ঢাকা, বুধবার, ১৮ চৈত্র ১৪৩১, ০২ এপ্রিল ২০২৫, ০৩ শাওয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

মানুষের জীবন আগে বাঁচাতে হবে: প্রধানমন্ত্রী

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৩৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ৪, ২০২১
মানুষের জীবন আগে বাঁচাতে হবে: প্রধানমন্ত্রী ফাইল ছবি

ঢাকা: মানুষের জীবন বাঁচানোর পাশাপাশি অর্থনীতিকে সচল রাখতে সরকার যথেষ্ট সচেতন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, মানুষের জীবন আগে, কাজেই মানুষের জীবন আগে বাঁচাতে হবে।

রোববার (০৪ এপ্রিল) গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থার (এনএসআই) নবনির্মিত বহুতলবিশিষ্ট প্রধান কার্যালয় ভবন উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের দেশের মানুষের যাতে অর্থনৈতিক কর্মকান্ড সচল থাকে সে বিষয়ে আমরা যথেষ্ট সচেতন। তবে মানুষের জীবনটা আগে, কারণ জীবন যদি না বাঁচে তাহলে আমাদের অর্থনীতিই কি বা রাজনীতিই কি। কাজেই মানুষের জীবন আগে বাঁচাতে হবে।

করোনার মধ্যেও বাংলাদেশের অর্থনীতির গতি সচল রাখতে সক্ষম হওয়ার কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অর্থনৈতিক মন্দাভাব দেখা দিলেও বাংলাদেশ আমরা কিন্তু অর্থনীতির গতি সচল রাখতে সক্ষম হয়েছি। প্রবৃদ্ধি অর্জনেও অন্যান্য দেশ বিশেষ করে আমাদের দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো থেকে আমরা আগে আছি। কিন্তু আমাদের সেটা ধরে রাখতে হবে।

করোনা মহামারি মোকাবিলায় সরকারের নির্দেশনাগুলোর কঠোর বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট সকলকে যথাযথ ভাবে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইতোমধ্যে করোনা নিয়ন্ত্রণের জন্য অনেকগুলো নির্দেশনা দিয়ে দিয়েছি। সেই নির্দেশনা যাতে মানুষ যথাযথভাবে পালন করে সেদিকে সবাইকে দৃষ্টি দিতে হবে।

তিনি বলেন, স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধি করা, স্বাস্থ্য সুরক্ষা এবং নিয়মনীতিগুলো মেনে চলা। নিজেকে সুরক্ষিত করা, অন্যকে সুরক্ষিত করা। এটা অবশ্যই সবাইকে করতে হবে। এই জিনিসটা যাতে সবাই যথাযথভাবে মানে সে বিষয়ে সারা বাংলাদেশে যারা দায়িত্বে রয়েছেন, তারা যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করবেন। এটাই আমরা চাই।
করোনা মহামারি মোকাবিলায় এনএসআই সদস্যদের কাজের প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনা মহামারি আজকে বিশ্বব্যাপী বিরাট সমস্যা, অর্থনীতি স্থবির, মানুষের জীবনযাত্রা, অবশ্য কিছুটা আমরা নিয়ন্ত্রণে রেখে মানুষের জীবন সচল হলো তখন আবার নতুনভাবে দ্বিতীয় দফায় এই করোনা দেখা দিয়েছে। এই করোনা ব্যবস্থাপনাও আপনারা অতীতে অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন, বর্তমানে এখন যে অবস্থা সেখানেও আপনাদের দায়িত্ব পালন করতে হবে। বর্তমানে আবার করোনা ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ছে। সারা বিশ্বেই এই অবস্থা, এই সময় আপনাদের আরও দায়িত্ব পালন করতে হবে।

করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলা করে বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে আশা প্রকাশ করে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে। যদিও করোনা মহামারি হয়তো কিছুটা বাধা সৃষ্টি করবে। এখান থেকেও আমরা উত্তরণ ঘটাতে পারবো। ইতোমধ্যে ভ্যাকসিন দেওয়া আমরা শুরু করেছি, টিকাদান কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। দেশের মানুষ যাতে নিজেদের সুরক্ষিত করে তার জন্য দেশের মানুষের মধ্যে আরও বেশি সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে।

করোনা প্রতিরোধে সংশ্লিষ্টদের নিজেদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার দিকে সজাগ থাকার পরামর্শ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আপনারা নিজেরা যারা কর্তব্যরত আছেন নিজেরাও সুরক্ষিত থাকবেন। স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিধিগুলো আপনারা মানবেন।


সন্ত্রাস-জঙ্গীবাদ-মাদক-দুর্নীতি মুক্ত দেশ গড়তে সরকারের জিরো টলারেন্স নীতির কথা পুনর্ব্যক্ত করে টানা তিনবারের প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি একটা কথা সবাইকে স্পষ্ট বলতে চাই, বিশেষ করে আমাদের এনএসআইয়ের যারা সদস্য, এক যুগ আগের বাংলাদেশ আর এখনকার বাংলাদেশের মধ্যে অনেক তফাৎ। বাংলাদেশ এখন সারা বিশ্বে মর্যাদা অর্জন করেছে। এই মর্যাদা ধরে রাখা একান্তভাবে অপরিহার্য। একটা বিষয় আপনাদের লক্ষ্য রাখতে হবে, আমরা জঙ্গীবাদ, সন্ত্রাস, মাদক, দুর্নীতি এর বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছি। এসব ব্যাপারে আপনাদের সদা সর্তক থাকতে হবে। যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে।

শেখ হাসিনা বলেন, জনগণের জানমাল রক্ষা করা, জনগণের স্বার্থ রক্ষা করা, জনগণের জীবনে শান্তি-নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে যা যা প্রয়োজন সেটা আপনাদের করতে হবে। সন্ত্রাস, জঙ্গীবাদ, মাদক, দুর্নীতি এর হাত থেকে দেশকে মুক্ত করতে হবে, মানুষকে বাঁচাতে হবে। সে বিষয়ে আপনাদের অবশ্যই যথাযথ দায়িত্ব পালন করতে হবে। সেটাই আমি আপনাদের অনুরোধ করি।

দেশের উন্নয়নের ধারাবাহিকতা ধরে রাখার গুরুত্ব তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, উন্নয়নশীল দেশে আমরা উন্নীত হয়েছি। এর ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হবে। আর সেটা বজায় রাখতে হলে দেশে যেমন শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখতে হবে, করোনা মোকাবিলা করতে হবে, সেই সাথে সাথে অর্থনৈতিক গতিশীলতাও অব্যাহত রাখতে হবে।

গণভবন প্রান্ত থেকে অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থার (এনএসআই) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল টিএম জোবায়ের।

বাংলাদেশ সময়: ১২৩৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৪, ২০২১
এমইউএম/এইচএডি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।