ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের প্রভাব কমানোর চেষ্টায় আ.লীগ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯১৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৭, ২০২৪
উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের প্রভাব কমানোর চেষ্টায় আ.লীগ

ঢাকা: উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নিজস্ব প্রার্থীর পক্ষে মন্ত্রী- সংসদ সদস্যদের (এমপি) হস্তক্ষেপ ও প্রভাব যতটা কম রাখা যায় সেই চেষ্টা করছে আওয়ামী লীগ। এজন্য মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়-স্বজনকে নির্বাচন থেকে সরানোর চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

বিভিন্নভাবে চেষ্টা করেও মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয় স্বজনকে উপজেলা নির্বাচনের প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরানো সম্ভব হয়নি। এদের প্রার্থিতা প্রত্যাহারের নির্দেশ দেওয়া হলেও মন্ত্রী-এমপিরা সেটা করতে পারেননি। তবে শুধু আত্মীয় স্বজনই নয়, মন্ত্রী-এমপিদের ঘনিষ্ঠ ও অনুগতরাও প্রার্থী হয়েছেন। কেউ কেউ পরিকল্পিতভাবে তাদের অনুগতদের প্রার্থী করেছেন। উপজেলা পরিষদকে নিজের হাতে রাখতে এটা করা হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। ফলে নির্বাচনে তাদের জিতিয়ে আনতেও এ মন্ত্রী-এমপিরা তৎপর থাকবেন এটাই স্বাভাবিক বলে মনে করা হচ্ছে।

এদিকে নিজেদের প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচন প্রভাবিত করতে ক্ষমতা বলে স্থানীয় প্রশাসনের ওপর প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে হস্তক্ষেপ করতে পারে, আওয়ামী লীগের নীতি-নির্ধাকরাও এমন আশঙ্কাও করছেন। পাশাপাশি দলের স্থানীয় নেতাকর্মীদেরও নিজের প্রার্থীর পক্ষে থাকতে বাধ্য করার চেষ্টা করতে পারেন। এতে দলের মধ্যে দ্বন্দ্ব-কোন্দল আরও বাড়বে। এতে অবাধ, সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ নির্বাচনের পরিবেশ বাধাগ্রস্ত হবে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে মন্ত্রী-এমপিদের প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ প্রভাব যতটুকু কম রাখা যায় সেই চেষ্টা করা হচ্ছে।

আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র জানায়, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিচ্ছিন্ন দুই একটি ঘটনা ছাড়া এখন পর্যন্ত বড় ধরনের কোনো অঘটন ঘটেনি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে আগেই কেন্দ্র থেকে নির্দেশ দেওয়া ও সতর্ক করা হয়েছে। কিন্তু যেহেতু মন্ত্রী-এমপিদের স্বজনদের প্রার্থিতা প্রত্যাহারের নির্দেশ মানানো সম্ভব হয়নি এ পরিস্থিতিতে তাদের প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ হস্তক্ষেপের সম্ভাবনাও রয়ে গেছে বলে আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকরা মনে করছেন। তবে এদের নির্বাচন থেকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা এখনও অব্যাহত রয়েছে। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন, কেন্দ্রীয় নির্দেশ অনুযায়ী তাদের সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। এর পাশাপাশি মন্ত্রী-এমপিরাও যাতে নিজস্ব প্রার্থীর পক্ষে হস্তক্ষেপ করতে না পারে বা নির্বাচন থেকে যতটুকু দুরে রাখা যায় সে চেষ্টাও করা হচ্ছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আওয়ামী লীগের সংশ্লিষ্ট এক নেতা জানান, দল যেহেতু কোনো প্রার্থী দেয়নি, এ অবস্থায় দলের নির্দেশ পুরোপুরিভাবে মানানোও সম্ভব হচ্ছে না। এক্ষেত্রে মন্ত্রী-এমপিদের চাপে রেখে নির্বাচনকে যতটুকু প্রভাবমুক্ত রাখা যায় সেই চেষ্টা করা হচ্ছে।

এদিকে এ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে স্থানীয় পর্যায়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে কোন্দল যাতে না বাড়ে এবং সেটা যাতে সংঘাত-সংঘর্ষে রূপ না নেয় সে চেষ্টাও অব্যাহত রেখেছে দলটি। এই পরিস্থিতিতে আগামী ৩০ এপ্রিল দলের কার্যনির্বাহী সংসদের সভা আহ্বান করা হয়েছে। এ সভা থেকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে করণীয় নির্ধারণ করা হবে। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে দলটির নীতি-নির্ধারকরা জানান।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফরউল্লাহ বাংলানিউজকে বলেন, আমরা এখনও চেষ্টা করে যাচ্ছি, তারা যাতে আত্মীয়-স্বজনদের নির্বাচন থেকে সরিয়ে নেয়। আগামী ৩০ এপ্রিল দলের কার্যনির্বাহী সংসদের সভা আছে। আশা করছি, সভায় আমাদের দলের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে এ বিষয়ে দিক নির্দেশনা আসবে। এর পর সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯১২ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৭, ২০২৪
এসকে/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।