ঢাকা, রবিবার, ১৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

১৮ বছর পর গ্রন্থাগারে রফিকের ব্যবহৃত চেয়ার-টেবিল লুঙ্গি-ফতুয়া

সাজিদুর রহমান রাসেল, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৩৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২১, ২০২৩
১৮ বছর পর গ্রন্থাগারে রফিকের ব্যবহৃত চেয়ার-টেবিল লুঙ্গি-ফতুয়া

মানিকগঞ্জ: ভাষা আন্দোলনের প্রথম শহীদ রফিক উদ্দিন স্মৃতি গ্রন্থাগারে ১৮ বছর পর তার ব্যবহৃত চেয়ার, টেবিল, লুঙ্গি ও ফতুয়া যুক্ত হয়েছে।  

জেলার সিংগাইর উপজেলার পারিল গ্রামে ২০০৮ সালের ১৫ মে স্থানীয় এক ব্যক্তি নিজের জমি দান করেন এবং সেই জমির ওপর জেলা পরিষদের অর্থায়নে ভাষা শহীদ রফিক উদ্দিন আহমেদ গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘর নির্মাণ করা হয়।

পাশাপাশি ওই গ্রামের নাম উত্তর পারিল থেকে পরিবর্তন করে নামকরণ করা হয় রফিকনগর।  

জানা যায়, ২০০৮ সালে ১৫ মে স্থানীয় রফিকুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তির দান করা জমিতে জেলা পরিষদের অর্থায়নে ভাষা শহীদ রফিক উদ্দিন আহমেদ গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘর নির্মাণ হয়েছে। একই সঙ্গে উত্তর পারিল গ্রামের নাম পরিবর্তন করে নামকরণ করা হয় রফিকনগর। জাদুঘরে ১০ হাজার বইসহ সব ধরনের সুযোগ সুবিধা থাকার পরও দর্শনার্থীরা খুব একটা আসেন না। শুরুর দিকে প্রতিদিন দুই থেকে আড়াইশ দর্শনার্থী এলেও মাঝে তা কমে গড়ে ১০ থেকে ১২ জনে দাঁড়ায়। অন্যদিকে দর্শনার্থীদের অভিযোগ, গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘরটি নামেই করা হয়েছে। সাজানো-গোছানো পাঠাগারে কিছু পুরোনো বই থাকলেও এতদিন রফিকের স্মৃতিবিজরিত কোনো চিহ্ন ছিল না।

মহাসড়ক থেকে রফিকনগর পর্যন্ত আসা রাস্তটিও এখনো খানাখন্দে ভরা। এ নিয়ে রয়েছে দেশ-বিদেশ থেকে আসা দর্শনার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ।

৩৮ শতাংশ বাড়িটিতে বর্তমানে বসবাস করছেন রফিক উদ্দিনের তৃতীয় ভাই বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রয়াত আব্দুল খালেকের ছেলে শাহজালাল মিয়া বাবু। এক সময় জরাজীর্ণ বাড়িটিতে ২০০০ সালে প্রশিকা মানবিক উন্নয়ন কেন্দ্রের পক্ষ থেকে একটি পাঠাগার নির্মাণ করে দেওয়া হয়। এর পর ২০১৬ সালে জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে দুই রুমের একটি বাসস্থান ও বাড়িতে একটি শহীদ মিনার নির্মাণ করে দেওয়া হয়। স্থানীয় এবং পরিবারের দাবি রফিকের নামে একটি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়সহ জন্মস্থানে সরকারিভাবে একটি রেস্ট হাউজ নির্মাণ করার।

জাদুঘর ও গ্রন্থাগারের লাইব্রেরিয়ান ফরহাদ হোসেন খান বলেন, এখন জাদুঘরে রফিকের ব্যবহার করা চারটি চেয়ার, একটি টেবিল, টেবিল ক্লথ ও গায়ের ফতুয়া-লুঙ্গি যুক্ত হওয়ায় আগের চেয়ে দর্শনার্থীদের সংখ্যা কিছুটা বেড়েছে। তবে সিঙ্গাইরে আঞ্চলিক সড়ক থেকে রফিকের বাড়ি পর্যন্ত আসা-যাওয়ার গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাটির বেহাল অবস্থা থাকায় ক্ষোভ রয়েছে স্থানীয়দের।

এদিকে ভাষা শহীদ রফিকের ছোট ভাই বীর মুক্তিযোদ্ধা খোরশেদ আলম বলেন, ফেব্রুয়ারি মাস এলেই রফিকের পরিবারের সদস্যরা কোথায় আছে কেমন আছে। এই মাসেই অনেকে অনেক কিছু করতে চায়। ২১ তারিখ চলে গেলে যে যা প্রতিশ্রুতি দেয় সব ভুলে যায়। আর কাউকে তখন খুঁজেও পাওয়া যায় না। অন্যদিকে সরকারের ভূমিকা নিয়েও বেশ ক্ষোভ প্রকাশ করেন রফিকের এই ছোট ভাই।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২১, ২০২৩
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।