ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১০ বৈশাখ ১৪৩২, ২৪ এপ্রিল ২০২৫, ২৫ শাওয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের গুরুত্বপূর্ণ উপায় মিয়ানমারের অপরাধ চিহ্নিত করা: প্রধান উপদেষ্টা

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৪৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৩, ২০২৫
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের গুরুত্বপূর্ণ উপায় মিয়ানমারের অপরাধ চিহ্নিত করা: প্রধান উপদেষ্টা

ঢাকা: প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, গণহত্যা ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের মতো জঘন্য অপরাধ কোনোভাবেই বিচার ও শাস্তিহীন থাকা উচিত নয়। মিয়ানমারকে এ অপরাধের জন্য দায়ী করা রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের জন্য আস্থা তৈরির একটি গুরুত্বপূর্ণ উপায়।

কাতার সফরের দ্বিতীয় দিনে বুধবার (২৩ এপ্রিল) ‘জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত জনগোষ্ঠীকে ঘিরে সামাজিক ও পরিবেশগত চ্যালেঞ্জ: রোহিঙ্গা প্রসঙ্গ’ শীর্ষক এক উচ্চপর্যায়ের গোলটেবিল আলোচনায় অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন।

বুধবার (২৩ এপ্রিল) সকালে দোহায় মান্দারিন ওরিয়েন্টাল হোটেলে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় অধ্যাপক ইউনূস বলেন, আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে), আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) ও মিয়ানমারের জন্য গঠিত স্বাধীন তদন্ত প্রক্রিয়ার (আইআইএমএম) আওতায় রোহিঙ্গাদের ওপর সংঘটিত নৃশংসতার বিচার ও জবাবদিহিতার চলমান উদ্যোগগুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। জাতিসংঘ ও রোম সংবিধির সদস্য রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশ বিশ্বাস করে, গণহত্যা ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ কোনোভাবেই শাস্তির বাইরে থাকা উচিত নয়।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, মিয়ানমার বা এর কর্মকর্তাদের ওপর এই অপরাধগুলোর দায় চাপানো রোহিঙ্গাদের রাখাইনে প্রত্যাবাসনের জন্য আত্মবিশ্বাস তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। বাংলাদেশ এই তিনটি আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্মে বিচার প্রক্রিয়াকে সক্রিয়ভাবে সহায়তা করছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গাম্বিয়া ২০২০ সালের ২৩ অক্টোবর মিয়ানমারের বিরুদ্ধে নির্ভরযোগ্য প্রমাণসহ তার অভিযোগপত্র (মেমোরিয়াল) জমা দেয়। মিয়ানমারও পাল্টা জবাব (কাউন্টার-মেমোরিয়াল) জমা দেয় ২০২৩ সালের ২৪ অক্টোবর। একই বছর ২৩ মে গাম্বিয়া তাদের উত্তর জমা দেয়। মিয়ানমার তার পাল্টা উত্তর (রিজয়ান্ডার) জমা দেয় গত ৩০ ডিসেম্বর।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, এই মামলাটি ২০২৫ সালের শুরুর দিকে মূল (মেরিট) পর্বে পৌঁছাবে বলে আশা করা হচ্ছে। আইন সংস্থা ফোলে হোয়াগ জানিয়েছে, তিনটি ধাপ (অস্থায়ী, আপত্তি ও মূল) সফলভাবে সম্পন্ন হলে তারা মিয়ানমার সরকারের বিরুদ্ধে গণহত্যার শিকারদের জন্য ক্ষতিপূরণ দাবিতে আইসিজেতে আবেদন করবে।

প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, গাম্বিয়া সরকার ওআইসি সদস্য রাষ্ট্রগুলো থেকে প্রয়োজনীয় তহবিল সংগ্রহে একযোগে কাজ করছে। এ পর্যন্ত ওআইসি ২ দশমিক ৭৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার সংগ্রহ করেছে। যার মধ্যে বাংলাদেশের অবদান সবচেয়ে বেশি (৭ লাখ ডলার)।

নোবেল শান্তি বিজয়ী অধ্যাপক ইউনূস বলেন, আইসিজেতে চলমান বিচার প্রক্রিয়ার ব্যয় নির্বাহে যে তীব্র বাজেট ঘাটতি দেখা দিয়েছে, সেই প্রেক্ষাপটে ওআইসির শক্তিশালী সদস্য রাষ্ট্র হিসেবে কাতার রোহিঙ্গা ফান্ডে আর্থিক সহায়তা প্রদানের জন্য ওআইসিকে অনুরোধ করতে পারে। যা মামলার খরচ মেটাতে ও এ কাজে গতি বজায় রাখতে সহায়ক হবে।

গোলটেবিল আলোচনায় পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান, জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ এবং প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ২০৪৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৩, ২০২৫
এমইউএম/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

জাতীয় এর সর্বশেষ