ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

কৃষিতে নতুন দ্বার উন্মোচিত হবে: প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ

মো. জাহিদ হাসান জিহাদ, মুজিবনগর থেকে | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৩০ ঘণ্টা, মার্চ ১৯, ২০২৩
কৃষিতে নতুন দ্বার উন্মোচিত হবে: প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ

মুজিবনগর (মেহেরপুর): জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন আশা প্রকাশ করে বলেছেন, আগামীর কৃষি হবে আরও সমৃদ্ধ। টেকসই কৃষি অগ্রযাত্রার মাধ্যমে কৃষিতে নতুন দ্বার উন্মোচিত হবে।

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৩তম জন্মবার্ষিকী স্মরণে মুজিবনগরে গ্রামীণ কৃষকদের সমন্বয়ে চলছে মুজিব জন্মোৎসব। এ উপলক্ষ্যে যশোর অঞ্চলে টেকসই কৃষি সম্প্রসারণ প্রকল্প ও কন্দাল ফসল উন্নয়ন প্রকল্প দিনব্যাপী কৃষক সমাবেশ ও তিন দিনব্যাপী কৃষি মেলার আয়োজন করেছে।

শনিবার (১৮ মার্চ) দুপুরে মেহেরপুরের ঐতিহাসিক মুজিবনগর আম্রকাননে এ কৃষক সমাবেশ ও মেলার উদ্বোধন করেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন এমপি।

কৃষক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে কৃষকদের জীবনমান অনেক উন্নত হয়েছে। শেখ হাসিনার সরকার প্রতিবছর কৃষকদের জন্য অনেক ভর্তুকি দিচ্ছে। কৃষকদের বীজ, সার থেকে শুরু করে একেবারে গ্রাম পর্যায়ে কৃষি সেবা পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে বর্তমান সরকার। আওয়ামী লীগ সরকার কৃষি বান্ধব সরকার। এই সরকার কৃষকদের প্রণোদনা দিচ্ছে, আধুনিক যন্ত্রপাতি দিচ্ছে, কৃষিখাতে আধুনিকায়ণে বর্তমান সরকারের বেশ কিছু প্রকল্প হাতে নিয়েছে।

ফরহাদ হোসেন আরও বলেন, গ্রামীণ কৃষিকে বাণিজ্যিক কৃষিতে রুপান্তরিত করতে সরকার ইতওমধ্যেই বিভিন্ন পদক্ষেপ হাতে নিয়েছে। জাতীর জনক বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিলো কৃষকদের বাঁচিয়ে দেশ সমৃদ্ধ করা। তারই স্বপ্ন পূরণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কৃষিকে গুরুত্ব দিয়ে কৃষক যাতে ন্যায্য মূল্য পায় সেদিকে জোর দিয়েছেন। আগামীর কৃষি হবে আরও সমৃদ্ধ। টেকসই কৃষি অগ্রযাত্রার মাধ্যমে কৃষিতে নতুন দ্বার উন্মোচিত হবে।

কৃষক সমাবেশের শুরুতেই প্রধান আলোচক কৃষি মন্ত্রণালয়ের এপিএ এক্সপার্ট পুলের সদস্য ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক ড. মো. হামিদুর রহমান বলেন, একটা সময় এই জনপদে দুর্ভিক্ষ একটি নিত্য নৈমিত্তিক বিষয় ছিল। যার অন্যতম কারণ ছিল খাদ্যের প্রধান যোগানদাতা গ্রামীণ কৃষকদের প্রতি এই দেশের তৎকালীন কলোনিয়াল শাসক গোষ্ঠীর অবহেলা ও নিপীড়নমূলক আচরণ। কিন্তু জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সর্বপ্রথম বিষয়টি উপলব্ধি করে এই দেশের কৃষি ও কৃষকের উন্নয়নে বিভিন্ন কর্মপরিকল্পনা হাতে নেন।  

তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু নিজেও দেশের কৃষক সমাজকে প্রাপ্য সম্মানের জন্য কৈশোর থেকে শুরু করে বিভিন্ন লড়াই সংগ্রাম করেছেন। তাই সেই গ্রামীণ কৃষকদের দ্বারা সেই মহান নেতার জন্মোৎসব আয়োজন একটা খুবই যুক্তিযুক্ত ও আবেগতাড়িত বিষয় এবং এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতে পেরে আমি নিজেকে ধন্য মনে করছি।

ড. মো. হামিদুর রহমান বলেন, কৃষি অত্যন্ত প্রাচীন পেশা। আমাদের দেশ এক সময় কৃষিতে পিছিয়ে ছিল। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন কৃষকদের বন্ধু। তিনিই ছিলেন আধুনিক কৃষির সূচনাকারী। তারই ধারাবাহিকতায় বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর প্রচেষ্টায় এক ইঞ্চিও জমি খালি থাকবে না এই নির্দেশনা কে বাস্তবায়ন করতে চেষ্টা করছে কৃষি বিভাগ।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বছরব্যাপী ফল উৎপাদনের মাধ্যমে পুষ্টি উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক ড. মেহেদি মাসুদ বলেন, বর্তমান সরকারের আমলে দেশে রেকর্ড পরিমাণ ফল উৎপাদন হয়েছে। একসময় পেয়ারা বাংলাদেশে আমদানী করা হতো, কিন্তু এ বছর পেয়ারা উৎপাদন দেশেই আশানুরুপ হয়েছে।

কন্দাল ফসল উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক মকলেছুর রহমান বলেন, নিরাপদ ফসল উৎপাদনে কন্দ জাতীয় ফসলের ভূমিকা অপরিসীম। সরকার বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে কন্দ জাতীয় ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি করেছে। যা থেকে কৃষকরা পুষ্টি ও আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন।

যশোর অঞ্চলে টেকসই কৃষি সম্প্রসারণ প্রকল্পের পরিচালক রমেশ চন্দ্র ঘোষ বলেন, যশোর অঞ্চলে টেকসই কৃষি সম্প্রসারণ প্রকল্পের মাধ্যমে এ অঞ্চলের কৃষকদের দক্ষতা বৃদ্ধির পাশাপাশি খোরপোশ কৃষিকে বাণিজ্যিক কৃষিতে রুপান্তর করা হবে। উচ্চমূল্যের ফসল চাষের মাধ্যমে কৃষিকে আরও আধুনিক করা হবে। সেই সঙ্গে নিরাপদ ফসল উৎপাদন ও প্রক্রিয়াজাতকরণের মাধ্যমে কৃষকদের ন্যায্য মূল্য প্রাপ্তিতে ভূমিকা রাখবে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের যশোর অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক কৃষিবিদ আবু হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসাবে আরও বক্তব্য রাখেন মেহেরপুর জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ মুনসুর আলম খান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জামিরুল ইসলাম, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. বাবুল চন্দ্র বিশ্বাস প্রমুখ।

এর আগে মুজিবনগর হেলিপ্যাড মাঠে কম্বাইন হারভেস্টারের মাধ্যমে শস্য গম কর্তনের উদ্বোধনে করেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক ফরহাদ হোসেন এমপিসহ অতিথিরা।

এদিকে, মুজিব জন্মোৎসবকে আকর্ষণীয় করার লক্ষ্যে বিভিন্ন কৃষি প্রযুক্তি প্রদর্শনের পাশাপাশি গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করা হয়েছে। তিন দিনব্যাপী এই কৃষি মেলায় ১৩টি স্টল স্থান পেয়েছে। ২০ মার্চ মেলার সমাপনী হবে।  

বাংলাদেশ সময়: ১০৪২ ঘণ্টা, মার্চ ১৯, ২০২৩
এনএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।