ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ঘূর্ণিঝড় রিমাল: বরিশালের ৩৫ আড়তের কোটি টাকার চালের ক্ষতি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১১৬ ঘণ্টা, মে ২৯, ২০২৪
ঘূর্ণিঝড় রিমাল: বরিশালের ৩৫ আড়তের কোটি টাকার চালের ক্ষতি

বরিশাল: ঘূর্ণিঝড় রিমালের কারণে অতিবৃষ্টি ও জোয়ারের পানিতে তলিয়ে যায় গোটা বরিশাল নগর। যেসব জায়গায় বিগত দিনে পানি জমেনি, এবার সেসব স্থানও হাঁটু পানির নিচে ছিল।

এই পানির কারণেই নগরের লাইন রোড ও চাউল পট্টি এলাকার অন্তত ৩৫টি আড়তের কয়েকশ টন চাল ভিজে গেছে।  

পানিতে ভেজা চালের মধ্যে মিনিকেট, পাইজাম, স্বর্ণা, বুলেট, আটাশ, চিনিগুড়াসহ বিভিন্ন প্রকারের চাল রয়েছে।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, ভিজে যাওয়া চাল মানুষের খাওয়ার কোনো উপায় নেই। দুয়েকদিনের মধ্যে মাছের খাবার হিসেবে চালগুলো কেউ নিতে পারে। এরপর ফেলে দেওয়া ছাড়ো কোনো উপায় থাকবে না।

ভিজে যাওয়া এসব চালের কোনো কাটতি নেই বলে জানিয়েছেন নগরের চাউল পট্টি এলাকার শ্রী গোপাল ভাণ্ডারের স্বত্বাধিকারী শিবু সাহা। তিনি বলেন, এবারের ঝড়ে বরিশালে এত পানি হয়েছে যে মাছের ঘের, পুকুর, খামার সবকিছু তলিয়ে গেছে। মাছগুলো ঘের থেকে বের হয়ে গেছে। মৎস্য চাষিরাও আমাদের মতো মাথায় হাত দিয়ে বসে আছেন।

তিনি বলেন, পানি নেমে যাওয়ার পর যে যার মতো করে বিভিন্ন জায়গায় চালগুলো শুকানোর চেষ্টা করছেন বটে। তবে তাতে ২০ শতাংশ চালও উদ্ধার হয় কিনা সন্দেহ রয়েছে। আবার চালের সাথে সাথে আটা, চিনি, ডাল ময়দাসহ ‍অনেক ব্যবসায়ীর মুদি-মনোহরীর মালামাল পানিতে নষ্ট হয়ে গেছে। এসবের লোকসান কোনো আড়তদার কাটিয়ে উঠতে পারবেন না। কারণ, সব ব্যবসায়ীর মিলিয়ে ৩০০ টনের মতো চাল ভিজে নষ্ট হচ্ছে। সবাই বেশ ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। এখন সরকার যদি আমাদের জন্য কিছু করে।

মেসার্স বরিশাল খাদ্য ভাণ্ডারের মালিক স্বপন কুমার দত্ত জানান, বিগত দিনে কোনো সময়ে আড়তগুলোয় পানি ওঠেনি। এবার সেই রেকর্ড ব্রেক হয়ে গেছে। পানিতে বরিশাল পাইকারি চালের আড়তের প্রত্যেকের ১ থেকে ১০ টন পর্যন্ত চাল ভিজে গেছে। ক্ষতি হয়েছে কোটি টাকার উপরে।

এই বাজারের বড় চাল ব্যবসায়ী যুধিষ্ঠির নট্ট জানান, তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বাঁধন ট্রেডার্সের গুদামে পানি প্রবেশ করে সাত লাখ টাকার চাল নষ্ট হয়ে গেছে। তার দাবি, পুরো মোকামের ব্যবসায়ীদের প্রায় কোটি টাকার চাল নষ্ট হয়ে গেছে।

চাল ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক ফারুক আলম জানান, ব্যবসায়ীরা ব্যাংক থেকে লোন এনে কিংবা ধার দেনা করে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছিলেন। এই ক্ষতিতে তারা অনেকেই পুঁজিই হারিয়ে ফেলবেন।

আর চাল ব্যবসায়ীদের যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তা পূরণে কম সুদে লোন দেয়ার বিকল্প দেখছেন না চেম্বার নেতারা। এজন্য সরকারে সুদৃষ্টি কামনা করেছেন বরিশাল চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি সভাপতি আলহাজ সাইদুর রহমান রিন্টু। ভেজা চাল শুকিয়ে ব্যবসায়ীরা পোলট্রি ফিডের কারখানায় দেওয়ার চেষ্টা করবেন, আর এতে ক্ষতি পুষিয়ে ওঠা না গেলেও পরিমাণটা কমাতে পারবেন বলে মনে করছেন তারা।

যদিও ব্যবসায়ীদের ক্ষোভ, চালের দাম এক টাকা বাড়লেই মিডিয়া ও প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধ অবস্থান নেয়। কিন্তু এখন বিপদের সময় তাদের খোঁজ নিতেও কেউ আসেনি।

বাংলাদেশ সময়: ২১১৬ ঘণ্টা, মে ২৯, ২০২৪
এমএস/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।