ঢাকা, বুধবার, ১৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

রাজনীতি

‘রাজনৈতিক দলগুলোই পশ্চিমা শক্তিগুলোকে দেশে টেনে এনেছে’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০১২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১০, ২০২৩
‘রাজনৈতিক দলগুলোই পশ্চিমা শক্তিগুলোকে দেশে টেনে এনেছে’

ঢাকা: পশ্চিমা বৃহৎ শক্তিগুলোকে বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোই টেনে এনেছে বলে মন্তব্য করেছেন শিক্ষাবিদ ও রাষ্ট্রচিন্তক অধ্যাপক আবুল কাশেম ফজলুল হক। তিনি বলেন, বিএনপি ও আওয়ামী লীগই আমেরিকা, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বিভিন্ন পশ্চিমা বৃহৎ শক্তিকে বাংলাদেশে টেনে এনেছে।

এই দুটি দল যা-ই কিছু বলুক, তারা বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় স্বাধীনতা এবং সার্বভৌমত্বে বিশ্বাস করে সেই মনোভাবের পরিচয় ইতিহাসের দিকে দেখলে পাইনি।

রোববার (১০ সেপ্টেম্বর) ‌‘ভূ-রাজনীতি: প্রেক্ষিত বাংলাদেশ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) নসরুল হামিদ মিলনায়তনে এই আলোচনা সভার আয়োজন করে যুক্ত ফোরাম।

আলোচনা সভায় অধ্যাপক আবুল কাশেম ফজলুল হক বলেন, জাতীয়তাবাদ ও জাতিরাষ্ট্র এগুলো থাকবেই। যতই গ্লোবালাইজেশন বা পারস্পারিক যোগাযোগ হোক জাতি, জাতীয়তাবাদ, জাতীয় সংস্কৃতি, জাতিরাষ্ট্র এগুলো বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে না এবং অদূর ভবিষ্যতে বিলুপ্ত হয়ে যাবে না। কেবল পরিবর্তন চলবে এবং এই পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে মানুষ কী করতে চায়, সেটা গ্রহণ করতে হবে। যাতে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রাষ্ট্রগুলো বড় হতে পারে, সেই চেষ্টা বাংলাদেশের ক্ষেত্রে আমাদের বিশেষভাবে করা দরকার। কিন্তু পশ্চিমা বৃহৎ শক্তিগুলো চায় না, বাংলাদেশ রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে উঠুক।

মুখ্য আলোচকের বক্তব্যে রাষ্ট্রচিন্তক ফরহাদ মজহার বলেন, বাংলাদেশ এখন অত্যন্ত গভীরভাবে অস্তিত্বের সংকটে পড়েছে। এই দেশ আদৌ টিকবে কিনা এইটা নির্ভর করছে আপনারা কি করেন, কি বুঝেন, সময়টা কীভাবে ব্যবহার করছেন তার উপর। গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে যদি শিক্ষিত মধ্যবিত্ত শ্রেণি মনোযোগ না দেয়, তাহলে কিন্তু এই দেশ টিকবে না।

তিনি আরও বলেন, গণঅভ্যুত্থান ছাড়া আমাদের সামনে কোনো মুক্তি নেই। আমাদেরকে নতুন করে সমস্ত প্রতিষ্ঠান গড়তে হবে। সমস্ত প্রতিষ্ঠান গড়তে হলে সবাইকে একত্রিত হয়ে রাস্তায় নামতে হবে, লড়তে হবে, একত্রিতভাবে যেন মরতে পারি। হয় টিকে থাকবো, নয় মারা যাবো।

সভাপতির বক্তব্যে যুক্ত ফোরামের প্রধান সমন্বয়ক সরদার শামস আল-মামুন (চাষী মামুন) বলেন, স্বাধীনতার উত্তরকাল থেকে অনেকগুলো দল এই দেশ পরিচালনা করেছে। আজকের প্রজন্ম একটি ঘুণে ধরা সমাজ ব্যবস্থা, ভেদাভেদের রাজনীতির দিকে ধাবিত হচ্ছে। ফলে তরুণরা রাজনীতি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। তরুণদের আরেক পক্ষ ঘুণে ধরা রাজনীতির দিকে ধাবিত হচ্ছে। আমরা এই বিভাজিত, বিভেদ, লুটপাট ও ধ্বংসের রাজনীতির বাইরে এসে ফ্যাসিবাদকে দূর করার জন্য জাতীয় ঐক্য চাই।

তিনি আরও বলেন, জাতির মধ্যে যে বিভেদ, সেই বিভেদের ফাঁক-ফোকর দিয়ে বিদেশি শক্তি ঢুকছে এবং দেশের মধ্যে একটি বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি করে জাতিকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। এজন্য আমাদের জাতীয় ঐক্য প্রয়োজন। এই জাতীয় ঐক্যের মধ্য দিয়ে একটি গণঅভ্যুত্থান প্রয়োজন। এই গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে যদি একটি পরিবর্তন আসে। এর বাইরে চিরাচরিতভাবে যা ঘটছে, এভাবে পরিবর্তন আসার কোনো সম্ভাবনা নেই। আর এই গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে দেশে একটি গণমানুষের প্রতিষ্ঠিত হবে। যে সরকারকে আমি আমার সরকার বলতে পারবো।

যুক্ত ফোরামের সমন্বয়ক মো. জাকির হোসেনের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ন্যাপের সাবেক মহাসচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা ইকবাল হোসেন ফোরকান, সাবেক নির্বাচন কমিশন সচিব ড. মো. জাকরিয়া, রাজনীতিবিদ অধ্যাপক ইকবাল হোসেন রাজু, গণ আজাদী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আতাউল্লা খান, জাতীয় তরুণ সংঘের সভাপতি আলহাজ মো. ফজলুল হক, গণ রাজনৈতিক জোটের (গর্জো) সভা প্রধান সৈয়দ মঈনুজ্জামান লিটু প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ২০১২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১০, ২০২৩
এসসি/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।