নড়াইল: দীর্ঘ ২৪ বছর ঘোরাঘুরির পর আদালতের নির্দেশে নিজের জমি ফিরে ফেলেও তা বুঝিয়ে দেয়া হচ্ছে না নড়াইলের প্রতিবন্ধী শওকাত মিনাকে। তিনি জমির মালিকানা ফিরে পেতে মানববন্ধন করেছেন।
শওকাত মিনা নড়াইল সদর উপজেলার শেখহাটির অধিবাসী। এক সময় তিনি ছিলেন সুস্থ, সবল মানুষ। শেখহাটি বাজারে ১৫ শতক জমির ওপর ছিল তার নিজের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং রাইস মিল। ২৪ বছর আগে শেখহাটি পুলিশ ফাঁড়ি নির্মাণের সময় তার জমিটি অবৈধভাবে দখল করে সেখানে ফাঁড়ির সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করা হয়।
এরপর জমি ফিরে পেতে তিনি আদালতের স্মরণাপন্ন হন। দুই যুগ আদালতে ঘুরে অসুস্থ হয়ে আস্তে আস্তে প্রতিবন্ধীতার শিকার হয়েছেন তিনি। অবশেষে চলতি বছরের ৫ জানুয়ারি উচ্চ আদালত শওকাত মিনাকে তার জমি বুঝিয়ে দেয়ার নির্দেশ দেন।
কিন্তু, আদালতের নির্দেশের দুই মাস অতিবাহিত হলেও তাকে সেই জমি বুঝিয়ে দেয়া হচ্ছেনা।
শনিবার (১ মার্চ) বেলা ১১টার দিকে শেখহাটি পুলিশ ফাঁড়ির সামনে প্রথমে মানবন্ধন ও পরে সংবাদ সম্মেলন করেন শওকাত মিনা। পরিবারের সদস্য এবং শেখহাটি বাজারের লোকজন তার সাথে ছিলেন।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন ইউপি মেম্বর আনোয়ার হোসেন, মানিক মিনা। একই স্থানে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন প্রতিবন্ধী শওকাত মিনার ছেলে হাসান মিনা।
বক্তব্যে জানানো হয়, উচ্চ আদালতের রায়ে জমির মালিকানা ফেরত পাওয়ার পর আদালত কর্তৃক জমি বুঝিয়ে দিতে ডিক্রি জারি করা হয়। সেই অনুযায়ী আদালত ও স্থানীয় লোকেরা জমি বুঝিয়ে দিতে আসলেও পুলিশের বাধায় তা সম্পন্ন হয়নি। এই অবস্থায় নিজের জমির মালিকানা ফেরত পাবার জন্য সাংবাদিকদের মাধ্যমে প্রশাসনকে অবহিত করেন তিনি। এসময় সাংবাদিকের উপস্থিতিতে নিজের জমি দেখতে পুলিশ ফাঁড়ির ভিতরে প্রবেশ করে ভুক্তভোগী পরিবার।
সেখানে শওকাত মিনা আবেগজড়িত কন্ঠে বলেন, পুলিশ তো আদালতের রায়ও মানে না, ৫ আগস্টের পর এলাকার লোকেরা আমাকে বলেছে এটি ভেঙে নিজের জমি দখলে নিতে। কিন্ত আমি আইনে লড়ছি, তাই আইন যা বলে তাই করবো।
শেখহাটি পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই রফিকুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, আদালতের রায়ের পরে পুলিশের পক্ষ থেকে আপিল করা হয়েছে এটুকু জানি।
নড়াইলের পুলিশ সুপার কাজী এহসানুল কবীর বাংলানিউজকে বলেন, জমির মালিকানার হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রিভিশন দায়ের করা হয়েছে। মামলা শেষ হলে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানা যাবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬১৭ ঘণ্টা, মার্চ ০১, ২০২৫
এসএইচ