ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

নির্বাচনে বিদেশিদের ‘অযাচিত হস্তক্ষেপে’ উদ্বেগ ঢাবির ৮২৫ শিক্ষকের

ইউনিভার্সিটি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫২৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৫, ২০২৩
নির্বাচনে বিদেশিদের ‘অযাচিত হস্তক্ষেপে’ উদ্বেগ ঢাবির ৮২৫ শিক্ষকের

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে বিদেশিরা ‘অযাচিত হস্তক্ষেপ’ করছে, এমনটি বলে গভীর উদ্বেগ জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) আট শতাধিক শিক্ষক। বুধবার (১৫ নভেম্বর) ফার্মেসি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. সীতেশ চন্দ্র বাছারের সই করা এক বিবৃতিতে এ উদ্বেগ জানানো হয়।

 

বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন সিন্ডিকেট সদস্য, বিভিন্ন অনুষদের ডিন, হলের প্রাধ্যক্ষ, অধ্যাপক, সহযোগী ও সহকারী অধ্যাপক, প্রভাষকসহ প্রায় ৮২৫ জন শিক্ষক বিবৃতিতে সই করেন।  

বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশের সংবিধান অনুসারে ২০২৪ সালের ২৯ জানুয়ারির মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার আগে একটি দেশের রাষ্ট্রদূত সব ধরনের শিষ্টাচার লঙ্ঘন করে সেদেশের সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রীর পক্ষ থেকে বাংলাদেশের তিনটি রাজনৈতিক দলকে নিঃশর্ত সংলাপে বসার আহ্বান জানিয়ে চিঠি বিতরণ করেছেন।  

এতে বলা হয়, ইতোপূর্বে সরকারকে পদত্যাগের এক দফা শর্ত জুড়ে দিয়ে বিএনপি-জামায়াতই শর্তহীন সংলাপের দাবিকে নাকচ করে দেয়। রাষ্ট্রদূতের পাঠানো চিঠিতে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্তকারীদের ওপর ভিসানীতি প্রয়োগের পুরনো হুমকি ব্যক্ত করা হয়েছে।  

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন সরকার ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানিদের পক্ষ নিয়ে অস্ত্র সরবরাহের মাধ্যমে গণহত্যায় সহযোগিতা করেছিল। একই ধারাবাহিকতায় তাদের নীতি মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষ শক্তিকে রসদ যুগিয়ে চলেছে। বিএনপি-জামায়াতের সরকার পতনের এক দফার আন্দোলন জনসমর্থন না পেলেও দেশটির রাষ্ট্রদূতের পক্ষপাতমূলক আচরণে উৎসাহিত হয়ে তারা আন্দোলনের নামে সহিংসতা চালিয়ে যাওয়ার প্রয়াস পাচ্ছে।  

হরতাল-অবরোধ কর্মসূচির নামে যানবাহনে অগ্নিসংযোগ, শিল্প-কলকারখানা ভাঙচুর, পুলিশ ও সাধারণ পথচারী হত্যা, প্রধান বিচারপতির বাসভবনে ভাঙচুর ও ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করলেও তথাকথিত মানবাধিকার ও গণতন্ত্রের ফেরিওয়ালা রাষ্ট্রটি এ বিষয়ে কোনো কথা বলেনি; নির্বাচনী প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্তকারীদের ওপর ভিসানীতিও প্রয়োগ করেনি।  

বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, তারা গণতন্ত্রের নামে আফগানিস্তান, সিরিয়া, ইরাক, লিবিয়াসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে ঠেলে দিয়েছে। এবার তারা অর্থনৈতিকভাবে ক্রমাগ্রসরমান বাংলাদেশ রাষ্ট্র – যেটি তৃতীয় বিশ্বের রাষ্ট্রগুলোর কাছে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে, তার উন্নয়নের ধারাকে পশ্চাদগামী করতে মুক্তিযুদ্ধবিরোধী শক্তির অপতৎপরতায় রসদ যোগাচ্ছে।

বিবৃতিতে গত ৩১ অক্টোবর জাতিসংঘ মানবাধিকার হাইকমিশন কর্তৃক প্রকাশিত ‘বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রতিবাদ’ শিরোনামের সংবাদ সম্মেলনের প্রতিবাদ ও বক্তব্য প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়। সহিংসতা সৃষ্টিকারী রাজনৈতিক দল ও উগ্র ধর্মীয় সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীর সঙ্গে সংলাপের কথা বলে সময়ক্ষেপণ করে সাংবিধানিক শূন্যতা সৃষ্টির অপতৎপরতায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন শিক্ষকরা।  

বাংলাদেশ সময়: ১৫২৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৫, ২০২৩
আরএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।