ঢাকা, বুধবার, ১৯ চৈত্র ১৪৩১, ০২ এপ্রিল ২০২৫, ০৩ শাওয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

রাজধানীর ফাঁকা সড়ক দাপিয়ে বেড়াচ্ছে অটোরিকশা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭০২ ঘণ্টা, মার্চ ৩১, ২০২৫
রাজধানীর ফাঁকা সড়ক দাপিয়ে বেড়াচ্ছে অটোরিকশা

ঢাকা: পরিবার-পরিজনের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করতে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছুটে গেছে ঘরমুখো মানুষ। ফলে রাজধানী ঢাকা এখন অনেকটাই ফাঁকা।

আর এই ফাঁকা সড়কে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে অটোরিকশা।

সোমবার (৩১ মার্চ) ঈদের দিন সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত রাজধানীর খামারবাড়ি, ফার্মগেট, বিজয় সরণি, বাংলামোটর, শাহবাগ, মৎস্যভবন এলাকা ঘুরে এই চিত্র দেখা যায়।

সরেজমিনে দেখা যায়, বাস-সিএনজির পাশাপাশি ফাঁকা সড়কে ছুটে চলছে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা। সাধারণ সময় প্রধান সড়কগুলোতে অটোরিকশা চলাচলে বাধা-বিপত্তি থাকলেও ঈদের দিন সেটি দেখা যায়নি। ছোট-বড় প্রতিটি রাস্তায়ই বাধাহীনভাবে চলছে অটোরিকশা। রঙিন পোশাক পড়ে যাত্রীরাও চড়ছেন সেসব রিকশায়।

প্রধান সড়কগুলোতে অটোরিকশার এমন বেপরোয়া ছুটে চলায় দুর্ঘটনার ঝুঁকি রয়েছে বলে মনে করেন যাত্রীরা। কিন্তু তুলনামূলক ভাড়া কম হওয়ায় এবং ফাঁকা ঢাকা উপভোগ করার জন্য এসব অটোরিকশাকেই বেছে নিচ্ছেন তারা।

রাজধানীর খামারবাড়ি এলাকার বাসিন্দা তোফায়েল আহমেদ বলেন, ঈদের রাস্তা-ঘাট ফাঁকা থাকে। তাই নামাজ পড়ার পর সন্তানদের নিয়ে একটু ঘুরতে বের হয়েছি। অটোরিকশায় চড়তে ভয় হলেও এই রিকশা ছাড়া এখন আর প্যাডেলচালিত রিকশা তেমন পাওয়া যায় না। তাই বাধ্য হয়েই এটায় উঠতে হয়। তাছাড়া অটোরিকশার ভাড়া প্যাডেলচালিত রিকশার থেকে কম, দ্রুত যাওয়াও যায়। তাই ঝুঁকি থাকলেও এটাতে চড়তে হয়।

রাজধানীর ফার্মগেটে যাত্রীর জন্য অপেক্ষা করছিলেন অটোরিকশাচালক এরশাদ মিয়া। তিনি বলেন, বড় রোডে উঠলে তো অ্যাক্সিডেন্ট হওয়ার আশঙ্কা থাকেই। তারপরও আমরা নিয়ন্ত্রণ করে চালাই। এখন রাস্তা ফাঁকা থাকায় মিরপুর, আজিমপুর, মালিবাগ, কমলাপুরের দিকে যাত্রী নিয়ে যায়। ব্যস্ততার সময় তো বড় রোডে উঠি না।

এরশাদ মিয়ার বাড়ি জামালপুরে। ঈদের বাড়তি আয়ের আশায় বাড়ি যাননি তিনি। পরিবার পরিজন ছাড়াই কাটছে তার ঈদ। তিনি বলেন, ঈদের সময় একটু বাড়তি আয় হয়, তাই থাইকা গেলাম। কিন্তু যাত্রী নেই। সকাল থেকে মাত্র ৫০ টাকার ভাড়া মারছি। ঈদের আগে গত তিন চারদিন ভালো ভাড়া পাইছি। প্রতিদিন হাজার থেকে হাজার ২০০ টাকার মতো কামাইছি। রিকশার জমা খরচ দিয়ে কিছু টাকা জমাইছি। সেটা বাড়িতে পাঠাই দিছি। আর ঈদের তিনদিন রিকশা চালাইয়া বাড়ি যামু।

হাবিব নামের আরেক অটোরিকশাচালক বলেন, এখন তো সবই অটোরিকশা। পায়ে রিকশা চালানো অনেক কষ্টের। মানুষও তাড়াতাড়ি যাওয়ার জন্য অটোরিকশায় চড়ে। দুই একজন উল্টা-পাল্টা চালায়। কিন্তু সবাই এক না। আমাদেরও তো জানের মায়া আছে।

তবে বাস ও সিএনজিচালকরা বলছেন, অটোরিকশার জন্য তাদের রাস্তায় গাড়ি চালাতে খুবই বেগ পেতে হয়। সব সময় দুর্ঘটনার ঝুঁকি থাকে। ঈদের সময় ফাঁকা রাস্তায় এই ঝুঁকি আরো অনেক বেশি। পাশাপাশি অটোরিকশার জন্য ঠিকমতো যাত্রী পান না তারা।

আবুল খায়ের নামের এক সিএনজিচালক বলেন, ভাবছি ঈদের সময় বাড়তি ভাড়া পাবো, তাই বাড়ি যাইনি। কিন্তু অটোরিকশার জন্য যাত্রীই পাওয়া যায় না। সবাই অটোতে চলে।

আয়াত বাসের চালক ইব্রাহিম বলেন, অটোরিকশার জন্য বাসের যাত্রী কমে গেছে। সবাই অটো রিকশায় চড়ে। এরা মেইন রোডেও উঠে যায়। আবার সুশৃঙ্খলভাবেও চালায় না। একবার বায়ে নেয় তো একবার ডানে নেয়। এরা ডান বাম বোঝে না। ফাঁকা জায়গা পেলে ঢুকে পড়ে। এদের জন্য রাস্তায় বাস চলানোই কঠিন।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৭ ঘণ্টা, মার্চ ৩১, ২০২৫
এসসি/এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।