ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

৫ বছর আগের ৬ কোটি টাকা বকেয়া বেতন পেলেন ৪০০ কর্মচারী

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৩৩ ঘণ্টা, জুন ১৬, ২০২৩
৫ বছর আগের ৬ কোটি টাকা বকেয়া বেতন পেলেন ৪০০ কর্মচারী

পটুয়াখালী: প্রায় ৫ বছর আগের পটুয়াখালী পৌরসভার ৪০০ কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নয় মাসের বকেয়া বেতন ভাতাসহ আনুতোষিক (গ্র্যাচুইটি) পরিশোধ করলেন পৌর মেয়র মহিউদ্দিন আহম্মেদ।

এ বকেয়া বেতনের পরিমাণ ছিল ৬ কোটি ৬০ হাজার টাকা, যার পুরোটাই পরিশোধ করা হয়।

এতে খুশি পটুয়াখালী পৌরসভার কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।

বৃহস্পতিবার (১৫ জুন) পৌরসভার কর্মকর্তা কর্মচারীরা পৌর মেয়রকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান।

পটুয়াখালী পৌরসভা সূত্রে জানা যায়, বিগত বছরগুলোতে পটুয়াখালী পৌর সভার কর্মকর্তা কর্মচারীরা কাজ করলেও নিয়মিত বেতন ভাতা পেতেন না। ফলে চাকরি করেও পৌরসভার স্টাফরা তাদের পরিবার পরিজন নিয়ে অনেক কষ্টে জীবন যাপন করতেন। বর্তমান পৗর পরিষদ মেয়র মহিউদ্দিন আহম্মেদ নেওয়ার পর থেকে পরিস্থিতি পাল্টে যেতে শুরু করে। প্রতি মাসে নির্ধারিত সময় যেমন বেতন ভাতা পরিশোধ করা হয় পাশাপাশি বিগত পরিষদের বকেয়া বেতন পরিশোধেরও উদ্যোগ নেয় বর্তমান পৌর পরিষদ।  

বিগত সময় পৌরসভার যে সব কর্মচারীরা অবসরে গেছেন কিন্তু আনুতোষিক (গ্র্যাচুইটি) টাকা পাননি,তাদের টাকা পরিশোধেরও উদ্যোগ নেওয়া হয়।  

এরই ধারাবাহিকতায় বর্তমানে পটুয়াখালী পৌরসভা কর্মকর্তা কর্মচারীদের বেতন, ভাতাসহ যাবতীয় পাওনা পরিশোধ করে দায়মুক্ত হলো।  

পটুয়াখালী পৌরসভার হিসার রক্ষক মো. কামরুজ্জামান বলেন, ‘বর্তমান মেয়রের সময় ধাপে ধাপে নয় মাসের বকেয়া বেতন পরিশোধ করে সারা বাংলাদেশে পটুয়াখালী পৌরসভা এক নজির সৃষ্টি করল। বাংলাদেশে মনে হয় অন্য কোনো পৌরসভা নেই যাদের শতভাগ বেতন ভাতা পরিশোধ করা হয়েছে এবং নিয়মিত সময় বেতন ভাতা পাচ্ছে। এ ছাড়া বর্তমান মেয়রের নেতৃত্বে দায়িত্ব নেওয়ার পর ১৯ জনের আনুতোষিক(গ্র্যাচুইটি) টাকাও পরিশোধ করা হয়েছে। এদের মধ্যে অনেকে আছেন যারা ১৫ থেকে ২০ বছর আগে অবসরে গিয়েও আনুতোষিক পাননি। গত ফেব্রুয়ারিতে এমন ১৯ জন কর্মচারীকে ১ কোটি ৪৯ লাখ ৪০ হাজার ৮২৫ টাকা পরিশোধ করা হয়। ’

পটুয়াখালী পৌরসভার পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুম বিল্লাহ বলেন, ‘বিগত পরিষদের বকেয়া পরিশোধ করে বর্তমান মেয়র একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন। আমার চাকরি জীবনে আমি অনেক পৌরসভায় দায়িত্ব পালন করলেও এমন ঘটনা দেখিনি। এখন থেকে আমাদের স্টাফদের কাজের প্রতি দায়িত্বশীলতা এবং আন্তরিকতা আরও বৃদ্ধি পাবে। ’

পটুয়াখালী পৌর সভার মেয়র মহিউদ্দিন আহম্মেদ বলেন, পটুয়াখালী পৌরসভা হবে একটি স্মার্ট পৌরসভা। আর এই পৌরসভার নাগরিকদের সেবা প্রদানে সার্বক্ষণিক পৌরসভার কর্মকর্তা কর্মচারীরা কাজ করে থাকেন। বিগত পৌর পরিষদগুলো স্টাফদের বেতন ভাতা প্রদানের ক্ষেত্রে গুরুত্ব না দেওয়ায় মাসের পর মাস তারা বেতন পেতেন না। আমি যখন দায়িত্ব নেই তখন তাদের ৯ মাসের বেতন ভাতা এবং অবসরে যাওয়া কর্মচারীদের আনুতোষিক বকেয়া ছিল। আমি চেষ্টা করেছি কীভাবে এসব বকেয়া পরিশোধ করে কর্মকর্তা কর্মচারীদের মুখে একুট হাসি ফোটানো যায়। পৌরসভার স্টাফদের পরিবার ভালো থাকলে তাদের মন মানসিকতা ভালো থাকবে। পৌরবাসীকে তারা আন্তরিকভাবে সেবা দেবে। পাশাপাশি নিয়মিত বেতন ভাতা পেলে স্টাফদের কাজের জাবাবদিহিতা এবং স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা সম্ভব। এ কারণেই আমি চেষ্টার করেছি এবং সবার সহযোগিতায় এই মাসেই সব বকেয়া পরিশোধ সম্ভব হয়েছে। ’ 

পৌরসভার কর্মকর্তা কর্মচারীরা স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের কর্মচারী হলেও পৌরসভার নিজস্ব তহবিল থেকেই তাদের বেতন ভাতা পরিশোধ করতে হয়। বিগত দিনে নিয়মিত বেতন ভাতা না পাওয়ায় পৌর কর্মকর্তা কর্মচারীদের আন্দোলন করতেও দেখা গেছে। তবে পটুয়াখালী পৌরসভা এ ক্ষেত্রে নতুন এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।  

বাংলাদেশ সময়: ১০২৭ ঘণ্টা, জুন ১৬, ২০২৩
এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।