ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

লঞ্চঘাটে যাতায়াতের সড়ক সংস্কার না হওয়ায় দুর্ভোগ

মুহাম্মদ মাসুদ আলম, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৫৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৪, ২০২৩
লঞ্চঘাটে যাতায়াতের সড়ক সংস্কার না হওয়ায় দুর্ভোগ

চাঁদপুর: চাঁদপুর সদর উপজেলার মেঘনা উপকূলীয় ইউনিয়ন বিষ্ণুপুরের লঞ্চঘাটে যাতায়াতের সড়কটি গত এক দশকেও সংস্কার হয়নি। ফলে দুর্ভোগ নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে ঢাকা-চাঁদপুর-নারায়ণগঞ্জ থেকে লঞ্চে আসা যাত্রী, স্থানীয় শিক্ষার্থী ও হাজার হাজার বাসিন্দাদের।

 

যানবাহন চলাচল করতেও খুবই কষ্ট হয়। প্রায় সময় অটোরিকশা উল্টে যাত্রীরা আহত হন। সংস্কার কাজ একবার শুরু করা হলেও ঠিকাদার এখন লাপাত্তা। সব এলাকায় উন্নয়ন হলেও এই লঞ্চঘাটের ব্রিজ, সড়ক ও ঘাটে কোনো ধরনের উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন স্থানীয়রা।

সরেজমিনে দেখা গেছে, চাঁদপুর জেলা সদর থেকে ইউনিয়ন সড়কটি চলাচলে খুবই আরামদায়ক। কিন্তু ইউনিয়নের ভেতরের অনেক সড়কই এখনও কাঁচা মাটির এবং ভাঙা। এর মধ্যে অন্যতম ও গুরুত্বপূর্ণ সড়ক হচ্ছে কানুদী লঞ্চঘাট সড়ক। এই সড়কটি ইউনিয়নের মূল সড়কের জয়নাল হাজারার মসজিদ থেকে শুরু করে লঞ্চঘাট কানুদী মনোহরখাদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যন্ত খুবই করুন অবস্থা। অটোরিকশা, রিকশা, মোটরবাইক নিয়ে চলাচল করা খুবই কষ্ট কর। সড়কের বিভিন্ন স্থানে গর্ত এবং মাটি সরে যাওয়ায় মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। হেঁটে যেতেও হোঁচট খেতে হয়। বিশেষ করে আমিরাবাদ জি কে উচ্চ বিদ্যালয় ও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের খুবই কষ্ট করে এই সড়ক দিয়ে চলাচল করতে হয়। বৃষ্টির মৌসুমে দুর্ভোগের শেষ থাকে না।

কানুদী গ্রামের বাসিন্দা শাকিল বেপারী বাংলানিউজকে বলেন, সড়কের অবস্থা বর্ণনা করার মত না। যে কারণে লঞ্চঘাট দিয়ে কোনো যাত্রী আসতে চায় না। এরপর সড়কের সঙ্গের ব্রিজটিও ভাঙা। বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের খুবই কষ্ট হয়।

অটোরিকশাচালক রুবেল বলেন, আমাদের সড়কটি ভালো না থাকায় যাত্রী পাওয়া যায় না। যে কারণে আমাদের রোজগারও কম। সড়কটি সংস্কার করা খুবই প্রয়োজন।

স্থানীয় বাসিন্দা রহিম খান বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের এই সড়ক সংস্কারের জন্য ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও মেম্বার সবাইকে বার বার বলা হয়েছে। কিন্তু সংস্কার করেনি। চেয়ারম্যানকে জানালে তিনি বলেন বরাদ্দ নেই। কিভাবে কাজ হবে। অন্য ইউনিয়নে উন্নয়ন কাজ হলেও আমাদের ইউনিয়নটি অবহেলিত। সরকার তো সব সময় উন্নয়নের কথা বলে, আমাদের এলাকার উন্নয়ন কবে হবে।

সোলাইমান নামে এক ব্যবসায়ী বাংলানিউজকে বলেন, এই ঘাট দিয়ে কয়েকটি ইউনিয়নের হাজার হাজার মানুষ যাতায়াত করত। কিন্তু সড়কটি সংস্কার হয়নি। ঘাটের পাশের ব্রিজ ভাঙা। মানুষের দুর্ভোগের শেষ নেই। বর্ষা মৌসুম এলে দুর্ভোগ আরও বাড়ে। ভোটের পরে চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের কাছে আমাদের কোনো গুরুত্ব নেই।

বিষ্ণুপুর ইউনিয়ন পরিষদ সচিব সালামত উল্যাহ খান শাহীন বাংলানিউজকে বলেন, এই সড়কটি সংস্কার করার জন্য টেন্ডার হয়েছিল। চাঁদপুর শহরের পুরান বাজার এলাকার রনি নামে একজন ঠিকাদার এই সড়কটি সংস্কার করার জন্য সরঞ্জাম এনেছিলেন। সড়কটি সংস্কার করার জন্য আমরা উপজেলার মাসিক সভায় উপস্থাপন করেছি। খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছি সড়কের জন্য যে নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার হবে, তার মূল্য বেড়ে যাওয়ায় ঠিকাদার কাজটি করেননি।

স্থানীয় ইউপি সদস্য আলমগীর পাটওয়ারী বলেন, ১০ বছর আগে এই সড়কটি পাকা হয়। কিন্তু এরপর আর সংস্কার হয়নি। গত বছর ঠিকাদার কাজ শুরু করলেও পরে বন্ধ হয়ে যায়। উপজেলা পরিষদ ও প্রশাসন ব্যবস্থা নিলে কাজটি করা সম্ভব।

এলজিইডি চাঁদপুর সদর উপজেলার প্রকৌশলী স্নেহাল রায় জানান, কানুদি লঞ্চঘাটের সড়কটি খুবই নাজুক। আমি বিষয়টি জানি। ঠিকাদার কাজ শুরু করেও বন্ধ করে দিয়েছে। তার বাড়ি লক্ষ্মীপুর জেলার রায়পুরে। আমরা তাকে কয়েকবার কাজটি করার জন্য বলেছি। সে যেহেতু কাজ করেনি, তার বিরুদ্ধে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেব।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৪, ২০২৩
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।