঠানও জানে না।  আমি আইনিভাবে মোকাবিলা করব।  যদি দোষী প্রমাণিত হই, তাহলে সাজা মেনে নেব।  আইনের মাধ্যমে সমাধান করব’- উল্লেখ করেন আইনজীবী আব্দুল্লাহ আল মামুন।

বাংলাদেশ সময়: ০৯৪৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৩, ২০২৫
ইএস/এসএএইচ/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।