ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

অভাব-অনটনে কাটছে রাজবাড়ীর কদমা কারিগরদের জীবন 

কাজী আব্দুল কুদ্দুস, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৩৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ২, ২০২৩
অভাব-অনটনে কাটছে রাজবাড়ীর কদমা কারিগরদের জীবন  মিষ্টান্ন কদমা তৈরিতে ব্যস্ত কারিগর

রাজবাড়ী: এক সময়ে রাজবাড়ীর কদমার সুনাম ছিল দেশজুড়ে। রাজবাড়ীর চাহিদা মিটিয়ে জেলার বাইরে কদমা বিক্রি করতেন সেখানের কারিগরেরা।

কিন্তু সময়ের পরিক্রমায় সেই সুদিন হারিয়ে গেছে। এ ব্যবসায় ধস নেমেছে।  

কারণ একটা সময় বাঙালির উৎসবের প্রধান মিষ্টান্ন ছিলো এই কদমা, যা এখন শুধুই মৌসুমী মিষ্টান্ন।

চাহিদা কমে যাওয়ায় রাজবাড়ীর কদমা কারিগরদের বেশিরভাগ অন্য পেশায় চলে গেছেন।  

অবশ্য বেশ কয়েকজন এখনও কদমা শিল্পকে বাঁচিয়ে রেখেছেন। কিন্তু তা করতে গিয়ে অভাব-অনটনে ভুগছে তাদের জীবন-সংসার।

জেলায় কতজন মানুষ এখন কদমা তৈরি করেন বেশ কয়েকটি দপ্তর ঘুরে সেই তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জেলার বালিয়াকান্দি উপজেলার নারুয়া ও নবাবপুর ইউনিয়নের দুজন কারিগর কদমা তৈরি করেন।

সরেজমিনে দেখা গেছে, জেলার বালিয়াকান্দি উপজেলার নবাবপুর ইউনিয়নের দক্ষিণবাড়ি গ্রামে কদমা তৈরি করেন কামাল মিয়া (৪৫)। তার ঘরে গিয়ে দেখা মিলল কদমা তৈরির সরঞ্জামের। প্রায় ৩০ বছর ধরে কদমা তৈরি করছেন কামাল। জেলার বিভিন্ন স্থানের মেলাসহ মুদি দোকানে কদমা সরবরাহ করেন তিনি। তবে তার দুটি কিডনিতেই সমস্যা। তাই নিয়মিত এখন আর কদমা তৈরি করেন না কামাল মিয়া। তবে চাহিদা পেলে খুব কষ্ট করে কদমা সরবরাহ করেন তিনি।

তিনি বাংলানিউজকে বলেন, নতুন প্রজন্মের মধ্যে কদমা নিয়ে উৎসাহ কম। ফলে নতুন কারিগরের অভাব তৈরি হয়েছে। এছাড়া কদমা তৈরির উপকরণের দাম বেড়েছে কয়েকগুণ। যে কারণে এখন আর কেউ তৈরি করতে চায় না।  

রাজবাড়ীর কদমা

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জেলার বিভিন্ন মুদিখানার দোকানে আগে কদমা পাওয়া যেত। দুই বছর আগে প্রতি কেজি ১০০ টাকার নিচে বিক্রি হতো। বর্তমানে প্রতি কেজি কদমা ১৬০ থেকে ১৮০ টাকা।  ভালোমানের কদমার দাম প্রায় ২০০ টাকা পর্যন্ত।

বালিয়াকান্দির আলোকদিয়া গ্রামের গোবিন্দ বিশ্বাস বলেন, মিষ্টান্ন তৈরিতে কদমার প্রয়োজন হয়। এছাড়া মুড়ির সঙ্গে কদমা বেশ সুস্বাদু। সনাতন ধর্মের মানুষ বিভিন্ন পূজায় কদমা ব্যবহার করেন। বর্তমানে এখন আর সচরাচর কদমা পাওয়া যায় না। তবে বর্তমানে এসব কারিগরদের সরকারি সহায়তা দিয়ে টিকিয়ে রাখা প্রয়োজন।

বালিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, আমি ছোটবেলায় কদমা খুব পছন্দ করতাম। প্রায় দুই যুগ কদমার খেতে পাইনি। আমি নতুন এসেছি এই উপজেলায়। শুনছি দুটি ইউনিয়নে কদমা তৈরি করা হয়। এই কারিগররা যদি আমার কাছে কোনো সহায়তা চায়। উপজেলা প্রশাসন থেকে সেই সহায়তা করা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৩০ ঘণ্টা, এপ্রিল ০২, ২০২৩
এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।