খাগড়াছড়ি: পাহাড়ের নিচ থেকে গাড়িতে করে আমরা পানি এনে রিসোর্ট কটেজ চালাই। সেখানে আগুন লাগলে তো আমাদের নেভানোর সুযোগও নাই।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে কথাগুলো বলছিলেন সাজেকের শৈলকুঠির রিসোর্টের স্বত্বাধিকারী আপন দে।
সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুর আনুমানিক সাড়ে ১২টার দিকে সাজেকের রুইলুই এলাকায় আগুনে পুড়ে গেছে অন্তত ৫০টি কটেজ-রিসোর্ট, রেস্তোরাঁ ও ঘরবাড়ি। স্থানীয়দের দাবি সংখ্যা আরও বেশি।
বিকেল ৫টায় আগুন কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসার কথা জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিসের এক কর্মকর্তা। রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি সদর, দীঘিনালা, পানছড়ি, মাটিরাঙ্গা, লংগদুর ফায়ার সার্ভিসের সাতটি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে। তবে পানি সংকট থাকায় আগুন নেভানো কঠিন হয়ে পড়ে। ফায়ার সার্ভিসের নিজস্ব পানি, আর কটেজ রিসোর্টের পানি দিয়ে দ্রুত আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়নি।
দীঘিনালা ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার পংকজ কুমার বড়ুয়া বলেন, আমাদের স্টেশন থেকে সাজেকের দূরত্ব এবং স্থানীয়ভাবে পানির উৎস না থাকায় আগুন নিয়ন্ত্রণ করা যায়নি। গাড়ির পানি এবং কটেজ রিসোর্টের পানিতে যা সম্ভব হয়েছে তা দিয়ে কাজ চালাচ্ছি। স্থানীয়রা সাজেক পাহাড়ের নিচ থেকে গাড়িতে করে পানি আনছে তবে তা সময়সাপেক্ষ।
শৈলকুঠির রিসোর্টের স্বত্বাধিকারী আপন দে বলেন, আমরা ইকোভ্যালি রিসোর্টের ছাদের কোনে প্রথম আগুন দেখি। মুহূর্তে তা ছড়িয়ে পড়ে। আশপাশে ফায়ার সার্ভিস না থাকায় আমরা সময়মতো আগুন নেভাতে পারিনি।
এদিকে আগুনে এখন পর্যন্ত ৩৮টি রিসোর্ট, কটেজ ও রেস্তোরাঁর নাম পাওয়া গেছে। সেগুলো হলো, ছায়ানীড়, তরুছায়া, সাজেক ইকো রিসোর্ট, আত্রিকা, মেঘবাতায়ন, মেঘের ঘর, অধরা, মর্নিং স্টার, শালকা, রিমি ইকো কটেজ, মুননাইট, মাচাং ঘর, মেঘলা আকাশ, সানসিটা, বিকাশ বিলাস, পাহাড়পুঞ্জি, মাদল, ইকোবিহান, সাইরু, সালকা, মেঘবতী, ইকোভ্যালি, অবকাশ, মেঘছুট, টিজিবি লুসাই, নীল পাহাড়, টংঠং, অধরা, মেডভেঞ্চার, শৈলকুটির, ফদাংথাং ও চাঁদের বাড়ী কটেজ।
রেস্তোরাঁ আর টি স্টলগুলো হলো- চিলেকোঠা, মেঘপাই, পেদাটিংটিং, সিস্বল, মারুয়া ডি রেস্তোরাঁ কফিডোর টি স্টল।
সাজেক হেডম্যান (মৌজাপ্রধান) লালথাংগা লুসাই এর বাড়িতেও আগুন ছড়িয়ে পড়েছে বলে স্থানীয়ভাবে জানা গেছে।
রুইলুই জুনিয়র উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক বিশ্ব বিকাশ ত্রিপুরা জানান, অগ্নিকাণ্ডে অনেকগুলো রিসোর্ট এবং দোকান বর্তমানে জ্বলছে। পর্যাপ্ত পানি না থাকায় এত ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
বাঘাইছড়ি নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শিরিন আক্তার বলেন, সবাই মিলে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে। এই মুহূর্তে আগুনের সূত্রপাত সম্পর্কে কিছুই বলা যাচ্ছে না।
বাংলাদেশ সময়: ১৯০৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০২৫
আরএ