ঢাকা, সোমবার, ১৭ চৈত্র ১৪৩১, ৩১ মার্চ ২০২৫, ০০ শাওয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

মানিকগঞ্জে ফসলি জমির মাটি যাচ্ছে ইটভাটায়

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৩৪ ঘণ্টা, মার্চ ২৮, ২০২৫
মানিকগঞ্জে ফসলি জমির মাটি যাচ্ছে ইটভাটায়

মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার বানিয়াজুড়ি ও বালিয়াখোড়া ইউনিয়নের তিন ফসলি জমির মাটি কেটে ইটভাটায় বিক্রি করা হচ্ছে। এর বেশির ভাগই ঢাকা-আরিচা মহাসড়কসংলগ্ন।

মাটির ট্রাক পরিবহনের জন্য মহাসড়কের পাশের মাটি কেটে তৈরি করা হয়েছে ডাইভারশন সড়ক। ফলে মাঝে মাঝে দুর্ঘটনা ঘটছে। মাটির ট্রাক অতিরিক্ত ওজন বহন করায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে মহাসড়ক।

সরেজমিনে দেখা গেছে, বানিয়াজুড়ি ও বালিয়াখোড়া ইউনিয়নের পকুরিয়া, রাথুরা, জোকাসহ অন্তত ২০টি স্থানে ফসলি জমির মাটি কাটা হচ্ছে। মাটি কাটার ফলে তৈরি হয়েছে বিশাল বিশাল গর্ত। মাটি বহনের জন্য ফসলি জমির ওপর দিয়ে তৈরি করা হয়েছে ট্রাক চলাচলের রাস্তা। ফলে শত শত বিঘা জমিতে চাষাবাদ করা সম্ভব হয়নি।

এলাকাবাসী বলেন, রাত ১০টা থেকে ভোররাত পর্যন্ত মাটি কাটা হয়। সেই মাটি ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক দিয়ে ট্রাকে করে বিভিন্ন ইটভাটায় পৌঁছে যায়। বেপরোয়া গতির এসব ড্রাম ট্রাকের কারণে মহসড়কে বাড়তি চাপ পড়ে।
তবে ঈদের জন্য গত দুই দিন মাটি কাটা বন্ধ রয়েছে।

স্থানীয়রা জানায়, মাটির ব্যবসার সঙ্গে আগে জড়িত ছিল আওয়ামী লীগের লোকজন। এখন সেটা চলে গেছে বিএনপির লোকজনের হাতে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বর্তমানে মাটির ব্যবসা করছেন বানিয়জুড়ির মিরান, বাবু, হাসিব, সোহেল, সামসু ড্রাইভার, রশিদ মেম্বার, নাহিদসহ আরো কয়েকজন। তবে তাঁরা সামনে থাকলেও পেছনে থেকে সব কিছু ম্যানেজ করছেন একজন ইউপি চেয়ারম্যানসহ স্থানীয় বিএনপির কয়েকজন নেতা।

তাঁদের নাম বলতে কেউ রাজি হয়নি ভয়ে। স্থানীয়রা জানায়, জমির মালিকদের ভয়ভীতি দেখিয়ে লামসাম দামে মাটি বিক্রি করতে বাধ্য করা হয়। আর একবার সেই জমিতে মাটি কাটা শুরু করলে পাশের জমিতে ভাঙন শুরু হয়। তখন পাশের জমির মালিকও বাধ্য হন মাটি বিক্রি করতে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কয়েকজন জানান, আওয়ামী লীগ আমলে এ ব্যাপারে অভিযোগ করে কোনো কাজ হয়নি। আর এখন অভিযোগ করার সাহসই পাচ্ছে না কেউ।

এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে ঘিওর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কোনো কথা বলতে রাজি হননি। তবে মানিকগঞ্জের জেলা প্রশাসক মনোয়ার হোসেন মোল্লা ফসলি জমি থেকে মাটি কাটার বিষয়টি কার্যত স্বীকার করে নেন। তিনি বলেন, ‘আমরা সামর্থ্য অনুযায়ী প্রতিনিয়ত মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করছি। তার পরও সব কিছু নিয়ন্ত্রণ করতে পারছি না। ’ তিনি বলেন, ভুক্তভোগীরা থানায় কিংবা কোর্টে মামলা করতে পারেন। এ ছাড়া তিনি সবাইকে এ ব্যাপারে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান।

বাংলাদেশ সময়: ১০২৯ ঘণ্টা, মার্চ ২৮, ২০২৫
এসআই


 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।