ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

শ্যামনগরে নবনির্মিত ফায়ার স্টেশনের দ্রুত উদ্বোধনের দাবি

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৪০ ঘণ্টা, আগস্ট ২, ২০২৩
শ্যামনগরে নবনির্মিত ফায়ার স্টেশনের দ্রুত উদ্বোধনের দাবি

সাতক্ষীরা: দীর্ঘ এক বছর আগে সাতক্ষীরার শ্যামনগরে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশন নির্মাণের কাজ শেষ হয়েছে। সেই সঙ্গে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে জনবল ও অগ্নি নির্বাপণ গাড়ি।

তারপরও আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যক্রম শুরু না হওয়ায় এর সুফল পাচ্ছে না উপজেলার মানুষ।

ফায়ার সার্ভিস বিভাগ বলছে, তারা এখনো ভবন ও বেশ কিছু আসবাবপত্র শিডিউল অনুযায়ী বুঝে পায়নি। অপরদিকে, গণপূর্ত বলছে, দাপ্তরিক কিছু কাজ বাকি থাকায় ফায়ার সার্ভিস স্টেশনটি চালু করতে দেরি হচ্ছে।

স্থানীয়রা জানান, শ্যামনগর উপজেলাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে সরকার ইতোমধ্যে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশন নির্মাণের কাজ শেষ করেছে। কিন্তু লাল ফিতার দৌরাত্ম্যে আটকে আছে এর কার্যক্রম।

এ বিষয়ে নকিপুর বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ হোসেন বলেন, শ্যামনগরের কোথাও কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে পাশের কালিগঞ্জ উপজেলা থেকে ফায়ার সার্ভিসের ইউনিট এসে কাজ করে। এতে অনেকটা সময় ক্ষেপণ হয়ে যায়। ফলে দুর্ঘটনায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ অনেকটাই বেড়ে যায়। অনেক সময় প্রাণহানিও ঘটে। আমাদের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল এখানে ফায়ার স্টেশন স্থাপনের। সে অনুযায়ী কাজও হয়েছে। এখন উদ্বোধনের অপেক্ষা। কিন্তু অহেতুক সময় ক্ষেপণ করা হচ্ছে। এটা দ্রুত চালু করার দাবি জানাচ্ছি।  

শ্যামনগর উপজেলা প্রশাসন জানায়, ২০২০ সালে উপজেলা সদরে প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকা ব্যয়ে ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের নির্মাণকাজ শুরু হয়। ২০২১ সালের শেষের দিকে এর কাজ সম্পন্ন হয়। বছরখানেক আগে ভবন রং করার কাজও শেষ হয়েছে।

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশন সূত্রে জানা যায়, তিনতলা বিশিষ্ট এ ফায়ার স্টেশনে দুটি গাড়ি ও ২৭টি পদে জনবল থাকার কথা। এসব পদের মধ্যে দুইজন অফিসার, চারজন চালক, ১৬ জন ফায়ারম্যান ও অন্যান্য পদে পাঁচজন রয়েছে। এসব পদে ইতোমধ্যে জনবল নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

এদিকে, শ্যামনগর উপজেলা সদরে নির্মিত ফায়ার সার্ভিস স্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে কয়েকজন বসে অলস সময় পার করছেন। মেইল ফটকে তালা লাগানো। কোনো গাড়ি বা আগুন নেভানোর সরঞ্জামও চোখে পড়েনি।

স্টেশনটিতে দায়িত্বে থাকা এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, আমরা চারজন স্টাফ গত ছয় মাস যাবত এখানে দায়িত্বে রয়েছি। খাওয়া-দাওয়ার কষ্ট হচ্ছে। বিদ্যুৎ বিল বকেয়া থাকার কারণে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করায় বিদ্যুৎহীন থাকতে হচ্ছে। কোনো কাজকর্ম নেই। অলস সময় পার করছি। এটি কেন চালু হচ্ছে না সে বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ভালো বলতে পারবেন।

এ ব্যাপারে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশনের সহকারী পরিচালক (খুলনা) মো. ফারুক হোসেন শিকদার বলেন, শ্যামনগরের ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের ভবন এবং বেশ কিছু আসবাবপত্র আমাদের শিডিউল অনুযায়ী বুঝে পাইনি। এজন্য আমরা ফায়ার সার্ভিস স্টেশনটি উদ্বোধন করতে পারছি না। অগ্নিনির্বাপণ গাড়ি ও জনবল নিয়োগ হয়ে গেছে। অগ্নিনির্বাপণ গাড়িগুলো পার্শ্ববর্তী অন্য উপজেলার স্টেশনে কাজ করছে এবং নিয়োগ হওয়া জনবল ডেপুটেশনে অন্যান্য জায়গায় নিয়োজিত রয়েছে। আমরা গণপূর্ত বিভাগকে বারবার মৌখিক ও লিখিতভাবে স্টেশনের অসমাপ্ত কিছু কাজের কথা জানিয়েছি। সেগুলো সংশোধন করে আমাদের কাছে হস্তান্তর করলেই স্টেশনটি খুব দ্রুত চালু হবে।

এ বিষয়ে সাতক্ষীরা গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু হায়াত মুহাম্মদ শাকিউল আজম বলেন, দাপ্তরিক কিছু কাজ বাকি থাকায় ফায়ার সার্ভিসটি চালু করতে দেরি হচ্ছে। আশা করছি অসমাপ্ত কাজগুলো খুব দ্রুত শেষ হবে এবং শীঘ্রই ফায়ার সার্ভিস স্টেশনটি চালু হবে।

এ বিষয়ে শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আক্তার হোসেন বলেন, ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। শ্যামনগরে নবনির্মিত ফায়ার সার্ভিসের কার্যক্রম যাতে শুরু করা হয় সে ব্যাপারে উপজেলা পরিষদের মাসিক মিটিংয়ে কয়েকবার উত্থাপন করা হয়েছে। আশা করি খুব শীঘ্রই এর কার্যক্রম শুরু হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১২৩৯ ঘণ্টা, আগস্ট ০২, ২০২৩
এসএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।