ঢাকা, রবিবার, ১৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ভাঙন আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটছে মা-মেয়ের

মোমেনুর রশিদ সাগর, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৪৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৮, ২০২৩
ভাঙন আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটছে মা-মেয়ের

গাইবান্ধা: ভাঙন আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটছে গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলার কিশোরগাড়ি ইউনিয়নের কিশোরগাড়ি গ্রামের খায়রন বেগম ও তার মেয়ে আশা মনির। মনে সব সময় একই চিন্তা, কখন যে নদীগর্ভে তলিয়ে যায় মাথা গোঁজার শেষ ঠাঁইটুকু।

বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে গিয়ে দেখা যায়, করতোয়া নদী ভাঙন তাদের বসতবাড়ির সীমানায় পৌঁছে গেছে। বারান্দায় চেয়ারে বসে জ্বরে আক্রান্ত আশা মনি নির্বাক চেয়ে আছে আগ্রাসী নদীর দিকে। ভয়ে ভেজা চোখ একটু পরপর আঁচল দিয়ে মুছছে মেয়েটি।

এমন পরিস্থিতিতে নিজের অনুভূতি প্রকাশের শক্তিটুকু হারিয়ে ফেলেছে সুলতানপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী আশামনি।

এদিকে দুপুর গড়িয়ে বিকেল হলেও দুপুরের খাবার তৈরি করতে পারেননি খায়রন বেগম। তিনি চুলার পাড়ে বসে আছেন স্বামী আশরাফুল ইসলামের পথ চেয়ে। আশরাফুল অন্যের জমিতে দিনমজুরের কাজ করেন।

খায়রন জানান, সহায়-সম্বল যা ছিল, তা নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। মাথাগোঁজার একমাত্র ঠাঁইটুকু নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে যে কোনো মুহূর্তে। জানি না পরিবার নিয়ে তখন কোথায় গিয়ে দাঁড়াব।  

ভাঙনের তীব্রতার বর্ণনা দিতে গিয়ে খায়রন বলেন, সকালে ঘর থেকে আঙিনায় বেরিয়ে দেখি পানি বসতভিটার সীমানার বাঁশের বেড়ায় ছুঁয়েছে। দুর্বল বেড়া স্রোতে যেন ভেসে না যায়, সে কারণে পাশের বাড়িতে গেছি খুঁটি বানানোর বাঁশ আনতে। এরই মধ্যে এসে দেখি বেড়া নদীতে ভেসে গেছে।

শুধু খায়রন-আশা মনি নন, করতোয়া নদী তীরবর্তী প্রতিটি পরিবারের একই অবস্থা। একইভাবে তারাও ভাঙন আতঙ্কে নির্ঘুম রাত পার করছেন।

প্রতিবেশী কিশোরগাড়ি ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্য আব্দুস সালাম মিয়া জানান, প্রতিবছর করতোয়ার ভাঙনের শিকার হয় নদী তীরবর্তী পরিবারগুলো। এ বছর চলতি সপ্তাহের টানা বৃষ্টি ও উজানের ঢলে হঠাৎই নদীতে ভাঙন শুরু হয়েছে। পানির স্রোতে হুমকির মুখে পড়েছে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ। তলিয়ে গেছে বিস্তীর্ণ এলাকার সবজি ও ধান ক্ষেত।

এ ব্যাপারে পলাশবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কামরুল হাসান জানান, ভাঙন এলাকার খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধসহ সার্বিক ক্ষয়ক্ষতি রোধে সম্ভাব্য সব ধরণের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ১১৪৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৮, ২০২৩
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।