ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত মাদারীপুরের ৩ বোন ও ভাবির দাফন সম্পন্ন

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৩৮ ঘণ্টা, মার্চ ২১, ২০২৪
সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত মাদারীপুরের ৩ বোন ও ভাবির দাফন সম্পন্ন

মাদারীপুর: গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত মাদারীপুরের তিন বোন ও ভাবির দাফন সম্পন্ন হয়েছে।  

গ্রামের বাড়ি জেলার ডাসার উপজেলার গোপালপুর কাজী বাড়িতে দুই বোন নাছিমা, আসমা ও তাদের ভাবি কোমল বেগমের পাশাপাশি একই স্থানে দাফন সম্পন্ন হয়েছে।

অন্যদিকে মেজ বোন সালমা বেগমের দাফন হয়েছে তার স্বামীর বাড়ি গোপালগঞ্জে।  

বুধবার (২০ মার্চ) রাত ১০টার দিকে জানাজা শেষে পারিবারিক কবর স্থানে তাদের দাফন সম্পন্ন করা হয়।

এর আগে বুধবার (২১ মার্চ) বিকেলে নাছিমা, আসমা ও কোমলের মরদেহ একটি পিকআপভ্যানে করে ভাঙ্গা থেকে গ্রামের বাড়ি গোপালপুরে আনা হয়। একই সময় আরেক বোন সালমার মরদেহ তার স্বামীর বাড়ি গোপালগঞ্জ পৌর এলাকায় পৌঁছায়। সেসময় তাদের আত্মীয়-স্বজন ও প্রতিবেশীদের মধ্যে নেমে আসে শোকের মাতম।

জানা গেছে, ২০ মার্চ সকালে একটি ভাড়া করা মাইক্রোবাসে হুমায়ুন কবির তার স্ত্রী, ছোট ভাই-বোন মিলিয়ে মোট সাতজন ঢাকা থেকে গ্রামের বাড়ি মাদারীপুরের ডাসারের উদ্দেশে রওনা দেন। তারা সবাই দীর্ঘদিন ধরে ঢাকার মোহাম্মদপুর ও মিরপুর এলাকায় বসবাস করে আসছিলেন। সকাল ১১টার দিকে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার ছাগলছিড়া এলাকায় ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা মাইক্রোবাসের সঙ্গে বরিশাল থেকে ছেড়ে আসা গ্লোবাল পরিবহনের যাত্রীবাহী একটি বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে মাইক্রোবাসের চার নারী যাত্রী ও চালক নিহত হন। এ ঘটনায় আহত তিনজনকে প্রথমে মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়।  

নিহত পাঁচজনের চারজনই মাদারীপুরের ডাসার উপজেলার গোপালপুর গ্রামের কাজী বাড়ির আবদুল হামিদ কাজীর মেয়ে নাছিমা বেগম (৬৮), আসমা বেগম (৪৫), সালমা বেগম (৫৫) ও তাদের ভাই হুমায়ুন কবিরের স্ত্রী মনোয়ারা বেগম ওরফে কোমল (৭০) এবং মাইক্রোবাসচালক রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার তুবার শেখেরপাড়া গ্রামের আতাউর মোল্লার ছেলে আলমগীর হোসেন (৪২)।  

গুরুতর আহত তিনজন হলেন- কাজী আবদুল হামিদের ছেলে হুমায়ুন কবির, খায়রুল আলম ও মেয়ে নাজমা বেগম।

নিহত তিন বোনের ভাতিজা কাজী সুলতানুল হক বলেন, আমার ফুফুদের মধ্যে খুব মিল ছিল। তারা সব কাজই একসঙ্গে করতেন। সবাই ঢাকা কেন্দ্রিক হলেও দেশের বাড়িতে একসঙ্গে বেড়াতে আসতেন। পাঁচ ফুফুর মধ্যে তিন ফুফু একসঙ্গে নিহত হবেন ভাবতে কষ্ট হচ্ছে। আমাদের ইচ্ছে ছিল, তিন ফুফুর দাফন একই স্থানে করার। কিন্তু আমার দুই ফুফু নাছিমা, আসমা ও চাচি কোমলকে গ্রামের বাড়িতে জানাজা শেষে দাফন করা গেলেও দুর্ঘটনায় নিহত আরেক ফুফুকে (সালমা) তার স্বামীর বাড়ি গোপালগঞ্জে নিয়ে গেছে। তাই তার দাফন এখানে আর করা সম্ভব হয়নি।

নিহত মনোয়ারা বেগম ওরফে কোমলের দুই মেয়ে কাজী কাজী পলি ও কাজী জুলি মায়ের মৃত্যুর খবর পেয়ে এসেছেন গ্রামের বাড়ি ডাসার উপজেলার গোপালপুরে। তারা দুজন জানান, ‘মায়ের সঙ্গে শেষ কথা হলো, ‘‘মা জানালো খালাদের সঙ্গে দাদাবাড়ি যাবে দুদিন থেকে আবার ঢাকায় ফিরে আসবে। ’ কিন্তু কী থেকে কী হয়ে গেলো। মা আমাদের রেখে চলে গেলো। মায়ের মৃত্যু আমরা কেউ মানতে পারছি না। ’

ভাঙ্গা হাইওয়ে পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) আব্দুল্লাহ হেল বাকী জানান, দুর্ঘটনাকবলিত বাস ও মাইক্রোবাসটি হাইওয়ে পুলিশের হেফাজতে রয়েছে। এই দুর্ঘটনায় বাসের চালককে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। মামলাও প্রক্রিয়াধীন।

** গোপালগঞ্জে বাস-মাইক্রো সংঘর্ষ, একই পরিবারের ৪ জনসহ নিহত ৫

** বাড়ি ফেরা হলো না, জীবন থেমে গেলো সড়কেই!

বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৭ ঘণ্টা, মার্চ ২১, ২০২৪
এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।