মেহেরপুর: মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম বীর প্রতীক বলেছেন, ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা আমাদের জন্য গ্লানিকর। ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা নিয়ে সত্যিকারের মুক্তিযোদ্ধারা প্রতিনিয়তই বিব্রত বোধ করেন।
যারা মুক্তিযুদ্ধে অংশ না নিয়েও নিজেদের মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে পরিচিত করছেন, এটি বন্ধে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কিছু বিষয় আছে আমরা এখন আদালতের রায়ের অপেক্ষায় আছি। প্রায় ২৭০০ রিট মামলা রয়েছে, এগুলো নিষ্পত্তির প্রয়োজন আছে। সব মামলাই একই ধরনে। তাই, আমরা চেষ্টা করছি, সবগুলো মামলার রায় একসঙ্গে পাওয়ার জন্য, যোগ করেন উপদেষ্টা।
বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস উপলক্ষে জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানোর পর গার্ড অব অনার গ্রহণ শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, মুজিবনগর সরকারকে বিপ্লবী সরকার হিসেবে নামকরণ করা হয়েছে। মুজিবনগর সরকার আমাদের বাস্তব ইতিহাস। ইতিহাসের ওপর কোনো কিছু আরোপ করা যায় না। মুজিবনগর সরকার অত্যন্ত গৌরব ও বীরত্বের অধ্যায়। এটাকে আমরা প্রবাসী সরকার বা অস্থায়ী সরকার বলি। এ সরকারের শপথগ্রহণ জাতির জন্য গৌরবোজ্জ্বল একটি অধ্যায়। এটা অমলিন থাকবে চিরকাল। এটা চিরকাল বরণ করতে ও উদ্যাপন করতে হবে। ১৭ এপ্রিল মুজিবনগর সরকার গঠন এ বৈদ্যনাথতলা ও মেহেরপুরসহ এ অঞ্চলকে ধন্য করেছে।
মুজিবনগর সরকারকে সাংবিধানিক সরকার উল্লেখ করে এ উপদেষ্টা আরও বলেন, তখনকার যারা নির্বাচিত হয়েছিলেন, তারাই এ সরকার গঠন করেছিলেন। মুজিবনগর সরকারকে আন্তর্জাতিকভাবেই স্বীকৃত দেওয়া হয়েছে। তাই সেটি একটি সাংবিধানিক সরকার। এ সরকার আমাদের মুক্তিযুদ্ধকে সুসংগঠিত করেছে, মুক্তিযুদ্ধকে পরিচালিত করেছে এবং আন্তর্জাতিক বিশ্বের সঙ্গেও সম্পৃক্ত করেছে। ১৭ এপ্রিল এ বিপ্লবী সরকারই আমাদের মুক্তিযুদ্ধকে নেতৃত্ব দিয়েছে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জাতির ইতিহাস অমোচনীয় থাকা উচিত।
গত ৫ আগস্টের পর মুজিবনগর কমপ্লেক্সের বিভিন্ন স্থাপনা ভাঙচুর প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মুজিবনগরের ক্ষয়ক্ষতি সম্পর্কে সরজমিন দেখে আগামীতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যেটা করা হবে, ঐতিহাসিক বস্তুনিষ্ঠতার নিরীক্ষে করা হবে। কোনো কিছুই আরোপিত হবে না। সত্যিকার কোনো ইতিহাস মোছানো যাবে না। ক্ষতিগ্রস্ত সব স্থাপনা পুনর্নির্মাণ করা হবে।
এসময় ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল মেহেরপুরের মুজিবনগরে বাংলাদেশের প্রথম সরকারকে ‘গার্ড অব অনার’ দেওয়া দুই বীর মুক্তিযোদ্ধার হাতে সম্মাননা স্মারক তুলে দেন উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম।
এসময় মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব ইসরাত জাহান চৌধুরী, খুলনা বিভাগের অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হোসাইন শওকত, জেলা প্রশাসক সিফাত মেহনাজ, মেহেরপুরের পুলিশ সুপার মাকসুদা আক্তার খানম, মুজিবনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পলাশ মণ্ডলসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৭, ২০২৫
এসআই