ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

অবৈধ বেকারির ধোঁয়ায় স্বাস্থ্যঝুঁকি, বন্ধের নির্দেশেও নেই কর্ণপাত  

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮২৪ ঘণ্টা, জুলাই ২৬, ২০২৩
অবৈধ বেকারির ধোঁয়ায় স্বাস্থ্যঝুঁকি, বন্ধের নির্দেশেও নেই কর্ণপাত  

ময়মনসিংহ: পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ছাড়াই ময়মনসিংহ নগরীর প্রাণকেন্দ্র কালীবাড়ি আবাসিক এলাকায় গড়ে উঠেছে মেসার্স রাজীব বেকারি।  

এতে মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়েছেন স্থানীয় কয়েক হাজার বাসিন্দা।

ঘটনাটি নিয়ে দফায় দফায় অভিযোগ দায়ের হলেও প্রতিকার না পাওয়ায় হতাশ এলাকাবাসী।

বুধবার (২৬ জুলাই) দুপুরে অভিযোগ বিষয়ে জানতে সরেজমিনে গেলে স্থানীয় ভুক্তভোগীরা বাংলানিউজকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।

ভুক্তভোগী এলাকাবাসী জানান, দীর্ঘ সময় ধরে পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ছাড়াই মেসার্স রাজীব বেকারিটি রুটি ও বিস্কুট কারখানা চালিয়ে আসছে। এর ফলে কারখানা থেকে নির্গত হওয়া দূষিত ধোঁয়ায় স্থানীয় বাসিন্দারা শ্বাসকষ্টসহ চর্ম ও চোখ জ্বালাপোড়া রোগে ভুগছে।  

এ ঘটনায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ২০২১ সালে ২৮ নভেম্বর ভুক্তভোগী কার্তিক পাল জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। ওই বছরের পহেলা ডিসেম্বর তৎকালীন উপ-পরিচালক মিহির লাল দুই পক্ষের উপস্থিতিতে ঘটনার শুনানি করে অভিযোগের সত্যতা পান।  

এরপর ২০২১ সালের ৯ ডিসেম্বর উপ-পরিচালক মিহির লাল এক আদেশে বলেন, পরিবেশগত ছাড়পত্র গ্রহণ না করে আবাসিক এলাকায় এই বেকারি পরিচালনার কারণে পরিবেশ দূষণ হচ্ছে। যা পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫ (সংশোধিত ২০১০) অনুযায়ী দণ্ডনীয় অপরাধ। এই অবস্থায় দূষণ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা (চিমনি স্থাপন) কার্যকর করে আগামী তিন মাসের মধ্যে পরিবেশসম্মত স্থানে বেকারিটি স্থানান্তরের নির্দেশ দেওয়া হলো।    

তবে দীর্ঘ সময়েও এই আদেশ বাস্তবায়ন না হওয়ায় ২০২২ সালের ১১ সেপ্টেম্বর পরিবেশ অধিদপ্তরে দ্বিতীয় দফায় অভিযোগ দায়ের করেন ভুক্তভোগী কার্তিক পাল।  

এনিয়ে ওই বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর দ্বিতীয় দফায় শুনানি শেষে পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫ (সংশোধিত ২০১০) অনুযায়ী রাজীব বেকারিটি বন্ধের আদেশ দেয় পরিবেশ কর্তৃপক্ষ। কিন্তু এই আদেশটিও এখন পর্যন্ত বাস্তবায়ন হচ্ছে না।

এনিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের মাঝে ক্ষোভ অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছেন ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শীতল সরকার।

তিনি বলেন, এ বিষয়ে সিটি করপোরেশনেও অভিযোগ দায়ের হয়েছে। ইতোমধ্যে বিষয়টি মেয়র, পরিবেশ অধিদপ্তর, জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে। আশা করছি অতিদ্রুত সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ এই বেকারি বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।      

জানতে চাইলে জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আব্দুল্লাহ আল মনসুর বলেন, আমি নতুন যোগদান করেছি। এখনো আমাকে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দেওয়া হয়নি। ক্ষমতা পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।  

ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন পরিবেশ অধিদপ্তর ময়মনসিংহের বিভাগীয় পরিচালক (উপসচিব) দিলরুবা আহমেদ।  

তিনি বাংলানিউজকে বলেন, দফায় দফায় শুনানি করে প্রতিষ্ঠানটি বন্ধের আদেশ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু আদেশ বাস্তবায়নের ক্ষমতা আমাদের নেই। তাই এই বিষয়ে এনর্ফোসমেন্টের জন্য সদর দপ্তরে চিঠি পাঠানো হয়েছে। তারা পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।      

বাংলাদেশ সময়: ১৮২০ ঘণ্টা, জুলাই ২৬,  ২০২৩
এসএএইচ
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।