ঢাকা, রবিবার, ১৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

কর কমিশনার অফিসে সেবা পেতে দিতে হয় আপ্যায়ন খরচ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৩০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৩, ২০২৩
কর কমিশনার অফিসে সেবা পেতে দিতে হয় আপ্যায়ন খরচ

মাদারীপুর: এখন নানা কাজেই প্রয়োজন হচ্ছে আয়কর সনদ। যার কারণে ব্যস্ততা বাড়ছে মাদারীপুর উপ-কর কমিশনার অফিসে।

প্রতিদিনই সেবা গ্রহীতাদের ভিড় লেগে রয়েছে অফিসটিতে। আর এই সুযোগেই সেবা নিতে ঘুষ দিতে হচ্ছে বলে অভিযোগ সেবাগ্রহীতাদের। চাহিদা মত টাকা না দিলে ভয় দেখান মামলার। বাধ্য হয়েই সেবা নিতে গিয়ে দিতে হচ্ছে ঘুষ! তবে আয়কর কর্মকর্তারা বিষয়টি ঘুষ বলতে নারাজ। তারা বলছেন,খুশি হয়ে আপ্যায়ন খরচ দিচ্ছে অনেকে। দীর্ঘদিন ধরে এই অবস্থা চললেও নেই কোন প্রতিকার।

জানা গেছে, মাদারীপুর জেলার রাজৈর উপজেলার নয়াকান্দি গ্রামের কৃষক দুলাল মণ্ডল নামের এক ব্যক্তি জমি দলিল সংক্রান্ত কাজে আয়কর সনদের জন্য মাদারীপুর উপ-কর কমিশনারের কার্যালয়ে আসেন। এসময় আয়কর সনদের জন্য ২ হাজার টাকা দাবি করেন অফিসের কম্পিউটার অপারেটর মনিরুজ্জামান। পরে বাধ্য হয়ে চাহিদা মতো ঘুষ দিয়ে গ্রহণ করেন সেবা। মাদারীপুর আয়কর অফিসের এ ধরনের অভিযোগ অনেক দিনের বলে জানান অন্যান্য সেবা গ্রহীতারা। টাকা না দিলে মামলাসহ বিভিন্ন প্রকার ভয় দেখান অফিসের কর্মচারী ও কর্মকর্তারা। ফলে সেবাপ্রত্যাশীদের পড়তে হয় ভোগান্তিতে।  

ভুক্তভোগি দুলাল মণ্ডল বলেন, কাজ করে দুই হাজার টাকা চান কম্পিউটার অপারেটর মনিরুজ্জামান। পরে টাকা দিলে তিনি আমাকে কাগজ দেন। সরকারি অফিসে টাকা দিয়ে কাজ করাতে হয়, এটা অন্যায়। '

মামুন বেপারী নামে একজন বলেন, একটি ব্যাংকে সঞ্চয় রাখবো, তাই ব্যাংক কর্মকর্তারা বললো আয়কর অফিসে গিয়ে সনদ নিয়ে আসতে। পরে আয়কর অফিসে গিয়ে আলাপ করি, তাদের একজন দুই হাজার টাকা চাইছে। টাকা দিলেই সাথে সাথে সনদ দিবে। পরে আর যাওয়া হয়নি।

মাদারীপুরের সচেতন নাগরিক কমিটির সাবেক সভাপতি ও বর্তমান সদস্য খান মোহাম্মদ শহীদ বলেন, মাদারীপুর জেলায় নিবন্ধিত করদাতা ৪৮ হাজার থাকলেও কর প্রদানকারীর সংখ্যা ১১ হাজার। ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে কর আদায় হয়েছে ১১০ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। সরকার নির্ধারিত আয়ের ওপরে ব্যক্তি, ব্যবসায়ী কিংবা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে নিয়মিত কর প্রদান করতে হয়। সেক্ষেত্রে হয়রানি ও ভোগান্তি মুক্ত সেবা প্রদানের দাবি জানাচ্ছি। তা না হলে প্রতিনিয়ত করপ্রদানকারীর সংখ্যা কমে যাবে।

মাদারীপুরের উপ-কর কমিশনারের কার্যালয়ের কম্পিউটার অপারেটর অভিযুক্ত মো. মনিরুজ্জামান জানান, আমি কখনই কারো কাছে টাকা চাই না। যদি কেউ খুশি হয়ে কিছু দেয়, তাহলে সেটা চা খরচ হিসেবে রেখে দেই। এটা ঘুষ নয়।

মাদারীপুরের উপ-কর কমিশনারের কার্যালয়ের সহকারি কর কমিশনার মো. ইনজামাম উল-হক বলেন, আমি এই অফিসে যোগদান থেকে শুরু করে এখনো কেউ কোন অভিযোগ দেয়নি। টাকার বিনিময়ে কেউ সেবা নিয়েছে এমন অভিযোগ লিখিত পাওয়া গেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।


বাংলাদেশ সময়: ১২২৮ ঘন্টা, সেপ্টেম্বর ৩,২০২৩
এমএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।