ঢাকা, রবিবার, ১৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

পাবনায় আ.লীগ-স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের সংঘর্ষ, মামলা, গ্রেপ্তার ৩

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৩৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩১, ২০২৩
পাবনায় আ.লীগ-স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের সংঘর্ষ, মামলা, গ্রেপ্তার ৩

পাবনা: পাবনার সাঁথিয়ায় আওয়ামী লীগ ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় তিনটি পৃথক মামলা হয়েছে।

আওয়ামী লীগের প্রার্থীর পক্ষে দুটি মামলা করেছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা।

আর স্বতন্ত্র প্রার্থী নিজেই বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেছেন।

তিনটি মামলায় আসামিদের বেশিরভাগই স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মী ও জনপ্রতিনিধি।

এর আগে শুক্রবার (২৯ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় স্বতন্ত্র প্রার্থী অধ্যাপক আবু সাইয়িদের নির্বাচনী প্রচার মিছিল সাঁথিয়া বাইপাস রোড দিয়ে যাওয়ার সময় নৌকার সমর্থকরা অতর্কিত হামলা চালায় বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। পরে সংঘর্ষে উভয়পক্ষের প্রায় ১০ জন আহত হয়।

সাঁথিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন বলেন, শুক্রবার রাতে সাঁথিয়া উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান সোহেল রানা বাদী হয়ে ৩৯ জনের নাম উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ অফিসে হামলা ও ভাঙচুরের অভিযোগ এনে একটি মামলা দায়ের করেন।

মামলার আসামিদের মধ্যে রয়েছেন সাঁথিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল্লাহ আল মাহামুদ দেলোয়ার, সাঁথিয়া পৌরসভার সাবেক মেয়র আওয়ামী লীগ নেতা  মিরাজুল ইসলাম।

প্রায় একই আসামিদের নামে নৌকা প্রার্থীর সমর্থক আবু সাইয়িদ বাদী হয়ে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ওপর হামলা করে আহত করার অভিযোগ এনে আর একটি মামলা দায়ের করেন।

আওয়ামী লীগ প্রার্থীর পক্ষে দায়ের করা এই দুই মামলায় স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মী সুজা আলী ও কালু হোসেনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

এদিকে স্বতন্ত্র প্রার্থী অধ্যাপক আবু সাইয়িদ নিজেই বাদী হয়ে সাঁথিয়া পৌরসভার মেয়র মাহাবুবুল আলম বাচ্চুসহ ১৪ জন আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেছেন।

মামলায় তার নির্বাচনী প্রচারণায় মিছিলে হামলা ও কর্মীদের আহত করার অভিযোগ করা হয়। এ মামলায় ছাত্রলীগ কর্মী রুবেল হোসেনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।  

সাঁথিয়া থানার ওসি আনোয়ার হোসেন বলেন, তিনটি মামলাই রেকর্ড করা হয়েছে এবং আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।  

শুক্রবারের ঘটনার পর থেকে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। সংঘর্ষ এড়াতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রাখা হয়েছে বলে জানান ওসি।  

এদিকে আওয়ামী লীগ অফিসে হামলা, ভাঙচুর ও দলীয় নেতাকর্মীদের আহত করার প্রতিবাদে শনিবার বিকেলে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে একটি প্রতিবাদ মিছিল বের করা হয়। হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে মিছিলটি সাঁথিয়া বাজার প্রদক্ষিণ করে।

এছাড়া একই দাবিতে বেড়া সিঅ্যান্ডবি মোড়ে বেড়া পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আসিফ শামস রঞ্জনের নেতৃত্বে পৃথক একটি প্রতিবাদ মিছিল বের করা হয়৷ 

মিছিল শেষে আসিফ শামস রঞ্জন সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন, স্বতন্ত্র প্রার্থীর লোকজন বারবার নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ নষ্ট করছে। তারা শুক্রবার সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ওপর হামলা ও দলীয় অফিস ভাঙচুর করেছে। এ সময় পুলিশ নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করেনি। স্বতন্ত্র প্রার্থী নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে, বহির্বিশ্বের কাছে শেখ হাসিনা সরকারকে ছোট করতেই ষড়যন্ত্র করছেন।  

তিনি বলেন, আমাদের দায়ের করা মামলার এজাহার নামীয় আসামি পুলিশের সামনে স্বতন্ত্র প্রার্থীর প্রচারণায় উপস্থিত থাকে, অথচ পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করছে না।

এদিকে নিজেরাই হামলা করে মিথ্যা মামলা দিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থীর প্রচারণায় বাধা দেওয়ার অভিযোগ করেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী অধ্যাপক আবু সাইয়িদ।

সাঁথিয়া থানার ওসি আনোয়ার হোসেন বলেন, অভিযোগ সঠিক নয়। আমরা তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে গিয়েছি। মামলা হয়েছে। ইতোমধ্যে তিনজনকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে।  

বাংলাদেশ সময়: ০৯২৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩১, ২০২৩
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।