ঢাকা, বুধবার, ১৯ চৈত্র ১৪৩১, ০২ এপ্রিল ২০২৫, ০৩ শাওয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ঈদ জামাত শেষে ‘জয়বাংলা’ স্লোগান, আ. লীগ-বিএনপি সংঘর্ষ-গুলিবর্ষণ, আটক ৫

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭১০ ঘণ্টা, মার্চ ৩১, ২০২৫
ঈদ জামাত শেষে ‘জয়বাংলা’ স্লোগান, আ. লীগ-বিএনপি সংঘর্ষ-গুলিবর্ষণ, আটক ৫

নাটোর: নাটোরের লালপুরে ঈদের জামাত শেষে জয়বাংলা স্লোগান দেওয়াকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ ও গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। এতে দুইজন গুলিবিদ্ধ হয়েছে বলে জানা গেছে।

এ ঘটনায় পাঁচজনকে আটক করা হয়েছে।  

এছাড়া ঘটনার প্রতিবাদ ও জড়িতদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীরা।

সোমবার (৩১ মার্চ) সকাল ৯টা থেকে জেলার লালপুর উপজেলার রামকৃষ্ণপুর ঈদগাহে শুরু হয় উত্তেজনা, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ।  

এ ঘটনার জেরে ফের বেলা ১১টার দিকে রামকৃষ্ণপুর চিনির বটতলা মোড়ে গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটে। এতে একজন গুলিবিদ্ধ হয়েছে বলে জানা গেছে। এ ঘটনায় পাঁচজনকে আটক করা হলেও তাদের নাম পরিচয় এখনও জানা যায়নি।

নাটোরের পুলিশ সুপার আমজাদ হোসাইন বাংলানিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আজ সকাল সাড়ে ৯টার দিকে লালপুর উপজেলার রামকৃষ্ণপুর ঈদগাহ মাঠে ঈদের নামাজ শেষে স্থানীয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের কর্মীরা ‘জয়বাংলা’ স্লোগান দিতে থাকেন। এসময় স্থানীয় জনতা ও বিএনপি সমর্থিতরা প্রতিবাদ করেন। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি ও উত্তেজনা বিরাজ করতে থাকে।

একপর্যায়ে বিএনপি ও স্থানীয়দের সঙ্গে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের কর্মীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার শুরু হয়। এমনকি উভয়পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এসময় সাব্বির হোসেন (২৪) নামে একজন আহত হন। তাকে লালপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। এসময় স্থানীয় মুসল্লিরা পরিবেশ শান্ত করেন।

পরে বেলা ১১টার দিকে আওয়ামী লীগ সমর্থকরা আবারও বিএনপি সমর্থকদের ওপর হামলা চালায়। এ নিয়ে ফের উভয়পক্ষের মধ্যে উত্তেজনাসহ সংঘর্ষ শুরু হয়। এসময় কমপক্ষে ৪০ থেকে ৫০ রাউন্ড গুলি গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটে। এতে সুজাত নামে একজন বিএনপি কর্মী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন বলে বিএনপির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে। এছাড়া ঘটনার সময় বেশ কিছু দোকান পাট ভাঙচুর করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

এ বিষয়ে নাটোরের পুলিশ সুপার আমজাদ হোসাইন বাংলানিউজকে বলেন, দুই যুবক ঈদ মাঠে জয়বাংলা স্লোগান দেওয়ার পর তাদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে বলে জানতে পেরেছি। তবে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনাটি মসজিদকে কেন্দ্র করে নাকি গ্রামভিত্তিক হয়ে রাজনৈতিক রূপ নিয়েছে তা আমরা যাচাই-বাছাই করছি। মারামারিতে সম্পৃক্ত ছিল এরকম পাঁচজনকে আটক করেছে পুলিশ। ঘটনাস্থলে ডিবি, পুলিশ, যৌথবাহিনীর সদস্যরা রয়েছে সেখান থেকে রিপোর্ট এলে পুরো ঘটনাটি জানতে পারবো।

গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটেছিল কিনা জানতে চাইলে পুলিশ সুপার বলেন, গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে বলে স্থানীয়রা বলেছে। তবে এতে যিনি আহত হয়েছেন তাকে এখনো আমরা পাইনি। এটা নিয়েও যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

এদিকে ঈদগাহ মাঠে ঈদের নামাজ শেষে স্থানীয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের কর্মীরা ‘জয়বাংলা’ স্লোগান এবং বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর হামলা, মারধর ও গুলিবর্ষণের ঘটনায় স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে। একই সঙ্গে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে জড়িতদের গ্রেপ্তারের আল্টিমেটাম দিয়েছেন তারা। অন্যথায় তারাই সন্ত্রাসী দমনের কর্মসূচি দেবেন এমন হুঁশিয়ারি দেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৭০৮ ঘণ্টা, মার্চ ৩১, ২০২৫
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।