ঢাকা, বুধবার, ৩ বৈশাখ ১৪৩২, ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

অতি শিগগির আ.লীগ নিয়ে সিদ্ধান্তে আসুন: হাসনাত আবদুল্লাহ

নিউজ ডেস্ক  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৫৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৫, ২০২৫
অতি শিগগির আ.লীগ নিয়ে সিদ্ধান্তে আসুন: হাসনাত আবদুল্লাহ জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ

ঢাকাসহ দেশের কয়েকটি স্থানে সম্প্রতি আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল হওয়ার প্রসঙ্গ টেনে দলটির বিরুদ্ধে সিদ্ধান্তমূলক অবস্থানে আসার আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ।

মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুকে এক পোস্টে তিনি এ আহ্বান জানান।

গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে পতন ঘটে স্বৈরাচার শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের। ওই অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ছিলেন হাসনাত। সম্প্রতি সেই প্লাটফর্মের অগ্রভাগের সংগঠকদের উদ্যোগে গঠিত হয়েছে এনসিপি।

হাসনাত বলেন, যেদিন থেকে আমাদের আওয়ামী বিরোধী অবস্থান এবং কম্প্রোমাইজের (আপস) রাজনীতির বিরোধিতাকে ‘শিষ্টাচারবহির্ভূত’ বলা শুরু হয়েছে, সেদিন থেকেই আওয়ামী লীগের মিছিল বড় হতে শুরু করেছে। যারা কম্প্রোমাইজের রাজনীতি করছেন, তাদের সতর্ক করছি—অতি শিঘ্রই আওয়ামী লীগ নিয়ে সিদ্ধান্তে আসুন। না হলে আপনারা করবেন কম্প্রোমাইজের রাজনীতি, আর আমি করব শিষ্টাচারবহির্ভূত আচরণ।

‘আমি শিষ্টাচার বহির্ভূত আচরণ শুরু করলে নিতে পারবেন না। সাবধান হয়ে যান। ’, যোগ করেন  হাসনাত।

এনসিপির এই নেতা গত ১২ মার্চ আরেক পোস্টে আওয়ামী লীগকে দেশের রাজনীতিতে পুনর্বাসনের চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ করেছিলেন।

সেই পোস্টে তিনি বলেন, “এই নির্বাচনেই আওয়ামী লীগকে ফেরানোর পরিকল্পনা চলছে। ‘রিফাইন্ড’ আওয়ামী লীগ নামে নতুন একটি ‘টেবলেট’ নিয়ে শীঘ্রই হাজির হবে। যারা এই পরিকল্পনা করছেন, আমি আপনাদের সতর্ক করে দিচ্ছি, এখানে কোনো ‘ইফস’ এবং ‘বাটস’ নেই। বিচারের পূর্বে আওয়ামী লীগের যেকোনো ধরনের পুনর্বাসনের চেষ্টার আলাপ দেশের সার্বভৌমত্বকে হুমকির মুখে ফেলবে। ”

এনসিপির এই নেতা আরও বলেন, “সুতরাং ‘রিফাইন্ড’ আওয়ামী লীগের টেবলেট নিয়ে হাজির হবেন না। আওয়ামী লীগের বিচার নিশ্চিত হওয়ার পূর্বে আর কোনো আলাপ নয়। ফুলস্টপ। ”

গত জুলাইতে সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থা সংস্কারের আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। প্রথমে এই আন্দোলন ছিল একেবারেই শান্তিপূর্ণ। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকার তার ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগকে শিক্ষার্থীদের দমনে মাঠে নামালে সহিংসতার শুরু হয়। আন্দোলনকারীদের শেখ হাসিনা ‘রাজাকারের নাতিপুতি’ বলে কটূক্তি করলে শিক্ষার্থীরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। সারা দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অগ্নিগর্ভ হলে আন্দোলন দমনে রাষ্ট্রযন্ত্রের সর্বশক্তি প্রয়োগ করে হাসিনার সরকার। একইভাবে নামানো হয় আওয়ামী লীগের সশস্ত্র ক্যাডারদের। রাজপথে একের পর এক লাশ পড়তে থাকে। এক পর্যায়ে আন্দোলন রূপ নেয় সরকার পতনের এক দফা দাবিতে। তীব্র জনরোষের মুখে শেখ হাসিনা আর টিকতে পারেননি। পালিয়ে যান ভারতে।

জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের দপ্তরের (ওএইচসিএইচআর) তদন্ত প্রতিবেদন অনুসারে, জুলাই-আগস্টে অভ্যুত্থান চলাকালে এক হাজার ৪শর বেশি মানুষ হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন। যাদের বেশিরভাগই নিরাপত্তা বাহিনীর চালানো সামরিক অস্ত্র ও শটগানের গুলিতে মারা যান। হাজার হাজার ছাত্র-জনতা গুরুতর আহত হয়েছেন। পঙ্গু হয়েছেন অনেকেই। অনেকের দুই চোখ, কারো কারো এক চোখ অন্ধ হয়ে গেছে। ১১ হাজার সাতশর বেশি মানুষকে র‍্যাব ও পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৫, ২০২৫
এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।